প্রায় দু’দশক ধরে অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অভয় সিংহ দেওল। বলিপাড়ার দেওল পরিবারের পুত্র, সানি এবং ববি দেওলের তুতো ভাই হওয়া সত্ত্বেও বলিপাড়া থেকে দু’বছরের জন্য বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন অভয়। কোনও সিনেমায় কাজের প্রস্তাবও পাননি তিনি।
২০০৫ সালে ইমতিয়াজ আলির হাত ধরে হিন্দি ফিল্মজগতে পা রাখেন অভয়। ‘সোচা না থা’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। তার পর একের পর এক ছবিতে কাজ করে গিয়েছেন তিনি।
তথাকথিত বাণিজ্যিক ছবিতে বেশি অভিনয় করতেন না অভয়। বলিউডে ড্রামা ঘরানার ভিন্ন স্বাদের ছবিতেই কাজ করতেন তিনি। আঠারো বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থাকার পর হাতে গুনে ত্রিশটি ছবিতেও অভিনয় করেননি তিনি।
কিন্তু অভয় দু’বছরের জন্য বলিউড থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন বলিপাড়ার এক নায়িকা। ‘শোর ইন দ্য সিটি’ ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রীতি দেশাই। প্রীতির সঙ্গে কাজের সূত্রে আলাপ হয় অভয়ের।
প্রীতির জন্য মনের কোণে জায়গাও তৈরি হয় অভয়ের। বলি ইন্ডাস্ট্রিতে তখন সদ্য এসেছেন প্রীতি। হিন্দি ফিল্মজগতে নিজের কেরিয়ার তৈরি করতে তখন ব্যস্ত অভিনেত্রী। সেই সময় অভয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন প্রীতি। চার বছর সম্পর্কে ছিলেন দু’জনে।
অভয় তখন অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনার কাজেও হাত দিয়েছেন। ‘ওয়ান বাই টু’ ছবির কাজ শুরু করেন অভয়। এই ছবিতে সহ-প্রযোজনাও করেন তিনি।
অভয় চেয়েছিলেন প্রীতিও ‘ওয়ান বাই টু’ ছবিতে অভিনয় করুন। তাই অভয়ের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য নিজের প্রেমিকাকেই বেছে নিলেন তিনি।
২০১৪ সালে ‘ওয়ান বাই টু’ ছবিটি মুক্তি পায়। কিন্তু ছবিটি মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে। ছবি ফ্লপ করার পর অভয়কে ছেড়ে চলে যান প্রীতি।
ছবি ফ্লপ হওয়ার পর অভয় আশা করেছিলেন যে, তাঁর পাশে প্রীতি দাঁড়াবেন। কিন্তু ভালবাসার মানুষই তাঁর হাত ছেড়ে চলে যান। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন অভিনেতা।
প্রীতির সঙ্গে যে অভয় সম্পর্কে এসেছিলেন, সে বিষয়ে ইন্ডাস্ট্রির প্রত্যেকে জানতেন। বিচ্ছেদের পর তাই সকলে অভয়কে এ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ‘‘অভিনয় জগতে কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো খুব মুশকিল। কোনও কিছুই গোপন থাকে না।’’
অভয় জানান, ইচ্ছা করলেই তিনি তাঁর সম্পর্কের ব্যাপারে সব কিছু লুকিয়ে যেতে পারতেন। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করা পছন্দ করেন না বলেও জানান তিনি।
অভয়ের মন্তব্য, ‘‘ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সকলকে সত্যি কথা বলার কোনও কারণ খুঁজে পাই না আমি।’’ ‘ওয়ান বাই টু’ ছবি ফ্লপ করার পর দেউলিয়া হয়ে যান অভিনেতা।
‘ওয়ান বাই টু’ ছবিটি বানাতে নিজের সঞ্চয়ের সব টাকাই খরচ করে ফেলেছিলেন অভয়। বলিপাড়া সূত্রে খবর, মুম্বইয়ে জুহুতে তাঁর যে বাড়িটি ছিল, সেটিও নাকি বিক্রি করে দিয়েছিলেন অভিনেতা।
কোটি কোটি টাকা লোকসান করে ফেলেছিলেন অভয়। সেই টাকা শোধ করতে দু’বছর সময় লাগে তাঁর। নিজেকে ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।
২০১৬ সালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার অভিনয় শুরু করেন অভয়। কানাঘুষো শোনা যায় যে, প্রীতির সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সাইরীনা মামিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অভয়। সেলিব্রিটি ম্যানেজার হিসাবে কাজ করতেন সাইরীনা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, দু’বছর সম্পর্কে ছিলেন অভয় এবং সাইরীনা। দু’জনকে মাঝেমধ্যেই একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যেত। কিন্তু এই প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে কিছুই জানাননি অভয়। একাংশের দাবি, ব্যক্তিগত জীবন গোপন রাখতে চান বলেই সাইরীনার ব্যাপারে কাউকে কিছু জানাননি অভিনেতা।