Bihar Government Exploration

২৬০০ বছরের পুরনো ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে বার করতে উঠেপড়ে লেগেছে বিহার সরকার! কিসের আশায়?

বাঁকা জেলার ভাদরিয়া গ্রামে এই খননকাজ চলবে। ভাদরিয়া গ্রামটি চন্দন নদীর তীরে অবস্থিত। ইতিহাসের বহু বইয়ে এই গ্রামের উল্লেখ রয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৩৯
Share:
০১ ১৮

চিনের পরিব্রাজক হিউয়েন সাংয়ের পরিদর্শন করা বৌদ্ধস্তূপগুলিতে গবেষণার কাজ শুরু করতে চলেছে বিহার সরকার। একই সঙ্গে বিহারের বাঁকা জেলায় ২৬০০ বছরের পুরনো একটি কাঠামোর যে অবশিষ্টাংশ সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে, সেখানেও খননকাজ চালানো হবে বলে স্থির করেছে সে রাজ্যের সরকার।

০২ ১৮

চিনের পরিব্রাজক হিউয়েন সাংয়ের পরিদর্শন করা সেই বৌদ্ধস্তূপগুলি বিহারের বৈশালী জেলায় রয়েছে। সেখানেই চলবে গবেষণার কাজ।

Advertisement
০৩ ১৮

ভারতীয় পুরাতাত্বিক সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া) সম্প্রতি সে রাজ্যের শিল্প, সংস্কৃতি ও যুব মন্ত্রকের শাখা ‘বিহার হেরিটেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিএইচডিএস)’-কে এই দু’টি জায়গা খতিয়ে দেখার অনুমতি দিয়েছে। তার পরেই ওই দুই জায়গায় গবেষণা চালাতে তৎপর হয়ে উঠেছে বিহার সরকার।

০৪ ১৮

বাঁকা জেলার ভাদরিয়া গ্রামে এই খননকাজ চলবে। ভাদরিয়া গ্রামটি চন্দন নদীর তীরে অবস্থিত। ইতিহাসের বহু বইয়ে এই গ্রামের উল্লেখ রয়েছে।

০৫ ১৮

প্রসঙ্গত, বাঁকা জেলার অমরপুর ব্লকের ভাদরিয়া গ্রামে চন্দন নদীর কাছে সম্প্রতি ২৬০০ যুগের ওই কাঠামোটি আবিষ্কৃত হয়েছে। স্থানীয়েরা ছটপুজো করতে গিয়ে ওই কাঠামোটি খুঁজে পান।

০৬ ১৮

এই প্রসঙ্গে রাজ্যের শিল্প, সংস্কৃতি ও যুব বিভাগের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব হরজ্যোত কউর বামরাহ বলেন, ‘‘এটা প্রমাণিত যে ভাদরিয়া একটি ঐতিহাসিক স্থান। প্রাথমিক গবেষণা অনুযায়ী, ওই জায়গায় আবিষ্কৃত ধ্বংসাবশেষ ২৬০০ বছরের পুরনো।’’

০৭ ১৮

সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে হরজ্যোত জানিয়েছেন, বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই বাঁকা এবং আশপাশের অঞ্চলগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই এলাকাগুলিতে মাটির নীচে আর কোনও প্রাচীন কাঠামো রয়েছে কি না, তা-ও খুঁজে বার করতে তৎপর হয়েছে সরকার।

০৮ ১৮

হরজ্যোত জানিয়েছেন, মাটির নীচে এবং চন্দন নদীর তীরে যে কাঠামো পাওয়া গিয়েছে সে সব সম্বন্ধে খোঁজখবর নিতে ইতিমধ্যেই আইআইটি কানপুরের বিশেষজ্ঞদের একটি দল ভাদরিয়া গ্রামে সমীক্ষা চালিয়েছে।

০৯ ১৮

উল্লেখযোগ্য যে, হিন্দু পুরাণে বাঁকার মন্দার পর্বতের অনেক উল্লেখ রয়েছে। বিএইচডিএসের এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর বিজয়কুমার চৌধুরি বলেন, ‘‘পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, সমুদ্রমন্থনের সময় অমৃত আহরণের জন্য মন্দার পর্বত ব্যবহার করা হয়েছিল।’’

১০ ১৮

প্রাচীন বৌদ্ধ সাহিত্যেও ভাদরিয়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাচীন বৌদ্ধ সাহিত্য অনুযায়ী এই গ্রামে বুদ্ধ স্বয়ং এসেছিলেন। তাঁর প্রধান অনুগামীদের মধ্যে বিশাখা নামে এক শিষ্যা পরবর্তী কালে নাকি সেই গ্রামেই থেকে গিয়েছিলেন।

১১ ১৮

মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভাদরিয়া গ্রাম পরিদর্শন করতে আসেন।

১২ ১৮

বিএইচডিএস এ-ও জানিয়েছে, প্রায় হাজার বছর আগে হিউয়েন বিহারের এখন যেখানে বৈশালী জেলা, সেখানে এসেছিলেন। বেশ কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখেন তিনি। সেই জায়গাগুলিতেও অনুসন্ধানের কাজ শুরু করবে বিহার সরকার।

১৩ ১৮

হিউয়েন সাং পরিচিত ছিলেন জুয়ানজাং নামেও। তিনি চিন থেকে রাজা হর্ষবর্ধনের শাসনকালে ভারতে এসেছিলেন। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলি অনুযায়ী, ৬২৯ এবং ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতে এসেছিলেন হিউয়েন। তার মধ্যে ৬৩০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৪২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তিনি বৈশালী এবং বিহারের অন্যান্য এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন।

১৪ ১৮

বিএইচডিএসের বিজয়কুমার বলেন, ‘‘জুয়ানজাংয়ের ভ্রমণকাহিনি ১৮৬০ থেকে ’৭০ সালের মধ্যে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক আলেকজান্ডার কানিংহামকে নালন্দা এবং বৈশালীর মতো বিখ্যাত এলাকাগুলি খুঁজে পেতে সাহায্য করেছিল।’’

১৫ ১৮

কানিংহাম ছিলেন ব্রিটিশ সেনার এক জন কর্তা এবং বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক। ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের প্রথম ডিরেক্টরও ছিলেন কানিংহাম।

১৬ ১৮

বিজয়কুমার এ-ও জানান হিউয়েনের ঘুরে দেখা জায়গাগুলি নিয়ে এর আগে কোনও পদ্ধতিগত কাজ হয়নি। কিন্তু এখন ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অনুমতি পাওয়ার পর সরকার সেই কাজে হাত দিতে চলেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

১৭ ১৮

বিএইচডিএস ইতিমধ্যেই দক্ষিণ বিহারে হিউয়েনয়ের পরিদর্শন করা বেশ কয়েকটি জায়গা নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে। বেশ কয়েক বছর নালন্দা ও বৈশালীতে কাটিয়েছিলেন হিউয়েন। তাই সেই জায়গাগুলিতে নতুন করে গবেষণা করতে চলেছে বিহার সরকার।

১৮ ১৮

বিজয়কুমারের কথায়, ‘‘দক্ষিণ বিহারে হিউয়েন যে জায়গাগুলি পরিদর্শন করেন, তার মধ্যে পটনা, জেহানাবাদ, গয়া, নওয়াদা, নালন্দা রয়েছে। ওই অঞ্চলের সমস্ত প্রধান পাহাড়গুলিতে গবেষণা চালানো হয়েছে। ভাস্কর্য, পুরাকীর্তি এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি বৈজ্ঞানিক ভাবে নথিভুক্ত এবং অধ্যয়ন করা হয়েছে। এখন, বৈশালী এলাকাতেও অনুসন্ধান কাজ শুরু করবে বিডিএইচএস।’’ ওই জায়গাগুলিতে নতুন কোনও রহস্য লুকিয়ে রয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে সরকারি সূত্রে খবর।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement