বড় দুর্ঘটনায় পড়েছেন মডেল-অভিনেত্রী আরশি খান। দিল্লির মালব্য নগরের শিবালিক রোড-এ তাঁর গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। প্রাণে বেঁচে গেলেও তিনি বুকে আঘাত পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গাড়িতে তাঁর এক সহযোগীও ছিলেন। তিনিও আঘাত পেয়েছেন। দু’জনকেই দিল্লির একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
গত দু-তিন বছর ধরে আরশির নাম ছোট পর্দার দর্শকদের কাছে খুবই পরিচিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ‘বিগ বস’-এর দু’টি মরসুমে অংশগ্রহণ করার পর থেকে তাঁকে এক নামে চেনেন দর্শকরা।
তিনি মুম্বইয়ের টেলি-জগতের পরিচিত মুখ। আরও একটি কারণে আরশির পরিচিতি বেড়েছে। বিতর্ক। বার বারই নানা মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন আরশি। সেটাই যেন তাঁর হাতিয়ার।
মুম্বইয়ের টেলি-জগতের পরিচিত মুখ হলেও আরশি কিন্তু এ দেশে জন্মাননি। তিনি প্রকৃতপক্ষে আফগানিস্তানের মেয়ে।
চার বছর বয়সে আফগানিস্তান থেকে মা-বাবার সঙ্গে ভারতে চলে আসেন আরশি খান। তার পর মধ্যপ্রদেশের ভোপালেই তাঁর বেড়ে ওঠা।
মডেলিং এবং তার পর অভিনয়ের দিকে ঝোঁকার আগেই তিনি নিজের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছিলেন ভোপাল থেকে। অনেকেই জানেন না, আরশি এক জন পেশাদার ফিজিওথেরাপিস্ট।
‘দ্য লাস্ট এম্পেরর’ নামে একটি হিন্দি ছবিতে বলিউডে অভিষেক হয় তাঁর। একটি তামিল ছবিতেও কাজ করেছেন। মুম্বইয়ে পা রেখে মডেলিং এবং অভিনয় জগতে পা দেওয়ার পর থেকেই বিতর্কে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছেন তিনি।
২০১৫ সালে পাক ক্রিকেটার শাহিদ আফ্রিদির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করে বিতর্কে জড়ান তিনি। টুইটারে তিনি লিখেছিলেন, ‘আফ্রিদির সঙ্গে আমার যৌন সম্পর্ক হয়েছে। কার শয্যাসঙ্গিনী হব, সে ব্যাপারে ভারতীয় মিডিয়ার অনুমতি নিতে হবে নাকি? এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার কাছে সম্পর্কটা ছিল ভালবাসার।’
এর মাস খানেক পর আরশি টুইটে আরও এক বিস্ফোরণ ঘটান। আরশি দাবি করেন, তাঁর গর্ভে রয়েছে আফ্রিদির সন্তান। তিনি টুইট করেছিলেন, ‘প্রেমিক হিসাবে আফ্রিদি ১০০-তে ১০০ পাবে। বিছানাতেও দারুণ। আর মাত্র ছ’মাস। তার পর আমি আফ্রিদির সন্তানের জন্ম দেব।’ ২০১৬ সালে এই টুইট করেছিলেন তিনি। সন্তানের জন্ম দেওয়ার খবর অবশ্য ২০২১ সালে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি।
বিতর্কই তাঁকে প্রচারে রেখেছে বরাবর। এক বার সলমন খানের জন্য নগ্ন হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে নিজের সাহসী ছবি টুইটারে পোস্ট করেছিলেন। তাতে সলমনকে ট্যাগ করে লিখেছিলেন, ‘এটা আমার ডার্লিংয়ের জন্য।’
এর পর ২০১৬ সালে ফের আরও এক বিতর্ক নিয়ে হাজির হন তিনি। দেহব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুণের একটি চারতারা হোটেলের ঘর থেকে আরশিকে গ্রেফতার করে পুণে সিটি ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ। যদিও আরশির দাবি ছিল, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ।
তাঁর নাকি সবটাই মিথ্যা, সাজানো। এ রকম অভিযোগ করেছিলেন ভোপালের মডেল-অভিনেত্রী গহনা বশিষ্ট। বয়স থেকে শিক্ষাগত যোগ্যতা, নিজের সম্পর্কে সব কিছুই মিথ্যে বলেছেন আরশি, দাবি করেন তিনি। সেই দাবির সত্যাসত্য অবশ্য জানা যায়নি।
শরীরে ভারত এবং পাকিস্তানের পতাকা এঁকেও বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। বিকিনির সঙ্গে হিজাব পরে ছবি পোস্ট করেও সমালোচিত হয়েছেন। বিতর্কের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলতে পছন্দ করেন আরশি। ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর থেকেই তাই বিতর্ককে নিজের সঙ্গী বানিয়ে নিয়েছেন। নেতিবাচক জনপ্রিয়তাকেই যেন তার সাফল্যের সিঁড়ি বানিয়ে নিয়েছেন তিনি।