‘বিগ বসের’ ঘরে ঝামেলা করে কেরিয়ার ডুবেছে বহু সেলেব্রিটির। আবার এই ‘বিগ বস্’ই অক্সিজেন জুগিয়েছে বহু মানুষকে। রাতারাতি পাল্টে দিয়েছে তাঁদের জীবিকা, ভাগ্য। সে রকমই এক জন হলেন শিব ঠাকরে।
শিব এক বার নয়, দু’বার ‘বিগ বস্’-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই অডিশন দেওয়া নিয়েও রয়েছে এক গল্প।
১৯৮৯ সালে মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে জন্ম শিবের। পারিবারিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না তাঁর।
ছোটবেলা থেকেই সংসার চালাতে কাজ করতেন শিব। তখন তিনি দুধ বিক্রি করতেন। ভোরবেলা বাড়ি বাড়ি খবরের কাগজ পৌঁছে দিতেন। এ ভাবে কোনও মতে চলত সংসার।
তখন বেশ কম বয়স শিবের। পকেটে মাত্র ৩০০০ টাকা সম্বল করে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। ‘বিগ বস্’-এর অডিশন দিতে। যাতায়াতেই খরচ হয়ে গিয়েছিল বেশির ভাগ টাকা।
২০১৭ সালে ‘এমটিভি রোডিজ় রাইজ়িং’-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন শিব। সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন সে বার। তার পরেই পরিচিতি।
এর পর ‘বিগ বস্’ মারাঠি দ্বিতীয় সিজ়নে অংশগ্রহণ করেছিলেন শিব। সে বার তিনি জয়ী হয়েছিলেন। পেয়েছিলেন বড় অঙ্কের টাকা। তার পর থেকেই ঘুরতে শুরু করে ভাগ্য।
‘বিগ বস্’-এর ঘরে থাকার সময় সহ-প্রতিযোগী বীণা জগতাপের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শিব। দু’জনে একটি মিউজ়িক ভিডিয়োতেও কাজ করেছিলেন। পরে যদিও সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়।
২০২৩ সালে ‘বিগ বস্’ সিজ়ন ১৬-তে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। এমসি স্ট্যানের কাছে শেষ পর্যন্ত হেরে যান। তবে অসংখ্য মানুষের মন জিতে নেন।
‘খতরোঁ কে খিলাড়ি’-তেও অংশগ্রহণ করেছিলেন শিব। সেখানে সঞ্চালক ছিলেন রোহিত শেট্টি। প্রথম দিকেই বাদ পড়ে যান তিনি। কিন্তু তার পরেও মানুষের মনে থেকে যান।
শিবের ভয়ডরহীন স্বভাব পছন্দ করেন দর্শকেরা। রিয়েলিটি শোয়ে মানুষকে বিনোদনও জুগিয়েছিলেন তিনি।
এখন ‘ঝলক দিখলা যা’-র একাদশ সিজ়নে দর্শকদের মন টানছেন শিব। টেক্কা দিচ্ছেন সহযোগীদের। সেখানে সঞ্চালনা করছেন গওহর খান, ঋত্বিক ধনজানি।
বিচারকের আসনে রয়েছেন আরশাদ ওয়ারসি, ফারাহ খান, মালাইকা অরোরা। উর্বশী ঢোলাকিয়া, বিবেক দাহিয়া, তানিশা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সেই শোয়ে লড়াই করছেন শিব। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের টেক্কাও দিচ্ছেন।
অতীতে একটি সাক্ষাৎকারে শিব জানিয়েছিলেন, অভিনেতা হতে চান তিনি। নায়ক নয়, খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করতে চান বলেও জানিয়েছিলেন।
২০২১ সালে নিজস্ব একটি ব্র্যান্ড চালু করেন শিব। ডিওডোর্যান্ট তৈরির সংস্থা খোলেন তিনি। সেই থেকে ব্যবসায় হাতেখড়ি।
‘বিগ বস’-এর ১৬তম সিজনে যোগ দেওয়ার পর মুম্বইয়ে একটি রেস্তরাঁও খুলেছেন শিব। ভালই চলছে সেই রেস্তরাঁ।
‘বিগ বস’-এর ১৬তম মরসুমে প্রতি সপ্তাহে প্রযোজকদের থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা নিতেন শিব। শোনা যায়, ওই সিজন থেকে প্রায় এক কোটি টাকা পেয়েছেন তিনি। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা। সবটাই রিয়েলিটি শোয়ের কল্যাণে।