বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই টুইটার ব্যবহারকারী বহু নামীদামি ব্যক্তিত্বের পাশ থেকে সরেছে ‘বিশেষ’ তকমা ‘ব্লু টিক’। সেই তালিকায় রয়েছেন অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, বিরাট কোহলি থেকে শুরু করে জাস্টিন বিবার, কেটি পেরি। এমনকি বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের বিল গেটসের নামের পাশ থেকেও ‘ব্লু টিক’ সরানো হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন অনেক রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকও। নাম রয়েছে অনেক বাঙালি বিশিষ্টেরও।
বৃহস্পতিবার বিকালের পর সরকারের সঙ্গে যুক্ত আছেন, এমন অনেকের নামের পাশ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘ব্লু টিক’। অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অফিশিয়াল হ্যান্ডলের পাশ থেকে সরেছে সেই চিহ্ন।
বর্তমানে টুইটারের মালিকানা রয়েছে আমেরিকার ধনকুবের ইলন মাস্কের কাছে। তাঁর টুইটার অধিগ্রহণের আগে সমাজের বিশিষ্টদের নামের পাশে ‘ব্লু টিক’ বসত। সে তিনি যে ক্ষেত্র থেকেই আসুন না কেন। কিন্তু টুইটারের দখল নেওয়ার পর নিয়ম বদলেছেন ইলন। ‘টিক’ চিহ্নে বৈচিত্র আনতে নীলের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে ধূসর এবং সোনালি রং।
ইলন এ-ও জানিয়ে দিয়েছেন টাকা ফেললে তবেই মিলবে টুইটারে ‘বিশেষ’ হওয়ার তকমা। সে রাম-শ্যাম-যদু-মধু, যিনিই হন না কেন, মাসে ৬৫৭ টাকা ৩৩ পয়সা দিলেই নামের পাশে বসবে ব্লু কিংবা গ্রে টিক। যার মধ্যে সরকারের সঙ্গে যুক্ত বিশেষ কিছু জনের নামের পাশে থাকবে ‘গ্রে টিক’।
তবে ‘গোল্ডেন টিক’ পাওয়ার খরচা অনেক। মাসে ৮২ হাজার টাকারও বেশি। তবে কেবল মাত্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিই এই সোনালি রঙের চিহ্ন পেতে পারেন।
এত দিন পর্যন্ত সমাজের বিশেষ ব্যক্তি এবং তারকা, সকলের নামের পাশেই ‘ব্লু টিক’ বসত। কিন্তু ইলন টাকার ‘খেলা’ চালুর পর থেকে বদলে গিয়েছে সে নিয়ম। এ বার টাকা দেওয়ার পর পদমর্যাদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট রং পাবেন বিশিষ্টরা। আর কেউ যত বড়ই তারকা হন না কেন, টাকা না দিলে কোনও চিহ্ন পাওয়া যাবে না। সাফ জানিয়ে দিয়েছে টুইটার।
টাকা না দেওয়ায় বৃহস্পতিবারের বিকালের পর থেকে টুইটারে অনেকেরই ‘বিশেষ’ হওয়ার তকমা গিয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কোন কোন বাঙালি রয়েছেন সে তালিকায়।
এই তালিকায় প্রথমেই যাঁর নাম আসে, তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিকালের পর থেকে টুইটারে তাঁর নামের পাশের টিক চিহ্ন উঠে গিয়েছে। টুইটারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, টাকা দিলে এখন থেকে তাঁর নামের পাশে ‘গ্রে টিক’ থাকবে।
টুইটারে ‘বিশেষ’ হওয়ার তকমা হারিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ‘টিক’ পরিষেবার মাসিক টাকা দিলে এখন থেকে তাঁর নামের পাশেও ‘গ্রে টিক’ বসবে।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীরও নামের পাশ থেকে ‘ব্লু টিক’ সরে গিয়েছে। ‘ব্লু টিক’ সরেছে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের নামের পাশ থেকেও।
ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পরিচিতি বিশ্বজোড়া। কিন্তু তাঁর নামের পাশ থেকেও ‘ব্লু টিক’ সরিয়ে দিয়েছে ইলনের টুইটার।
টলিউড অভিনেতা তথা সাংসদ দেবের নামের পাশেও আর টিক চিহ্ন নেই। ‘ব্লু টিক’ সরে গিয়েছে অভিনেতা জিতের নামের পাশ থেকেও।
টুইটারের ‘ব্লু টিক’ নিয়ম অনুযায়ী অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী এবং নুসরত জাহানও আর ‘বিশিষ্ট’ নন।
তবে ‘ব্লু টিক’ রয়ে গিয়েছে টলিউড সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নামের পাশে।
‘গ্রে টিক’ জ্বলজ্বল করছে রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের নামের পাশেও।
এ ছাড়াও অনেক তারকা, রাজনীতিবিদ এবং বিশিষ্টদের নামের পাশ থেকে ‘ব্লু টিক’ সরে গিয়েছে।