Padma Award

Padma Award refusal: পদ্মে ‘না’ বলে দেওয়া ত্রয়ী বুদ্ধ-সন্ধ্যা-অনিন্দ্য! পদ্ম সম্মান প্রথম প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এক বাঙালিই

হিসাব করলে দেখা যাবে, কেন্দ্রের পদ্ম সম্মান এ যাবৎ বিশিষ্ট যত জন ফিরিয়েছেন তাঁদের একটা বড় অংশই বাঙালি।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:০৪
Share:
০১ ১৩

কমলাসনে লক্ষ্মী বসানো বাঙালির কি কমল অর্থাৎ পদ্মে অনীহা! তা না হলে বাংলার গুণীজনের কাছেই বার বার প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়বে কেন পদ্ম সম্মান।

০২ ১৩

২০২২ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন পদ্ম সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছেন তিন বাঙালি— সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, বামপন্থী রাজনীতিবিদ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তবলাবাদক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। তবে তাঁরা এই প্রত্যাখ্যানের ধারার সাম্প্রতিক উদাহরণ। তাঁদের আগে বহু বাঙালি কেন্দ্রের দেওয়া পদ্ম সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement
০৩ ১৩

কেউ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন। কেউ আবার সন্ধ্যার মতোই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আবার অনেকে এমনও রয়েছেন, যাঁরা পদ্মশ্রী ফিরিয়ে শেষপর্যন্ত অনুরোধ-উপরোধে পদ্মের উচ্চতর সম্মান ‘পদ্মভূষণ’ বা ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ‘ভারতরত্ন’ গ্রহণ করেছেন।

০৪ ১৩

হিসাব করলে দেখা যাবে, কেন্দ্রের পদ্ম সম্মান এ যাবৎ বিশিষ্ট যত জন ফিরিয়েছেন তাঁদের একটা বড় অংশই বাঙালি।

০৫ ১৩

১৯৫৯ সালে পদ্ম সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন শিশিরকুমার ভাদুড়ি। বাংলা থিয়েটারের খ্যাতনামী শিশির কেন্দ্রীয় সম্মান গ্রহণ না করে থিয়েটারের প্রতি কেন্দ্রীয় অবহেলার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘আমি এই ভুল বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই না যে, কেন্দ্রের সরকার কখনও জাতীয় জীবনে থিয়েটারের ভূমিকাকে গুরুত্ব দিয়েছিল।’’

০৬ ১৩

শিশিরকে কেন্দ্র পদ্মভূষণ সম্মান দিতে চেয়েছিল। তখন তাঁর বয়স ৭০। কেন্দ্রে সে সময় কংগ্রেস সরকার। প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। বাংলাতেও ক্ষমতায় কেন্দ্রেরই শাসকদল, মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়। পদ্ম সম্মান ফিরিয়ে শিশির বলেছিলেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় সম্মান আসলে স্তাবকের দল তৈরির একটি চেষ্টা মাত্র।’’

০৭ ১৩

শিশিরের মতোই পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এক সাংবাদিক। তিনিও বাঙালি। নাম নিখিল চক্রবর্তী। ১৯৯০ সালে নিখিল তাঁকে দেওয়া সম্মান প্রত্যাখ্যান করে জানান, এক জন সাংবাদিকের উপর রাষ্ট্রের বদান্যতার বোঝা থাকা উচিত নয়।

০৮ ১৩

১৯৭৪ সালে পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বাঙালি কণ্ঠশিল্পী তারাপদ চক্রবর্তী। খেয়াল এবং ঠুমরি গানের বিশেষজ্ঞ তিনি। ১৯৭২ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির সর্বোচ্চ সম্মান সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি ফেলোশিপ দেওয়া হয় তারাপদকে। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দেন তিনি।

০৯ ১৩

পদ্ম সম্মান ফিরিয়েছিলেন বাঙালি গায়ক এবং সঙ্গীত পরিচালক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ও। বাংলা এবং হিন্দি ছাড়াও আরও অন্তত ১০ রকম ভাষায় গানের সুর দিয়েছেন তিনি। ১৯৮৮ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়ার প্রস্তাব দেয় কেন্দ্র। হেমন্ত প্রত্যাখ্যান করেন। যদিও তার কোনও কারণ জানাননি তিনি।

১০ ১৩

পদ্ম সম্মান একাধিক বার প্রত্যাখ্যান করেছেন বাঙালি নাট্যকার বাদল সরকার। ১৯৭২ সালে পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়ে দেন। তার চার বছর আগেই সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন বাদল। পদ্ম ফিরিয়ে তিনি জানান, এক জন লেখকের প্রাপ্য সেরা সম্মান তিনি পেয়ে গিয়েছেন সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির দেওয়া সম্মানেই। পরে ২০১০ সালে কেন্দ্র তাঁকে পদ্মভূষণ দিতে চাইলেও বাদল তা নেননি।

১১ ১৩

তবে এরই মধ্যে এমন বাঙালিও রয়েছেন, যাঁরা পদ্ম সম্মান প্রথমে ফিরিয়ে দিলেও পরে পদ্মেরই উচ্চতর সম্মান গ্রহণ করতে রাজি হয়েছেন। এই তালিকার প্রথমেই বলতে হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নাম। ১৯৭০ সালে পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দেন তিনি। পরে ২০০৪ সালে পদ্মভূষণ নিতে রাজি হন। কারণ, তিনি ‘ভক্তদের ভাবাবেগে আঘাত করতে চাননি’।

১২ ১৩

২০১১ সালে পদ্মশ্রী নিতে চাননি বাঙালি সরোদ শিল্পী বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যার মতো তিনিও অভিমান দেখিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘আগে অনেক কমবয়সি এবং অযোগ্য শিল্পী পদ্ম সম্মান পেয়ে গিয়েছেন।’’ পরের বছর ২০১২ সালে তাঁকে পদ্মভূষণ সম্মান দেওয়া হলে তিনি তা নিতে রাজি হন।

১৩ ১৩

জন্মসূত্রে বাঙালি নন। তবে মাদার টেরেসাকে বাঙালি নিজেরই মনে করে। তিনিও পদ্ম সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন দু’বার। ১৯৬০ এবং ১৯৬১ সালে পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়ে দেন তিনি। কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, তিনি ঈশ্বরের কাজ করেন এবং তার জন্য কোনও সম্মানের দরকার নেই। পরে ১৯৬২ সালে তাঁকে ওই সম্মান নিতে রাজি করান কলকাতার আর্চবিশপ। এরপর ১৯৮০ সালে ভারতরত্ন সম্মানও দেওয়া হয় মাদারকে। উল্লেখ্য, এর ঠিক এক বছর আগেই নোবেল শান্তি পুরষ্কারও নিয়েছিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement