সদ্য বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। গোটা টুর্নামেন্টে একটিও ম্যাচ না হেরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বসেরার মুকুট পরেছেন রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিরা। দেশ এখন নায়কদের ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।
ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া ইংল্যান্ড এবং আফগানিস্তান বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল। আগেই ছিটকে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশের মতো দল।
ভারত বিশ্বকাপ জিতলেও স্কোয়াডের সব সদস্য টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পাননি। শুধু ভারত নয়, অন্য দলেরও একাধিক ক্রিকেটার রয়েছেন যাঁরা গোটা টুর্নামেন্ট বেঞ্চেই কাটিয়েছেন। সেই সুযোগ না পাওয়াদের নিয়ে দল তৈরি করলাম আমরা। দলে তিন ভারতীয় ছাড়াও আর কারা থাকলেন?
যশস্বী জয়সওয়াল— ভারতের এই বাঁহাতি ওপেনারের আন্তর্জাতিক টি২০ রেকর্ড বেশ ভাল। আইপিএলেও ভাল খেলেছেন তিনি। তবে ভারত রোহিত-বিরাটকে দিয়ে ওপেন করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিশ্বকাপে একটিও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তরুণ ওপেনার।
বেন ডাকেট— ১২টি আন্তর্জাতিক টি২০-তে ৩১৫ রান করেছেন ইংল্যান্ডের এই ওপেনার। স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৪৫। তবুও ফিল সল্ট এবং জস বাটলারের ওপেনিং জুটিতে ভরসা রেখেছিল ইংল্যান্ড। ফলে বিশ্বকাপে সুযোগ পাননি বেন। সুযোগ না পাওয়াদের দলের দ্বিতীয় ওপেনার তিনিই।
সঞ্জু স্যামসন— বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়া ভারতের আর এক ‘বঞ্চিত’ ক্রিকেটার। ডানহাতি সঞ্জু টি২০তে নিজেকে প্রমাণ করেছেন বার বার। তবে দলে ঋষভ পন্থ থাকায় ভারতীয় দলে সুযোগ পাননি তিনিও।
জস ইংলিশ— টি-২০ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলে উইকেটরক্ষক হিসাবে প্রথম পছন্দ ছিলেন ম্যাথু ওয়েড। তাঁর বিকল্প হিসাবে দলে রাখা হয়েছিল জস ইংলিশকে। কিন্তু তিনি খেলার সুযোগ পাননি। ২১টি ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে তাঁর মোট রান ৪৭০। উইকেটরক্ষক না হলেও ব্যাটার হিসাবে ‘বঞ্চিত’দের দলে থাকবেন তিনি।
সিমরন হেটমায়ার— ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি ব্যাটার সিমরন হেটমায়ার আক্রমণাত্মক শট খেলে বার বার নজর কেড়েছেন। অভিজ্ঞতাও কম নেই তাঁর। তবে ১৫ জনের দলে থাকলেও বিশ্বকাপে বেঞ্চে বসেই কাটাতে হয়েছে তাঁকে। ‘বঞ্চিত’দের দলে থাকবেন তিনিও। ৫৭টি ২০ ওভারের খেলায় তাঁর মোট রান ৯০২।
নিসর্গ পটেল— ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই অলরাউন্ডার আমেরিকার টি-২০ বিশ্বকাপ দলে প্রথম ১৫ জনের মধ্যে ছিলেন। ২১টি ম্যাচ খেলে তাঁর হাত থেকে এসেছে ১১৫ রান। পেয়েছেন ২৭টি উইকেট। বিশ্বকাপ খেলার অন্যতম দাবিদার ছিলেন তিনিও।
সাকিব জ়ুলফিকর— নেদারল্যান্ডের বোলিং অলরাউন্ডার সাকিব জ়ুলফিকর। ছ’টি আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলে তাঁর নামের পাশে দু’টি উইকেট। তবে ইকোনমি রেট বেশ ভাল— ৬.৭৭। ৩৪ রানও করেছেন ব্যাট হাতে। সুযোগ পেলে নেদারল্যান্ডের নির্ভরযোগ্য স্পিনার হয়ে উঠতে পারতেন তিনি।
গ্রাহাম হিউম— দক্ষিণ আফ্রিকান এই ক্রিকেটার আয়ারল্যান্ডের জাতীয় দলে খেলেন। তিনি ডান হাতি জোরে বোলার। ছ’টি আন্তর্জাতিক ২০ ওভারের ম্যাচ খেলে তাঁর নামের পাশে রয়েছে পাঁচটি উইকেট। ওভারপ্রতি দিয়েছেন ১০ রান। ব্যাট হাতে ৩৩ রানও করেছেন তিনি।
যুজবেন্দ্র চাহাল— ভারতের এই লেগ স্পিনার বল হাতে বহু ম্যাচ জিতিয়েছেন দলকে। অভিজ্ঞতার পাশাপাশি দক্ষতাও রয়েছে তাঁর। তবে কুলদীপ যাদব এবং অক্ষর পটেল দলে থাকায় এ বারের টি-২০ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাননি চাহাল। ‘বঞ্চিত’দের দলে অবশ্যই থাকবেন।
ঋষিভ জোশী— কানাডার বোলার ঋষিভ জোশী বিশ্বকাপের আগে নজর কেড়েছিলেন। সাতটি আন্তর্জাতিক ২০ ওভারের ম্যাচ খেলে তিনি নিয়েছেন পাঁচটি উইকেট। ইকোনমি রেট ৮.৪৪। সুযোগ পেলে তিনিও দলের সম্পদ হয়ে উঠতে পারতেন।
ফারিদ আহমদ— এ বারের বিশ্বকাপের অন্যতম চমক ছিল আফগানিস্তানের উত্থান। অস্ট্রেলিয়া, নিউ জ়িল্যান্ডের মতো দলকে বিশ্বকাপে হারিয়ে দিয়েছে তারা। আফগানদের ১৫ জনের দলে ছিলেন ফারিদ আহমদ। ৩০টি আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। নিয়েছেন ৩৯টি উইকেট।
জাতীয় দলে থাকলেও এই ১১ জন ক্রিকেটারের বিশ্বকাপ কেটেছে বেঞ্চে বসে। অন্য সতীর্থের সুযোগ পাওয়া এবং ভাল খেলা তাঁদের সুযোগের পথে ‘কাঁটা’ হয়ে ছিল। তবে ‘বঞ্চিত’দের এই দল কিন্তু সুযোগ পেলে অনায়াসে টেক্কা দিতে পারত বিরাট-রোহিতদের মতো বিশ্বসেরাদের।