Begum Sultan Jahan

ব্রিটিশ রাজত্বে শেষ মহিলা নবাব, ১৫ হাজার কোটির সম্পত্তির মালিক সইফের বৃদ্ধপ্রপিতামহী

নবাব হামিদুল্লাহ খানের মেয়ে সাজিদা সুলতানের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন সইফের ঠাকুরদা নবাব ইফতিকার আলি খান পটৌদী। সেই সূত্রে ভোপালের শেষ মহিলা নবাব সুলতান জাহানের প্রপৌত্র সইফ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫৩
Share:
০১ ১৭

ভোপালের সিংহাসনের শেষ মহিলা উত্তরাধিকারিণী। তৎকালীন সমাজে সাধারণ মেয়েদের মধ্যে এবং মুসলিম রাজপরিবারের মেয়েদের মধ্যে যে রক্ষণশীলতা ছিল, তা তিনি অতিক্রম করতে পেরেছিলেন। আজ থেকে ১২৪ বছর আগে ভোপালের সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন বেগম সুলতান জাহান।

০২ ১৭

ভোপালের প্রাক্তন শাসকদের মালিকানাধীন এবং অভিনেতা সইফ আলি খান ও পটৌদী পরিবারের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে যে জটিলতা শুরু হয়েছে সেই সম্পত্তির একদা মালিক ছিলেন এই বেগম।

Advertisement
০৩ ১৭

পটৌদীর নবাব পরিবার ও সইফের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে ভোপালের এই রাজপরিবারের। বেগম সুলতানের ছেলে ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খান। তাঁর তিন মেয়ের মধ্যে সাজিদা সুলতানের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন সইফের ঠাকুরদা নবাব ইফতিকার আলি খান পটৌদী। সেই সূত্রে ভোপালের শেষ মহিলা নবাব সুলতান জাহানের প্রপৌত্র সইফ।

০৪ ১৭

ভোপালের ১৫ হাজার কোটি টাকার ভূসম্পত্তি কার হাত যাবে সেই নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সেই সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে সুলতান জাহানের থেকে পেয়েছিলেন একমাত্র পুত্র এবং উত্তরসূরি নবাব হামিদুল্লাহ খান।

০৫ ১৭

হামিদুল্লাহের প্রথম সন্তান আবিদা পাকিস্তানে চলে যাওয়ার পর আইন অনুযায়ী ইফতিকার আলি খান পটৌদীর স্ত্রী সাজিদার হাতে চলে আসে গোটা সম্পত্তি। বংশানুক্রমিক ভাবে তা মনসুর আলি খান ও সবশেষে সইফ ও তাঁর বাকি দুই বোনের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে দেওয়া হয়।

০৬ ১৭

ভোপালের প্রাক্তন শাসকদের মধ্যে একটি নাম যা ইতিহাস প্রায় উপেক্ষাই করেছে তিনি হলেন বেগম সুলতান জাহান। তিনি সমসাময়িক শাসকদের তুলনায় ভিন্ন ভাবে নিজের রাজ্যকে স্বতন্ত্র রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

০৭ ১৭

সুলতান জাহান ছিলেন ভোপালের সবচেয়ে বয়স্ক বেগম। তিনি ৪৩ বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেন। ভোপালের নবাব বেগম সুলতান শাহ জাহান এবং তাঁর স্বামী বাকি মুহাম্মদ খান বাহাদুরের একমাত্র মেয়ে সুলতান জাহান। ১৮৫৮ সালে তাঁর জন্ম। জন্মের কয়েক বছর পরই ভোপালের মসনদে বসেন তাঁর মা সুলতান শাহ জাহান।

০৮ ১৭

১৮৬৮ সালে তাঁর মাতামহী সিকন্দর বেগমের মৃত্যুর পর এবং তাঁর মায়ের সিংহাসনে বসার পর সুলতান জাহানকে ভোপাল মসনদের পরবর্তী উত্তরাধিকারী হিসাবে ঘোষণা করা হয়। তাঁর মায়ের মৃত্যুর পর ১৯০১ সালে সুলতান জাহান ভোপালের সিংহাসনে আরোহণ করে ভোপালের নবাব বেগম হন।

০৯ ১৭

তৎকালীন সমাজে সাধারণ ও মুসলিম নারীদের মধ্যে যে বাঁধাধরা প্রথা ছিল, তা অতিক্রম করে গিয়েছিল এই রাজপরিবার। পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভোপালের উন্নতির জন্য কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়েছিলেন সুলতান জাহান।

১০ ১৭

ব্রিটিশ রাজত্বে বরাবরই শাসকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন তিনি। ভোপালকে ইউরোপীয় শহরের ছাঁদে সাজাতে চেয়েছিলেন নবাব বেগম।

১১ ১৭

ভোপালকে একটি প্রগতিশীল এবং আধুনিক শহর হিসাবে গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন নবাব। সেখানে শিক্ষা, বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষায় ছিল অগ্রাধিকার। বেগম সুলতান জাহান শহর জুড়ে অনেক স্কুল ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বাছাই করে শিক্ষকও নিয়োগ করতেন তিনি।

১২ ১৭

১৯২০ থেকে তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ছিলেন। তিনিই একমাত্র মহিলা যিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই নজির ২০২০ পর্যন্ত অক্ষুণ্ণ ছিল।

১৩ ১৭

শিক্ষার মানোন্নয়ন ছাড়াও নবাব বেগম কর, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিচার বিভাগ এবং কারা বিভাগের কাঠামোকেও ঢেলে সাজিয়েছিলেন।

১৪ ১৭

নবাব বেগমের শাসনকালে সে রাজ্যে মদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। ভোপালকে ইউরোপীয় শহরের রূপ দিতে একটি ইয়ট ক্লাবের প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। অনেকে বিশ্বাস করেন, তিনি আরও কিছু দিন বেঁচে থাকলে ভোপালকে ইউরোপীয় ধাঁচে গড়তে সফল হতেন তিনি।

১৫ ১৭

সময়ের তুলনায় এগিয়ে থাকা ও দূরদর্শী নবাব বেগমের ছিল গাড়ির শখ। তাঁর গ্যারাজে ঠাঁই পেত আধুনিক সংস্করণের রোলস রয়েজ়ের মতো বিলাসবহুল গাড়ি। তিনি তিনটি রোলস রয়েজ়ের মালিক ছিলেন।

১৬ ১৭

১৯৩০ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছর রাজ্য শাসন করেছিলেন সুলতান জাহান। তাঁর মৃত্যুর চার বছর আগেই ভোপালেন নবাব হিসাবে সিংহাসনে বসেন তাঁর একমাত্র পুত্র। ‘অ্যান অ্যাকাউন্ট অফ মাই লাইফ’ নামে তিনটি খণ্ডে তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়।

১৭ ১৭

নবাব বেগমের বংশের আধুনিকমনস্কতা চারিয়ে গিয়েছিল পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও। তাঁর নাতনি আবিদা বেগমও ছোটবেলা থেকেই চালাতেন রোলস রয়েজ়, করতেন বাঘ শিকারও। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ভোপালের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হন আবিদা। অতুলনীয় পরিবারের মতোই অসামান্যা নারী ছিলেন ভোপালের নবাব বেগম। ভবিষ্যতের দিকে চোখ রেখে বর্তমানে শাসন করার জন্য পরিচিত ছিলেন তিনি।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement