কখনও হাত দিয়ে ঢাকা, কখনও কটিবস্ত্র পরে অনাবৃত গায়ে স্বমহিমায়। এ ভাবেই সম্প্রতি নেটমাধ্যমে হাজির হয়েছেন অভিনেতা রণবীর সিংহ। তাঁর সে সব ছবি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়েছে বলিপাড়ায়। রণবীরের নিরাবরণ দেহের আঁচ এসে পড়েছে টলিপাড়াতেও। ভক্তকুলও আহ্লাদিত রণবীরের এই নয়া অবতারে। বিতর্ক এবং সমালোচনাও হয়েছে অল্পবিস্তর।
তবে রণবীরই প্রথম নন, যাঁর বিবস্ত্র দেহ এবং সুঠাম শরীর তোলপাড় ফেলেছে আসমুদ্রহিমাচল জুড়ে। বস্তুত, তাঁর বেলায় বিতর্ক বোধহয় খানিকটা কমই।
রণবীরের আগেও নিরাবরণ হয়ে ক্যামেরার সামনে ধরা দিয়েছেন বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী। অভিনেতাদের ক্ষেত্রে বিতর্ক কম হলেও বার বার সমাজের ধ্বজাধারীদের রোষে পড়েছেন অভিনেত্রীরা।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, অতীতেও অনাবৃত হয়ে হইচই ফেলেছিলেন কারা? কার ছবিতেই বা তৈরি হয়েছিল বিতর্ক?
নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে মডেল-অভিনেতা মিলিন্দ সোমন হার্টথ্রব হয়ে উঠেছিলেন বহু তরুণী-যুবতীর। মিলিন্দের তীক্ষ্ণ চাহনি এবং চওড়া চোয়ালের প্রেমে হুটহাট পড়তেন মহিলারা।
তবে ১৯৯৫ সালে মিলিন্দ হঠাৎ করেই চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন এক জুতোর বিজ্ঞাপন করে। আদুড় গায়ে সহ-মডেল এবং তৎকালীন বান্ধবী মধু সাপ্রুকে জড়িয়ে ধরে বিজ্ঞাপনের জন্য ফটোশ্যুট করেন মিলিন্দ।
সেই বিজ্ঞাপনে অনাবৃতা ছিলেন মধুও। তাঁদের শরীরের উর্ধাঙ্গ আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ছিল একটি পাইথন।
নব্বইয়ের দশকে বিজ্ঞাপনের স্বার্থে বস্ত্রহীনা হয়ে বিতর্ক তৈরি করেন এক অভিনেত্রী। রাতারাতি পাড়ার চায়ের দোকান থেকে বলিউডের অন্দরমহলে চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন অভিনেতা কবির বেদী-কন্যা পূজা বেদী।
একটি কন্ডোমের বিজ্ঞাপনের জন্য এই রূপে ক্যামেরার সামনে ধরা দেন পূজা। একে কন্ডোম, তার উপর আবার নিরাবরণ অভিনেত্রী।
সেই বিজ্ঞাপন করে অনেকের রোষ এবং কটাক্ষের মুখেও পড়তে হয় পূজাকে। এমনকি, বিজ্ঞাপন মুক্তির কয়েক মাসের মধ্যেই তা ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়।
আমির খান অভিনীত ‘পিকে’ সিনেমাটি ২০১৪ সালে মুক্তি পায়। সিনেমার বিষয়বস্তুর কারণে হিন্দুত্ববাদীদের কোপে পড়তে হয় সেই সিনেমাকে। তবু বক্স অফিসে সিনেমাটি সাফল্য লাভ করে। তবে আরও একটি কারণে এই সিনেমা খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল।
ছবিতে এক ভিনগ্রহীর চরিত্রে অভিনয় করেন আমির। সিনেমার চিত্রনাট্যের খাতিরে একটি দৃশ্যে নগ্ন হতে হয় আমিরকে। ওই দৃশ্যে কেবল একটি ট্রানজিস্টার দিয়ে গোপনাঙ্গ ঢাকতে দেখা যায় আমিরকে। দৃশ্যটি অনেকে পছন্দ করলেও অনেকের অপছন্দের কারণ হয়ে ওঠে।
‘কামসূত্র থ্রিডি’ সিনেমার শুটিংয়ের জন্য বসনহীনা হয়েছিলেন বলিউডের বিতর্কিত অভিনেত্রী শার্লিন চোপড়াও।
সিনেমার সেটে সম্পূর্ণ বসনহীনা হয়ে কফিতে চুমুক দেওয়ার একটি ছবি নেটমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন শার্লিন। এর পরই হইচই পড়ে যায় সেই ছবি নিয়ে।
বিতর্কিত রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস-৬’-এ অংশ নিয়ে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন বলিউডের তারকা কেশশিল্পী স্বপ্না ভাবনানি। তাঁকেও একবার ফোটোশ্যুটের খাতিরে নগ্ন হতে হয়েছিল। ‘পেটা’-র হয়ে একটি পশম এবং চামড়া-বিরোধী বিজ্ঞাপনের জন্য অনাবৃত হতে দেখা যায় স্বপ্নাকে।
রণবীরকে দেখলে বোঝা যায়, বর্তমানে ক্যামেরার সামনে নিরাবরণ ভাবে দাঁড়ানো খুব কঠিন নয়। সাবলীল ভাবেই তিনি ক্যামেরার সামনে নিজের উন্মুক্ত শরীর মেলে ধরেছেন। তবে নম্বইয়ের দশকে হয়তো এতটাও সাহসী ছিল না বলিউড।
নম্বই দশকের আগে পেশার খাতিরেও নিরাবরণ হতে দেখা যেত না সিনে তারকাদের। তখন সঙ্কোচ এবং সমালোচনা দুই-ই বেশি ছিল। সেই কারণেই কটিবস্ত্র পরে থাকতেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।