তিল তিল করে গড়ে উঠছে বহুচর্চিত অযোধ্যার রামমন্দির। ঠিক দু’বছর আগে, অর্থাৎ ২০২০ সালের ৫ অগস্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পর থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়ে যায় মন্দির নির্মাণের কাজ। ২০২৪ সালেই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। কী ভাবে নির্মাণ কাজ চলছে? তারই ঝলক রইল এখানে।
চলতি বছরের জুন মাসে রামমন্দিরের গর্ভগৃহে প্রথম পাথরটি গাঁথেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
রাম জন্মভূমিতে ‘শিলা পূজন’ অনুষ্ঠানে গর্ভগৃহের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে যোগী বলেছিলেন, ‘‘৫০০ বছরের সংগ্রাম সফল হয়েছে। শীঘ্রই অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হবে।’’
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই মন্দির নির্মাণের ৪০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। মন্দিরের কংক্রিটের ভিত্তির উপর আরও একটি স্তর তৈরি করা হয়েছে। যা তৈরি হয়েছে গ্রানাইট ও বেলেপাথরের মিশ্রণ দিয়ে।
২০২৪ সালের শুরুতে মন্দিরের প্রথম তলের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রামমন্দির নির্মাণের তদারকিতে যুক্ত এক মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, ‘‘জোরকদমে কাজ চলছে। গর্ভগৃহ এলাকা থেকে মূল মন্দিরের অংশ নির্মাণের কাজ শুরু করেছি।’’
মন্দিরের দেওয়ালে বসানো হবে রাজস্থানের গোলাপি রঙের বেলেপাথর। মন্দির ট্রাস্ট সূত্রে খবর, কর্নাটক থেকে এসেছে গ্রানাইট। মিরজাপুর থেকে এসেছে বেলেপাথর। এখানেই শেষ নয়। মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের কাজের জন্য খাস রাজস্থান থেকে এসেছে মার্বেল পাথর। রাজস্থানের বনশি পাহাড়পুর থেকে এক লক্ষ ঘন ফুট শ্বেতপাথর এসেছে অযোধ্যায়।
মন্দিরের গর্ভগৃহ আলো করে থাকবে রাজস্থানের মাকরানা পাহাড় থেকে আনা সাদা মার্বেল। রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের তরফে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
মন্দিরে ব্যবহার করা হবে বেলেপাথর, গ্রানাইটের মতো দামি পাথর।
এ ছাড়াও মন্দিরের গায়ে খোদাই করা হবে গোলাপি বেলেপাথর।
গর্ভগৃহে ব্যবহার করা হবে মাকরানা সাদা মার্বেল।
উৎপল নামে এক ইঞ্জিনিয়ার এনডি টিভিকে বলেছেন, ‘‘এই জায়গায় কাজ করতে পেরে গর্ব বোধ করছি।’’
ঠিক দু’বছর আগে অর্থাৎ, ২০২০ সালের ৫ অগস্ট শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট আয়োজিত রামমন্দিরের শিলান্যাস কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মন্দিরের ভূমিপূজন করে ৪০ কিলোগ্রাম ওজনের ইট গেঁথে মন্দিরের শিলান্যাস করেছিলেন মোদী।
সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, মন্দির নির্মাণের কাজ করছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো।
গোটা প্রক্রিয়া নজরদারির কাজে রয়েছে টাটা কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স।
মোট ১১০ একর জমিতে ছড়ানো মন্দির নির্মাণের জন্য ৯০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকা খরচের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। মন্দির চত্বরে থাকবে একটি জাদুঘর, একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং একটি আর্কাইভ।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, রামলালার মূল মন্দিরকে ঘিরে থাকবে আরও ছ’টি মন্দির। এই মন্দিরগুলো হল ব্রহ্মামন্দির, সূর্যমন্দির, গণেশমন্দির, শিবমন্দির, বিষ্ণুমন্দির এবং দুর্গামন্দির।
অযোধ্যার যে এলাকায় মন্দির তৈরির কাজ চলছে, সেখানকার মাটি তুলনায় নরম। তাই মন্দিরের ভিত্তি তৈরির সময় বাড়তি সতর্কতা নিতে হয়েছে। ঠিক এই কারণেই কংক্রিটের মূল ভিত্তির উপর পাথরের আস্তরণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই রামমন্দিরের গর্ভগৃহের দরজা ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়কাল রাজনৈতিক দিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।