২০২৪-এর জানুয়ারির মধ্যেই ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে অযোধ্যার রামমন্দির। নির্মীয়মাণ মন্দিরে রামলালার মূর্তি স্থাপন করার পর মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রামমন্দির ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই।
শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের তরফে মঙ্গলবার জানানো হয়, এখনও পর্যন্ত মন্দিরের অর্ধেক কাজই শেষ হয়ে গিয়েছে। যে গতিতে কাজ এগোচ্ছে, তাতে সন্তুষ্ট ট্রাস্ট বলেও জানিয়েছেন সদস্যরা।
ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত বলেন, ‘‘ভক্তদের দর্শনের জন্য ২০২৪-এর জানুয়ারি থেকেই মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হবে। তার আগে মূল কাজ রামলালার মূর্তি মূল মন্দিরে স্থাপন করা। মকর সংক্রান্তির দিন রামলালার মূর্তি স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
চম্পত জানিয়েছেন, আগামী বছর ডিসেম্বরের মধ্যে মন্দিরের প্রথম তল সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে যাবে। ২০২৪-এর ১৪ জানুয়ারি রামলালার মূর্তি স্থাপিত হবে মূল মন্দিরে।
এ জন্য খরচ কত হচ্ছে? চম্পত বলেন, ‘‘রামমন্দির তৈরির জন্য ১৮০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে মন্দির চত্বরে আরও একাধিক দেবদেবীর মূর্তি এবং মন্দির থাকবে।’’
২০২০ সালের ৫ অগস্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পর থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়ে যায় মন্দির নির্মাণের কাজ। জানানো হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতেই নির্মাণ কাজ করে মন্দিরের দরজা সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
অযোধ্যার রামমন্দিরের ভূমিপূজন করে ৪০ কিলোগ্রাম ওজনের ইট গেঁথে মন্দিরের শিলান্যাস করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
চলতি বছরের জুনে রামমন্দিরের গর্ভগৃহে প্রথম পাথরটি গাঁথেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ। ‘শিলাপূজন’ অনুষ্ঠানে আদিত্যনাথ বলেছিলেন, ‘‘৫০০ বছরের সংগ্রাম সফল হল। শীঘ্রই অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হবে।’’
মন্দিরের দেওয়ালে বসানো হবে রাজস্থানের গোলাপি রঙের বেলেপাথর। মন্দির ট্রাস্ট সূত্রে খবর, কর্নাটক থেকে এসেছে গ্রানাইট। মিরজাপুর থেকে এসেছে বেলেপাথর। এখানেই শেষ নয়। মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের কাজের জন্য খাস রাজস্থান থেকে এসেছে মার্বেল পাথর। রাজস্থানের বনশি পাহাড়পুর থেকে এক লক্ষ ঘন ফুট শ্বেতপাথর এসেছে অযোধ্যায়।
মন্দিরের গর্ভগৃহ আলো করে থাকবে রাজস্থানের মাকরানা পাহাড় থেকে আনা বিশেষ সাদা মার্বেল। রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের তরফে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
অযোধ্যার রামমন্দির নির্মাণের কাজ করছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। গোটা প্রক্রিয়া নজরদারির কাজে রয়েছে টাটা কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স। এ ছাড়াও একাধিক বিশ্ববিখ্যাত নির্মাণ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া চলছে নিরন্তর।
মোট ১১০ একর জমিতে ছড়ানো মন্দির নির্মাণের জন্য ৯০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকা খরচের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। মন্দির চত্বরে থাকবে একটি জাদুঘর, একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং একটি আর্কাইভ।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, রামলালার মূল মন্দিরকে ঘিরে থাকবে আরও ছ’টি মন্দির। এই মন্দিরগুলো হল ব্রহ্মামন্দির, সূর্যমন্দির, গণেশমন্দির, শিবমন্দির, বিষ্ণুমন্দির এবং দুর্গামন্দির।
২০২৪-এর লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগেই রামমন্দিরের গর্ভগৃহের দরজা ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করে দিলেন চম্পত। এই সময়কাল রাজনৈতিক দিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।