দিল্লি বিমানবন্দরের ভিতরও এ বার ছুটবে ট্রেন! গল্পকথা বা মশকরা নয়, এ একেবার সত্য কথা।
এই ট্রেনটির পোশাকি নাম এয়ার ট্রেন। তবে বাতাসে নয়, আর পাঁচটা ট্রেনের মতোই রেললাইন ধরে ছুটবে এই ট্রেন।
মাত্র ছ’কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে এই ট্রেনটি। যাত্রাপথে থামবে চারটি স্টেশনে। এই চারটি স্টেশনের নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
এই এয়ার ট্রেনের মাধ্যমেই বিমানবন্দরের একটি টার্মিনাল থেকে অন্য টার্মিনালে পৌঁছে যাবেন যাত্রীরা। অর্থাৎ, টার্মিনালগুলির মধ্যে সংযোগ রক্ষার কাজ করবে ট্রেনটি।
এত দিন বিমানবন্দরের এক টার্মিনাল থেকে অন্য টার্মিনালে পৌঁছতে যাত্রীদের বহু সময় নষ্ট হত। এ বার মসৃণ উপায়েই টার্মিনাল বদল করতে পারবেন যাত্রীরা।
দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই এই এয়ার ট্রেন চালুর বিষয়ে পরিকল্পনা নেওয়া হলেও আপাতত দিল্লির ইন্ডিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই চালু হতে পারে এই বিশেষ ট্রেন।
এখনও পর্যন্ত ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়ার সম্ভাব্য সময় জানা না গেলেও প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, চলতি বছরেই শুরু হতে পারে এয়ার ট্রেনের পরিকাঠামো নির্মাণ সংক্রান্ত কাজ।
বিমানবন্দরে এয়ার ট্রেন চালু করতে চেয়ে ইতিমধ্যেই অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকে প্রস্তাব পাঠিয়েছে দিল্লি বিমানবন্দরের পরিচালন সংস্থা দিল্লি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট লিমিটেড (ডায়াল)।
যদিও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের তরফে এখনও এই প্রস্তাবের বিষয়ে মুখ খোলা হয়নি। সূত্রের খবর, বিমান মন্ত্রক সবুজ সঙ্কেত দিলেই দ্রুত গতিতে শুরু হবে এয়ার ট্রেনের স্টেশন এবং লাইন বসাবার কাজ।
দিল্লি বিমানবন্দরে এয়ার ট্রেন টার্মিনাল ওয়ান থেকে যাবে টার্মিনাল ৩ স্টেশনে। মাঝে পড়়বে অ্যারোসিটি এবং কার্গো টার্মিনাল।
এয়ার ট্রেনের এই প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত খরচ ধরা হচ্ছে ৩,৪০০ কোটি টাকা। তবে কোনও সরকারি সংস্থা কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই ব্যয়ভার বহন করবে না।
যাত্রীদের কাছ থেকে টিকিটের ভাড়া বাবদ যে টাকা নেওয়া হবে, তা দিয়েই মেটানো হবে পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য ব্যয় হওয়া টাকা। তবে প্রকল্প চালুর পরে কত দিনে সেই টাকা মেটানো যাবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
দীর্ঘ দিন ধরেই দিল্লি বিমানবন্দরে এয়ার ট্রেন চালু করা নিয়ে চর্চা চলছিল। প্রশাসনিক স্তরে বিষয়টি এখন গতি পেয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
সে ক্ষেত্রে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই এয়ার ট্রেনের কাজ শুরু হয়ে যেতে পারে।
ভারতে প্রথম হলেও বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতে এয়ার ট্রেন বহু দিন ধরেই চালু রয়েছে। সেখানেও বিমানবন্দরের এক টার্মিনাল থেকে অন্য টার্মিনালে পৌঁছতে ব্যবহৃত হয় এই ট্রেন।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে অবশ্য এখনও পর্যন্ত এয়ার ট্রেনের জন্য যাত্রীদের কোনও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয় না। বিমানভাড়া কিংবা বিমানবন্দরের পরিষেবা শুল্কের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত থাকে ভাড়ার অঙ্কটি। এয়ারপোর্টের ভিতরে চলে বলেই এই ট্রেনকে এয়ার ট্রেন বলা হয়।