স্বামীই তাঁর কাছে ছিলেন ‘একমেবাদ্বিতীয়ম’। বিয়ের আগে বা পরে অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল না। কারও সঙ্গে রাতও কাটাননি। কিন্তু সম্প্রতি গুলিয়ে গিয়েছে সম্পর্কের সব হিসাব।
কথা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার কেট হার্ভেকে নিয়ে। জীবনের ইনিংসে ‘হাফ সেঞ্চুরি’ করে ফেলেছেন তিনি। অসুখী সম্পর্কে না থেকে সটান সংসার ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। বিচ্ছেদের পর যেন জীবনকে নতুন করে উপভোগ করছেন।
২৫ বছর বয়সে বিয়ে হয় কেটের। দীর্ঘ দিন স্বামীর ঘর করেছেন। কেট ছিলেন আক্ষরিক অর্থেই ‘পতিব্রতা’। বিয়ের আগে তো নয়, স্বামী ছাড়া অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়নি কখনও।
কেট পেশায় শিল্পপতি। তাঁর নিজস্ব ব্যবসা রয়েছে। বইও লেখেন। এ ছাড়া, মাঝেমধ্যে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি পরিচিত মুখ।
মেলবোর্ন শহরে স্বামী এবং তিন সন্তানকে নিয়ে ভরা সংসার ছিল কেটের। কিন্তু করোনা অতিমারির সময় তাঁর জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। আড়াই বছর যন্ত্রণা সহ্য করার পর বিচ্ছেদের পথ বেছে নেন কেট।
অভিযোগ, কেটের স্বামী করোনা অতিমারি এবং লকডাউনের সময় অন্য নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। গোপন সেই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে গিয়েছিলেন ‘পতিব্রতা’ কেট।
পরকীয়া ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরেই বিবাহবিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন কেট। সন্তানদের মানুষ করার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় আড়াই বছর ধরে তাঁকে মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। তবে পুরনো সেই জীবনকে বিদায় জানিয়ে নতুন ইনিংসও শুরু করে ফেলেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের বিচ্ছেদ পরবর্তী একাধিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন কেট। নিজেই তিনি জানিয়েছেন, বিচ্ছেদের গত বছরের শুরুর দিক থেকে বহু পুরুষের সঙ্গে রাত কাটিয়েছেন।
কখনও ডেটিং অ্যাপ, কখনও ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে পুরুষ সঙ্গীদের খুঁজে নিয়েছেন কেট। এক সময় যে নারী স্বামী ছাড়া আর কাউকে চিনতেন না, অন্য কারও দিকে ফিরেও তাকাননি, তিনিই এখন শয্যাসঙ্গীর সংখ্যা গুনে শেষ করতে পারছেন না!
বিবাহিত সম্পর্কের বাঁধন ছিন্ন করার পরে এই নতুন জীবনে যেন যৌনতার খেলায় মেতে উঠেছেন কেট। তা উপভোগও করছেন ভীষণ ভাবে। তিনি জানান, গত জানুয়ারি থেকে কমপক্ষে ১২ জন পুরুষের সঙ্গে তিনি রাত কাটিয়ে ফেলেছেন। কেটের কথায়, ‘‘আমি আমার পুরুষ বন্ধু এবং শয্যাসঙ্গীদের সংখ্যা গোনা থামিয়ে দিয়েছি। হিসাব ঠিক রাখতে পারছিলাম না।’’
কোন বয়সের পুরুষের পছন্দ করেন কেট? কারাই বা শয্যায় তাঁর চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য উপযুক্ত? প্রকাশ্যে সে কথাও রাখঢাক না করেই জানিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলীয় প্রৌঢ়া। জানান, মূলত ৩৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সি ছেলেদের সঙ্গে রাত কাটাতেই তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন।
নিজের থেকে বয়সে ছোট পুরুষদের রাতের সঙ্গী হিসাবে বেছে নিয়েছেন কেট। তাঁর শয্যাসঙ্গীদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি যুবকের বয়স ২৮ বছর। সবচেয়ে বেশি ৪৪ বছর বয়সি পুরুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছেন তিনি।
কেট জানান, যৌনতা, যৌন সম্পর্ককে এর আগে কখনওই তিনি তেমন গুরুত্ব দেননি। স্বামীকে নিয়ে সুখেই ছিলেন। স্বামীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বাইরে আর কিছু ভাবতেন না কখনও। কিন্তু জীবনের এই দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি জগৎকে আবিষ্কার করতে চান। আরও পুরুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতে চান।
কেটের দাবি, নানা রকম সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে অনেক নতুন কিছু তিনি শিখতে পেরেছেন। সঙ্গমের পরিতৃপ্তি নতুন করে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। কিন্তু কোনও এক জন ব্যক্তির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কে এই নতুন আবিষ্কার, নতুন অনুভূতির উপলব্ধি সম্ভব হত না।
দীর্ঘমেয়াদি স্থায়ী কোনও সম্পর্কেই আর আগ্রহী নন বলে জানিয়েছেন কেট। যত দিন তিনি শারীরিক ভাবে সক্ষম থাকবেন, তত দিন এ ভাবেই নানা পুরুষের সঙ্গে যৌনতার খেলায় মেতে থাকবেন।