চলতি বছর দেশের নানা প্রান্তেই শীতের স্বাভাবিক ধাঁচের মধ্যে রীতিমতো তারতম্য চোখে পড়ছে। বাংলায় এ বার শীতকাল জুড়ে প্রায় ঠান্ডা পড়েইনি। একই ভাবে জম্মু-কাশ্মীর বা উত্তরাখণ্ডেও এই বছর চেনা শীতের ছবিটা অনেক আলাদা। পর্যটনের উপর বিশেষ চাপ পড়ছে এই কারণে।
প্রতি বছর উত্তরাখণ্ড বা কাশ্মীরে শীতের এই সময়টা তুষারপাতের টানে ভিড় জমান অগুন্তি পর্যটক, এ বার প্রকৃতি তাঁদের হতাশ করছে।
শীতের মরসুমে যে বরফঢাকা উত্তরাখণ্ডের পাহাড় দেখে অভ্যস্ত পর্যটকেরা, এ বছর যেন পুরো ছবিটাই বদলে গিয়েছে। কোথায় বরফ! তুষারপাতই হচ্ছে না ঠিক মতো।
ফলে উত্তরাখণ্ডের আকর্ষণীয় পর্যটনস্থল অওলি থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন পর্যটকেরাও। ফলে পর্যটন ব্যবসাতেও বেশ প্রভাব পড়ছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
উত্তরাখণ্ডের অওলি দেশের ‘মিনি সুইৎজ়ারল্যান্ড’ নামেও পর্যটকদের কাছে পরিচিত।
এই সময়ে অওলি পুরো বরফে ঢাকা থাকে। রাস্তাঘাট, পাহাড় যে দিকে চোখ ফেরানো যায় শুধু সাদা আর সাদা।
কিন্তু সেই শ্বেতশুভ্র দৃশ্য এ বারও উধাও। চার দিকে শুধুই ধূসর। পর্যটকদের সামনে নিজের রূপ তুলে ধরতে না পেরে অওলিও কেমন যেন ম্রিয়মান।
মূলত স্কি করার টানেই উত্তরাখণ্ডের এই শৈলশহরে ছুটে আসেন পর্যটকেরা। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর শেষ তুষারপাত হয়েছিল।
সেই তুষারপাতের টানে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছিলেন। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিপুল সংখ্যায় পর্যটক এসেছেন অওলিতে।
কিন্তু সেই তুষার উধাও হতেই পর্যটকদের ভিড়ও কমতে শুরু করে। স্থানীয়রা আরও জানিয়েছেন, নতুন বছরের শুরু থেকে অওলিতে নতুন করে আর তুষারপাত হয়নি।
ফলে যে পাহাড়, গাছগাছালি, রাস্তাঘাট এই সময় বরফের চাদরে ঢাকা থাকত, জানুয়ারির শুরু থেকে তা সম্পূর্ণ উধাও।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি চলবে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত। তবে পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও বৃহস্পতিবার খুবই হালকা তুষারপাত হতে পারে।
দেহরাদূনে আঞ্চলিক আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা বিক্রম সিংহ জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে তুষারপাতের পরিমাণ কমছে। শুধু তাই-ই নয়, যে বিপুল মাত্রায় তুষারপাত হত, তাতেও বদল এসেছে।
আগে যত দিন শীত এবং কনকনে ঠান্ডা থাকত, এখন তা-ও দেখা যাচ্ছে না। ঠান্ডার দিনের সংখ্যা ক্রমশ কমছে।
আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের ফলে সামগ্রিক ভাবে প্রভাব পড়ছে তুষারপাত এবং শীতের মরসুমের উপরও।