গত কয়েক বছরে বাংলার শাসক দলের রাজনৈতিক নেতাদের সম্পত্তি বেড়েছে। এই নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। এ বার বিরোধী দলের জাতীয় থেকে রাজ্যস্তরে নেতাদের সম্পত্তি খতিয়ে দেখার আবেদন জানিয়ে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা।
নতুন মামলায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, রাজনাথ সিংহ, ধর্মেন্দ্র প্রধানের নাম রয়েছে। নাম রয়েছে বাংলার বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর। এই নেতাদের কার কত সম্পত্তি? আনন্দবাজার অনলাইন দেখেছে সর্বশেষ ভোটে নির্বাচন কমিশনে তাঁদের জমা দেওয়া হলফনামা। সেখানেই উল্লেখ রয়েছে ঘোষিত স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তির মোট পরিমাণ।
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ তথা সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার নামও রয়েছে তালিকায়। ২০১৯ সালে রাজ্যসভার ভোটে মনোনয়ন পেশ করার সময় হলফনামায় নিজের সম্পত্তি পরিমাণ জানিয়েছিলেন তিনি। দেখা গিয়েছিল, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতির ঘোষিত সম্পত্তির পরিমাণ তিন কোটি ৪৯ লক্ষ ৮৮ হাজার ৫০২ টাকা।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং যে মনোনয়ন পেশ করেছিলেন, তাতে দেখা গিয়েছিল তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ পাঁচ কোটি ১৪ লক্ষ ৯২ হাজার ৭০৯ টাকা।
২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সে সময় যে হলমনামা পেশ করেছিলেন তিনি, তাতে দেখা গিয়েছিল, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ তিন কোটি ২২ লক্ষ ৭৬ হাজার ৩৫৫ টাকা।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তাতে দেখা গিয়েছিল, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ আট কোটি ৮৩ লক্ষ ৯২ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা।
২০১৯ সালে রাজ্যসভা ভোটে প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন পেশ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। সে সময় হলফনামায় তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ তিন কোটি ৬০ লক্ষ ২১ হাজার ২১৪ টাকা।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। সে সময় হলফনামায় জানিয়েছিলেন, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৫৬ লক্ষ ৫২ হাজার ৪২০ টাকা।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার। তখন যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন, তাতে দেখা গিয়েছে, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ এক কোটি ৯৭ লক্ষ ৯৯ হাজার ৪৪০ টাকা।
সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলায় নাম জড়িয়েছে কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে পেশ করা মনোনয়নের হলফনামায় দেখা গিয়েছে, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ তিন কোটি ৩৯ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬৫০ টাকা।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সে সময় তাঁর পেশ করা হলফনামায় দেখা গিয়েছে, সম্পত্তির পরিমাণ এক কোটি পাঁচ লক্ষ ৫২ হাজার ৭৪৯ টাকা।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর পেশ করা হলফনামায় দেখা গিয়েছিল, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ তিন কোটি ৭৬ লক্ষ ৮৭ হাজার ৮৬৭ টাকা।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পেশ করা মনোনয়নে দেখা গিয়েছে, বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মোট সম্পত্তির পরিমাণ চার কোটি ৫০ লক্ষ ৭১ হাজার ৯১২ টাকা।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শেষ বার ভোটে লড়েছিলেন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তখন পেশ করা মনোনয়নে দেখা গিয়েছে, বিজেপি সাংসদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪৫ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৬২ টাকা।
২০১৯ সালের হলফনামা অনুযায়ী, বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮৬ লক্ষ ৫৬ হাজার ৭৭৭ টাকা।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে হলফনামা পেশ করেন বিজেপির মনোজ কুমার ওরাওঁ, সেখানে দেখা যায়, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২৬ লক্ষ ৯৬ হাজার ২৬১ টাকা।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে রাজারহাট গোপালপুরে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তখন পেশ করা হলফনামায় জানা গিয়েছে, শমীকের মোট সম্পত্তির পরিমাণ আট লক্ষ এক হাজার ৭৯৮ টাকা।
২০২১ সালে আসানসোল দক্ষিণে প্রার্থী হয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল। ওই আসনে বিজেপির টিকিটে জিতেওছিলেন তিনি। তাঁর পেশ করা হলফনামায় দেখা গিয়েছে, মোট সম্পত্তির পরিমাণ দু’কোটি ৩৯ লক্ষ ৬৪ হাজার ২৫৭ টাকা।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে পেশ করা হলফনামায় জানা গিয়েছে, বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার মোট সম্পত্তির পরিমাণ এক কোটি ৩৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৯৮৬ টাকা।
কোচবিহারের নাটাবাড়ি কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ এক কোটি ৪০ লক্ষ পাঁচ হাজার ৪২৪ টাকা। ২০২১ সালে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিলেন তিনি।
হুগলির চাঁপদানিতে ২০২১ সালে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন আবদুল মান্নান। হলফনামা থেকে জানা গিয়েছে, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২৯ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৯১ টাকা।
সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় নাম জড়িয়েছে জিতেন তিওয়ারির। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে পেশ করা হলফনামায় জানা গিয়েছে, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮৬ লক্ষ ৯৬ হাজার ৬৮৪ টাকা।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮৭ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩৩৭ টাকা। বলছে ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে তাঁর পেশ করা হলফনামা।