ইতিপূর্বে একাধিক মহিলার সঙ্গে প্রেম, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে নাম জড়িয়েছে ধনকুবের ইলন মাস্কের। একাধিক নারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের নানা গুঞ্জন ও বিতর্কের কথা কারও অজানা নয়। শুধু সম্পর্কে থাকাই নয়, সেই সব সম্পর্কে থাকাকালীন বার বার বাবাও হয়েছেন মাস্ক।
১১ জন সন্তান ও প্রাক্তন স্ত্রী, প্রেমিকাদের নিয়ে মাস্কের জীবন বর্ণময়। নানা সময়ে নানা বিষয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে চলে আসেন। বহু সিদ্ধান্তের জন্য বার বার সমালোচিত হয়েছেন মাস্ক। একাধিক বার তাঁর জীবনে এসেছে উথালপাথাল প্রেম। ব্যক্তিগত ও কর্মজীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে কাহিনি।
ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত জীবন আবার খবরের শিরোনামে। মাস্কের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক নিয়ে এ বার বোমা ফাটালেন নেটপ্রভাবী এবং লেখিকা অ্যাশলে সেন্ট ক্লেয়ার। দাবি করলেন, তাঁর সন্তানের পিতা নাকি মাস্ক। এক্সে একটি পোস্টে সেন্ট ক্লেয়ার ঘোষণা করেছেন যে মাস্ক তাঁর পাঁচ মাস বয়সি সন্তানের বাবা।
ক্লেয়ারের এই দাবির বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি মাস্ক। টেসলা এবং স্পেসএক্সের সিইও-র সঙ্গে ক্লেয়ারের সন্তানের সম্পর্ক নিয়ে সমাজমাধ্যম ও ট্যাবলয়েডে প্রবল কানাঘুষো শুরু হয়েছে। সুন্দরী ও লাস্যময়ী এই তরুণীর দাবি নিয়ে বিশ্ব জুড়ে চলছে ব্যাপক চর্চা।
জন্মের পর এত দিন সন্তানের পরিচয় গোপন রাখার কারণও জানিয়েছেন অ্যাশলে। নিজের পোস্টে সেন্ট ক্লেয়ার লিখেছেন, ‘‘সন্তানের পরিচয়ের গোপনীয়তা রক্ষা করতে চাইতাম। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদমাধ্যমগুলি যা শুরু করেছে, তাতে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে এতে কোনও লাভ নেই।’’
সেই পোস্টে ক্লেয়ার সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে জানান, ‘‘স্বাভাবিক, নিরাপদ পরিবেশে সন্তানকে বড় করতে চাই। সংবাদমাধ্যমের কাছে অনুরোধ, সন্তানের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারকে সম্মান করুন।’’
রক্ষণশীল রাজনৈতিক মনোভাবের জন্য বিশেষ ভাবে পরিচিত ৩১ বছর বয়সি ক্লেয়ার। রক্ষণশীল মতাদর্শের প্রতি তাঁর সমর্থন বরাবরই। প্রায়শই বিশিষ্ট রক্ষণশীল ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে হাজির হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। মাঝে তিনি এই অনুষ্ঠানগুলি থেকে সরে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর সম্প্রতি আবার সমাজমাধ্যমে সক্রিয় হয়েছেন ক্লেয়ার।
ক্লেয়ারের দাবির পর এক ভক্ত তাঁকে সরাসরি এক্সে প্রশ্ন করায় হাসির ইমোজি দিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্বয়ং এলন মাস্ক। যদি সেন্ট ক্লেয়ারের দাবি সত্য হয়, তা হলে চারটি সম্পর্ক থেকে ১৩তম সন্তানের বাবা হলেন টেসলা কর্ণধার।
বিশ্বের সেরা ধনী তিনি। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও চোখধাঁধানো। ইলনের দুই স্ত্রী ও প্রেমিকা ছাড়া আরও কত জনের সঙ্গে তিনি সম্পর্কে জড়িয়েছেন তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, স্পেসএক্সের অন্তত দু’জন কর্মীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন প্রতিষ্ঠানের সিইও মাস্ক।
বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা কমানোর যে প্রচার চলছে, তার বিরুদ্ধে বরাবর সরব হতে দেখা গিয়েছে মাস্ককে। তিনি বিশ্বাস করেন যে, সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য আরও সন্তানধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মাস্কের পরামর্শ, উচ্চ আইকিউ সম্পন্ন ব্যক্তিদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত। তিনি মনে করেন, বিশ্বে উচ্চ আইকিউ সম্পন্ন ব্যক্তির সংখ্যা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্কট মোকাবিলা করতে উদ্যোগী হতে হবে উচ্চ আইকিউ সম্পন্ন ব্যক্তিদেরই। একমাত্র বেশি সন্তানধারণই সঙ্কট মোকাবিলার অস্ত্র হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ইলন দু’বার বিয়ে করেছেন। দু’বার বিচ্ছেদের পর ২০২১ সাল থেকে তাঁর সঙ্গিনী শিভন জ়িলিস। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর তারকাখচিত পার্টিতে শিভনকে নিয়ে হাজির হন মাস্ক।
জ়িলিস মাস্কের ব্রেন চিপ স্টার্টআপ নিউরালিঙ্কের এক জন শীর্ষ পদাধিকারী এবং ওপেনএআই-এর উপদেষ্টা। ২০২১ সাল থেকে শিভনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান ইলন। ২০২১ সালের নভেম্বরে মাস্ক এবং জ়িলিসের যমজ সন্তানের জন্ম হয়। ২০২৪ সালে আরও একটি সন্তানের জন্ম দেন শিভন। সেই সন্তানের পরিচয় অবশ্য গোপনই রেখেছেন তারকা জুটি।
২০০২ সালে প্রথম পিতৃত্বের সুখ লাভ করেন ইলন। প্রথম স্ত্রী জাস্টিন উইলসনের পাঁচ সন্তান রয়েছে। ২০২৪ সালেও ১২তম সন্তানের বাবা হন তিনি।
২২ বছরে মোট ১২ জন সন্তানের বাবা হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে ইলনের। তবে দুঃখের বিষয়, ইলনের প্রথম সন্তান নেভাদা আলেকজ়ান্ডার জন্মের ১০ সপ্তাহের মধ্যেই মারা যায়। ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে মাস্ক তিন সন্তানের বাবা হন।