আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আয়ার্স থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সান্তা ফে প্রদেশের শহর রোজ়ারিয়ো। সেখানেই জন্ম হয়েছিল ফুটবলের বরপুত্র লিয়োনেল মেসির।
রবিবার রাতের পর কাতার বিশ্বকাপের সোনালি আলোর তরঙ্গ ছুঁয়েছে মেসির জন্মভূমি সেই রোজ়াররিয়োকে।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে রবিবার মেসি লিখেছেন রূপকথা। যার নায়ক তিনি নিজেই।
স্বপ্নের সেই নায়ককে ঘিরে বিশ্ব জুড়ে উচ্ছ্বাসের মাঝেই ভক্তদের আলোচনায় উঠে আসছে ফুটবল মাঠের বাইরেও মেসির উজ্জ্বল উপস্থিতির কথা।
মাঠে নেমে শুধু গোল দেওয়া নয় সারা বিশ্ব জুড়ে সামাজিক নানা কাজে অর্থ দান করার ক্ষেত্রেও খ্যাতি রয়েছে প্যারিস সঁ জরমেঁর এই তারকার।
করোনাকালে স্পেনের কাতালুনিয়ার একটি হাসপাতাল এবং আর্জেন্টিনার একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে মোট ১.১ মিলিয়ন ডলার দান করেছিলেন মেসি। যা ভারতীয় মুদ্রায় ৯ কোটি টাকারও বেশি।
২০১৯ সালে কেনিয়ায় ইউনিসেফের একটি প্রকল্পে ২ লক্ষ ১৮ হাজার ডলার দান করেছিলেন মেসি। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা।
২০১০ সালে ডেভিড বেকহ্যাম এবং শাকিরার সঙ্গে ইউনিসেফের ‘গুডউইল অ্যাম্বাসডর’ও ছিলেন মেসি।
তার পর থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দারিদ্র এবং মহামারি আক্রান্ত বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার জন্য অর্থ দান করে আসছেন মেসি।
মেসি তাঁর ছেলে থিয়াগোর প্রথম জন্মদিন থেকে শুরু করেছেন ‘সেলিব্রেট লাইফ’ প্রকল্প। ওই প্রকল্প বিশ্ব জুড়ে শিশুমৃত্যুর হার কমাতে সচেতনতা চালাচ্ছে।
তাঁর স্কুল জীবনের ক্লাব ‘নিউয়েল’স ওল্ড বয়েজ়’-এ একটি জিমন্যাসিয়াম তৈরি করে দিয়েছেন মেসি। পাশাপাশি, ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত রোজারিওর ‘সার্মিয়েন্টো’কে চালানোর জন্যও অর্থও দান করেছিলেন তিনি।
২০১৯ সাল থেকে ‘ব্লাড ক্যানসার’-এর চিকিৎসার উন্নতির জন্য একটি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে মেসির নিজস্ব সংস্থা লিয়ো মেসি ফাউন্ডেশন।
করোনাপর্বেও ‘অধিনায়ক’-এর ভূমিকায় দেখা গিয়েছে মেসিকে। ওই সময়ে বার্সেলোনায় ছিলেন তিনি।
অতিমারি পর্বে ক্লাবের ক্ষতি বাঁচানোর জন্য ৭০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা কেটে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেসি এবং তাঁর সতীর্থরা। যাতে অখেলোয়াড় কর্মীদের টাকা দিতে পারে ক্লাব। কারণ, করোনাকালে দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল লা লিগা।
গৃহযুদ্ধপীড়িত সিরিয়ার শিশুদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন মেসি। দামাস্কাসের গ্রামীণ এলাকায় বেশ কয়েকটি স্কুল তৈরি করেছে ইউনিসেফ। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির পিছনেও রয়েছে মেসির নিজস্ব সংস্থা লিয়ো মেসি ফাউন্ডেশনের অবদান।
ফুটবল মাঠে মেসি আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। আবার বিভিন্ন সময়ে সেই অধিনায়ককেই দেখা গিয়েছে ‘নায়ক’-এর ভূমিকায়।