অভিনেত্রী অর্চনাপূরণ সিংহ এবং অভিনেতা-প্রযোজক পরমীত সেঠী বিয়ে করেন ১৯৯২ সালে। তাঁদের বিবাহিত জীবন নিয়ে এখনও টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে চর্চা হয়।
তাঁদের ভালবাসার গল্পও ইন্ডাস্ট্রিতে বহুল চর্চিত। কিন্তু তাঁদের বিয়ের খবর লুকিয়ে রাখতে হয়েছিল প্রায় চার বছর।
‘দ্য কপিল শর্মা শো’-তে সেই ঘটনার কথা খোলসা করেছিলেন অর্চনা। শো-য়ে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্বামী পরমীতও।
পরমীতের মা-বাবা শুরুতে তাঁদের সম্পর্ক মেনে নেননি। কিন্তু প্রেয়সীর হাত ছাড়তে রাজি ছিলেন না পরমীত।
পরিবারের অমতেই বয়সে সাত বছরের বড় অর্চনাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন পরমীত। এক দিনের মধ্যেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দু’জনেই। পরমীত বলেন, ‘‘রাত ১১টার সময় আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। রাত ১২ টার মধ্যে আমরা পুরোহিতও খুঁজে পেয়ে যাই!’’
পরমীত আরও বলেন, ‘‘পুরোহিত প্রথমেই জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমরা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি কি না। তার পর জিজ্ঞেস করেছিলেন, পাত্রী প্রাপ্তবয়স্ক কি না।’
সব কিছু জেনে নিশ্চিত হওয়ার পর পুরোহিত তাঁদের দু’জনকে পরের দিনের লগ্নে বিবাহ করার কথা বলেন। সকাল ১১টায় তাঁরা দু’জনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।
অর্চনা জানান, বিয়ের দিন সইফ আলি খানের ডেবিউ ছবি ‘পরম্পরার’ শ্যুটিং করছিলেন। আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিয়ে করতে চলেছেন, সে কথা সেটেও কাউকে ঘুণাক্ষরে টের পেতে দেননি অর্চনা।
বিয়ে করার সময়ও তাঁর হেয়ার ড্রেসারের ফোন এসেছিল। কিন্তু সেই মুহূর্তেও মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন অভিনেত্রী।
মজার ছলেই অর্চনা বলেন, সেই সময় কোনও সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না বলে তাঁরা এত বড় একটা বিষয় সবার চোখের আড়ালে রাখতে পেরেছিলেন।
বলিউডে নিজের অভিনয়ের কেরিয়ার টিকিয়ে রাখতে মুখ বন্ধ করে রেখেছিলেন অর্চনা। অর্চনা বলেন, ‘‘আমরা দু’জনেই বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরমীত আমার কেরিয়ারে কোনও ক্ষতি চায়নি। তাই দু’জনেই মুখে কুলুপ এঁটে ছিলাম।’’
অর্চনা আরও বলেন, ‘‘পরমীতের বাড়ির লোক কোনও ভাবেই আমাকে মেনে নিতে চাইছিলেন না। কারণ, প্রথমত, আমি পরমীতের চেয়ে প্রায় সাত বছরের বড়। দ্বিতীয়ত, অভিনেত্রী।’’
কিন্তু একটা সময় পর দুই পরিবারে লোকই তাঁদের বিয়ে মেনে নেন।
তাঁদের বিয়ের ব্যাপারে এক জ্যোতিষীকে হাত দেখিয়েছিলেন অর্চনা। সেই জ্যোতিষী অর্চনাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তাঁদের বিবাহজীবন ঠিকঠাক চলছে কি না।
অর্চনার উত্তর শোনার পর জ্যোতিষী বলেন, কয়েক বছর আগে হলে তিনি এই বিয়েতে ‘না’ করতেন।
১৯৯২ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন পরমীত এবং অর্চনা। বিয়ের আগেই বলিউডে নিজের জন্য জায়গা করে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ ছবিতে অভিনয় করে নজর কাড়েন পরমীতও।
তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই দম্পতিকে। ভালবাসা, কাজ, খুনসুটি এবং দুই ছেলেকে নিয়ে নিটোল সংসার তৈরি করেছেন তাঁরা।