খবরটা ফাঁস করে দিয়েছেন বন্ধুরাই। জোট বেঁধেছেন অনিল অম্বানী পরিবারের এক সদস্য। রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান অনিল অম্বানীর পরিবারের কাছে সেটা নতুন বিষয় কি? দেশের অন্যতম প্রধান শিল্পপতির পরিবারে এমন তো হয়েই থাকে। তবে এ জোট ব্যবসায়িক নয়!
খবরটা শোনামাত্রই হইচই শুরু হয়েছে নেটমাধ্যমে। দীর্ঘ দিনের বান্ধবী কৃষ্ণা শাহকে পাকা কথা দিয়েছেন অনিল-পুত্র জয় আনমোল অম্বানী। তবে কি শীঘ্রই বিয়ের সানাইয়ের সুর শোনা যাবে? যদিও এ নিয়ে জনসমক্ষে মুখ খোলেননি পরিবারের সদস্যরা। তবে তাঁদের পরিবারে যে নতুন জুটি হয়েছে, তা জানা গিয়েছে ইনস্টাগ্রাম থেকে। নিমেষে তা ভাইরাল হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কবে বিয়ে করছেন জয়-কৃষ্ণা?
অনিলের দাদা মুকেশ অম্বানীর পরিবারে বিয়ের সানাই শোনা গিয়েছিল সেই ২০১৮ সালে। সে বছরের ১৮ ডিসেম্বর বিয়ে করেছিলেন ইশা অম্বানী। মুকেশ এবং নীতা অম্বানীর মেয়ে ইশার সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করেছিলেন আনন্দ পিরামল। তার পর থেকে জোট বাঁধা বলতে শুধুই ব্যবসায়িক... ।
অনিলের বড় ছেলে জয়ের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব কৃষ্ণার। তবে প্রথাগত ভাবে তা আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে অতি সম্প্রতি। করোনাকালের বিমর্ষ পরিবেশকে তুচ্ছ করেই নতুন জীবনের পথে এগনোর কথা ভেবেছেন জয় এবং কৃষ্ণা।
জয় এবং কৃষ্ণা যে একে অপরের সঙ্গে ডেটিং করছেন, তা টের পায়নি দেশের তাবড় সংবাদমাধ্যমও। ১২ ডিসেম্বর সে ‘গোপন’ কথাটি ফাঁস করে দেন তাঁদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই। সে দিনটি ছিল জয়ের ৩০তম জন্মদিন। সে দিন নয়া জুটিকে ক্যামেরাবন্দি করে তা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন তাঁদের বন্ধু আরমান জৈন, সোনম কপূর এবং অন্তরা মোতিওয়ালা।
ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জয় এবং কৃষ্ণার হাতে ‘এনগেজমেন্ট রিং’ দেখে অনেকেই প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন, কবে বিয়ে? অনেকে আবার ইশার বিয়ের প্রসঙ্গও তুলে এনেছেন। আচ্ছা, কোথায় বিয়ের অনুষ্ঠান হবে? ইশার মতোই জাঁকজমক করে বিয়ে করবেন? কারা আমন্ত্রিত হবেন? হাজারো প্রশ্ন ধেয়ে এসেছে ইনস্টাগ্রামে।
কবে বাগদান পর্ব সারলেন অম্বানী পরিবারের নয়া জুটি? তা অবশ্য খোলসা করেননি পরিবারের ঘনিষ্ঠরা। তবে তাতে যে কাছের মানুষরাই ছিলেন সে কথা জানিয়েছেন তাঁরা।
জয়ের বন্ধু আরমানই ১২ ডিসেম্বর আংটি পরা অবস্থায় জুটির ছবি তুলেছিলেন। তার পর ইনস্টাগ্রাম ‘স্টোরি’-তে তা শেয়ার করেন। তাতে দেখা গিয়েছে, দু’জনেই নীলাভ পোশাকে। হালকা নীল রঙের উপর কাজ করা ঢিলেঢালা টপ পরে কৃষ্ণা। তাঁকে ডান হাতে আলগোছে জড়িয়ে জয়। তাঁর পরনে রিপ্ড জিনস এবং চাইনিজ কাটের ছোট-কুর্তা। দু’জনেরই বাঁ-হাতের অনামিকায় সেই ‘মূল্যবান’ আংটি।
কৃষ্ণাদের ছবি তুলেছেন অভিনেতা মোহিত মারওয়ার স্ত্রী তথা জয়ের বন্ধু অন্তরাও। এ ব্যাপারে সোনম কপূরও পিছিয়ে নেই।
আমজনতার কাছে এখনও বেশ অপরিচিত জয়ের হবু জীবনসঙ্গী কৃষ্ণা। নেটমাধ্যমে তাঁর সম্পর্কে লোকজনের কৌতূহলও কম নয়।
তেমন একটা শিরোনামে না এলেও কৃষ্ণার পেশাদার জীবন কম আকর্ষণীয় নয়। মুম্বইয়ে জন্ম। সে শহরেই বেড়ে ওঠা। তবে সমাজকর্মী হিসেবে বেশি শোরগোল না করেই একাধিক ক্ষেত্রে নিজের কাজ করে চলেছেন তিনি।
দেশে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে পাড়ি দিয়েছিলেন কৃষ্ণা। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স থেকে সোশ্যাল পলিসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর উপর ডিগ্রি। এ ছাড়া, আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিক্যাল ইকোনমি নিয়েও পড়াশোনা করেছেন তিনি।
প্রথাগত ভাবে উচ্চশিক্ষার শেষে অ্যাকসেন্চার-এর মতো বহুজাতিক সংস্থার ব্রিটেনের শাখায় কাজ শুরু করেন কৃষ্ণা। তবে বিদেশে কাজ করলেও নিজের মাটিতে কিছু করে দেখানোর ইচ্ছা ছিল।
দেশে ফিরে মানসিক স্বাস্থ্য-সহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কাজ করা শুরু করেন কৃষ্ণা। নিজের উদ্যোগেই খোলেন সংস্থা। করোনাকালে শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও যে অটুট রাখা প্রয়োজন, তা নিয়ে সচেতনার প্রসারেও মন দেন তিনি। তাঁদের যে পরিচর্যার প্রয়োজন, সে নিয়ে #লভনটফিয়ার নামে একটি প্রচারও শুরু করে কৃষ্ণা। বিশ্বের বিভিন্ন মঞ্চেই তা প্রশংসা কুড়িয়েছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষজনকে একই ছাতার তলায় আনতে একটি সংস্থাও শুরু করেছেন কৃষ্ণা। ‘ডাইসকো’ নামের সেই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেও নাম ছড়াচ্ছে কৃষ্ণার। তিনি জানিয়েছেন, ‘আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংযোগ করা ছাড়াও সৃজনমূলক কাজেও যুক্ত’ তাঁর ‘ডাইসকো’!