ফি শুক্রবার বক্স অফিসে লাভের গুড় খেলেও হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি বলিউডের বহু তারকা। অমিতাভ বচ্চনই হোক বা অজয় দেবগন— অভিনয়ের পাশাপাশি সিনেমার প্রযোজনাতেও নেমে পড়েছেন। অমিতাভ-অজয়দের পথেই কি হাঁটতে চান সারা আলি খান বা কার্তিক আরিয়ান?
সম্প্রতি সারা বা কার্তিকদের এক কীর্তিতে এই প্রশ্ন উঠছে। মুম্বই শহরতলির একটি বহুতলে তাঁরা দু’জনেই অফিস কিনেছেন। অবশ্যই আলাদা ভাবে এই বিনিয়োগ করেছেন কার্তিকরা। তবে কি অমিতাভদের মতো প্রযোজনা সংস্থার কাজেই অফিস কিনছেন তাঁরা?
বলিউডের প্রথম সারির তারকা হওয়ায় সারা এবং কার্তিকদের অফিস কেনার খবর ধামাচাপা পড়েনি। এ নিয়ে হরেক সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে সে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
অন্ধেরির একটি ২৮ তলা বহুতলে অফিস কিনেছেন অমিতাভও। তবে একটি নয়, চার-চারটি। সঙ্গে আবার এক ডজন গাড়ি রাখার বন্দোবস্ত করতে গ্যাঁটের কড়ি খসিয়েছেন।
অমিতাভ ছাড়াও ওই বহুতলে অফিস কিনেছেন কাজল এবং অজয় দেবগন। সব মিলিয়ে বলিউডি তারকাদের বিনিয়োগের ঠেলায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে সংবাদমাধ্যমে। সে সবের খুঁটিনাটিও প্রকাশ্যে এসেছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, অন্ধেরির বীর দেশাই রোডের একটি ২৮ তলা বহুতলে যেন বলিউডি চাঁদের হাট বসেছে। ওশিয়ারা এলাকার ওই বহুতলে মোট ৪৭ কোটি ৮২ লক্ষ টাকার সম্পত্তি কিনেছেন তারকারা।
অমিতাভ, সারা এবং আরিয়ানের অফিসগুলি আলাদা ভাবে কেনা হলেও প্রতিটিই ২,০৯৯ বর্গফুটের। নির্মাণ শিল্পের ভাষায় যেগুলি হল বিল্ড-আপ এরিয়া। বহুতলের বিভিন্ন তলে ওই অফিসগুলির এক-একটি ১,৯০৫ বর্গফুট কার্পেট এরিয়া জুড়ে রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বহুতলের ২১ তলায় ২১০১, ২১০২, ২১০৩ এবং ২১০৪— এই চারটি অফিস কিনেছেন অমিতাভ। সঙ্গে ১২টি গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য জায়গাও বাগিয়েছেন।
সব মিলিয়ে মোট ২৮ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ করেছেন অমিতাভ। চারটি অফিস মিলিয়ে ওই বহুতলের ৭,৬২০ বর্গফুট কার্পেট এরিয়ায় তাঁর মালিকানা রয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম দিনে এই সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশনও হয়ে গিয়েছে। চারটি অফিসের জন্য স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ নাকি ১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা জমা করেছেন অমিতাভ।
অমিতাভের আগেই ওই বহুতলে অফিস কিনেছেন সইফ আলি খানের কন্যা সারা। তবে একা নন, এই বিনিয়োগে মা অমৃতা সিংহও তাঁর জুড়িদার।
বহুতলের চতুর্থ তলে ৪০২ ইউনিটটি সারাদের নামে নথিভুক্ত করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের নথিতে অবশ্য সারা সুলতান এবং অমৃতা সিংহের নাম রয়েছে। ৯ কোটির ওই অফিসটি কেনার জন্য ৪১ লক্ষের বেশি স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়েছে সারাদের। অফিসের সঙ্গে তিনটি পার্কিং স্পেসও কিনেছেন তাঁরা।
সারাদের অফিসের পাশেই ৪০৩ নম্বর ইউনিটটি কিনেছেন কার্তিক। ১০ কোটি ৯ লক্ষ টাকার ওই অফিসের জন্য ৪৭ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়েছে তাঁকে।
অমিতাভরা ছাড়া অজয় দেবগন এবং কাজলও বহুতলে একটি অফিস কিনেছেন। এ বিষয়ে অমিতাভের থেকে বেশ কয়েক যোজন এগিয়ে রয়েছেন কাজলরা। ওই বহুতলে গত ছ’মাসে ছ’টি অফিস কিনেছেন তাঁরা।
গত মাসে বহুতলের আটতলায় ১, ৯০৫ বর্গফুটের আরও একটি অফিস কিনেছেন কাজলরা। ৭ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকার ওই অফিসটি ছাড়াও ১৬ এবং ১৭ তলায় আরও পাঁচটি অফিসের মালিকানা রয়েছে তাঁদের।
চলতি বছরের এপ্রিলে ৪৫ কোটি টাকায় ওই পাঁচটি অফিস কেনেন কাজলরা। সব মিলিয়ে সেগুলির কার্পেট এরিয়া ১৩,২৯৮ বর্গফুট।
বলিউডি তারকাদের অফিস কেনার হিড়িকে নানা প্রশ্ন উঠছে। প্রযোজনার কারবারে কি বিপুল মুনাফার মুখ দেখছেন অমিতাভ? নিজের সংস্থা অমিতাভ বচ্চন কর্পোরেশন লিমিটেড (এবিসিএল)-এ কি জোয়ার এসেছে? অন্য দিকে, সারা বা কার্তিকদের মতো কমবয়সিদের কি এ বার প্রযোজকের ভূমিকায়ও দেখা যাবে?
অমিতাভের মতো অজয়েরও অবশ্য প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে। অজয় দেবগণ এফফিল্মস (এডিএফ) নামের সে সংস্থাটি গড়েছিলেন ২০০০ সালে। সে বছর ওই সংস্থার ব্যানারে কাজলের সঙ্গে মিলে ‘রাজুচাচা’ নামে একটি সিনেমায় দেখা গিয়েছিল অজয়কে।
অমিতাভ বা অজয়দের মতো প্রযোজনায় এখনও নামেননি সারা অথবা কার্তিক। তবে তাঁদের সমসাময়িক কৃতি শ্যানন কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রযোজকের জুতোয় পা গলিয়েছেন। ‘ব্লু বাটারফ্লাই ফিল্মস’ নামে ওই সংস্থা এ বার কাজলের নতুন ছবি ‘দো পাত্তি’র প্রযোজনা করবে। তাতে কাজলের সঙ্গে রয়েছেন কৃতিও। তবে কি তাঁকে দেখেই প্রযোজনায় অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন সারা বা কার্তিক?