প্রথম ফিল্ম থেকে তাঁর ভাবমূর্তি বিগড়ে দিয়েছিল বলিউড। তাঁর বদনাম করতে যা নয়, তা-ই রটাতেন ইন্ডাস্ট্রির লোকজন। তিনি নাকউঁচু। উদ্ধত। বড়লোকের বিগড়ে যাওয়া মেয়ে! হৃতিক রোশনের সঙ্গেও সব সময় তুলনা টানা হত। হৃতিকের থেকে বেশি দামি গাড়িতে চেপে তিনি কেন ফিল্মের সেটে ঢোকেন? এ প্রশ্নও তুলেছিলেন ইন্ডাস্ট্রির লোকজন। সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনই দাবি করেছেন অমিশা পটেল।
একটি বিনোদনমূলক ওয়েবসাইটে আমিশার দাবি, ‘‘প্রথম ফিল্ম থেকেই আমাকে উদ্ধত, নাকউঁচু বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি নাকি দক্ষিণ মুম্বইয়ের বড়লোকের বিগড়ে যাওয়া বাচ্চাদের মতো।’’
বলিউডে ছেলের অভিষেকের জন্য ২০০০ সালে ‘কহো না... ’ তৈরি করেছিলেন রাকেশ রোশন। আনকোরা হৃতিকের বিপরীতেও নতুন মুখ। বন্ধু অমিত পটেলের মেয়ে অমিশা।
হাইস্কুলে পড়ার সময়ই ‘কহো না... ’য় অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাকেশ। তবে সে সময় উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে বেশি আগ্রহী ছিলেন অমিশা। রক্ষণশীল পরিবারও তাতে সায় দিয়েছিল।
মুম্বইয়ের একটি কনভেন্ট স্কুল থেকে পড়াশোনার শেষে আমেরিকা পাড়ি দেন তিনি। বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়ো-জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শুরু করেন। তার পর সে দেশের টাফ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্বর্ণপদক লাভ করেন অমিশা।
স্নাতক হওয়ার পর ইকোনমিক অ্যানালিস্ট হিসাবে কাজ করতে শুরু করেন। তবে দেশে ফিরে সত্যদেব দুবের থিয়েটার গ্রুপে নাটকে অভিনয় শুরু। বহু বিজ্ঞাপনেও মুখ দেখিয়েছিলেন অমিশা। সে সময়ই ফের পুরনো প্রস্তাব পেড়ে বসেন রাকেশ। এ বার আর ‘না’ বলেননি অমিশা। হৃতিকের বিপরীতে বন্ধুর মেয়েকে নিয়েই ‘কহো না... ’ সেরে ফেলের রাকেশ।
বলিউডে অভিষেকেই বাজার মাত করেছিলেন হৃতিক-অমিশা। তুমুল হিট ‘কহো না... ’। তবে ফিল্মের সাফল্য তো পরে। তার আগেই নাকি বলিউডের কদর্য দিকটি দেখে ফেলেছিলেন অমিশা।
কেন তাঁর বদনাম রটে গিয়েছিল, সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন অমিশা। তিনি বলেন, ‘‘ফিল্মের সেটে আমি অর্থহীন গালগল্প করতে ভালবাসি না। পরচর্চায় মন নেই। অন্য নায়িকাদের গালমন্দও করি না। সহ-অভিনেতাদের ফিল্ম হিট করলে খুব খুশি হই।’’
এত কিছু সত্ত্বেও কেন তাঁকে ‘বড়লোকের আদুরে দুলালি’ বলা হত? তা নিয়েও মন খুলে কথা বলেছেন অমিশা। তাঁর মতে, ‘‘আমি একেবারে বইয়ের পোকা। গসিপ করার বদলে ফিল্মের সেটে বসে গল্পের বই পড়তাম। তাই অনেকেই বলতেন, অমিশা’জি খুব নাকউঁচু। কে জানে নিজেকে কী মনে করেন!’’
এখানেই শেষ নয়। বলিউডের আর পাঁচটা নায়িকার থেকে তাঁকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছিল বলে অনুযোগ অমিশার। ‘কহো না... ’ করার সময় মারুতি গাড়িতে চেপে সেটে আসতেন হৃতিক। তবে অমিশা ঢুকতেন মার্সিডিজে। তা দেখে নাকি অনেকের চোখ কপালে উঠেছিল।
নায়ক ছোট গাড়িতে আসছেন। ফিল্মের প্রথম দিনেই নায়িকা কেন বড় গাড়িতে করে আসবেন? অমিশার দাবি, তাঁকে এমন কথাও শুনতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বড়লোকের ঘরের মেয়ে বলেই মার্সিডিজে চেপে প্রথম দিন শ্যুটিংয়ে আসবেন! অনেকে তো আমার নামে এ কথাও বলেছেন।’’
বলিউডে তাঁর ভাবমূর্তি নিয়ে ঠাট্টা করা হয়েছিল বলে দাবি অমিশার। তিনি বলেছেন, ‘‘হৃতিক মারুতিতে আর আমি মার্সিডিজে কেন আসি, তা নিয়েও হাসিঠাট্টা করত অনেকে। তবে আমি তো আর লোকদেখানোর জন্য মার্সিডিজে চড়ে যেতাম না। আমাকে সে ভাবে মানুষ করা হয়নি। কারও সম্পর্কে কটূক্তি করব, তেমনও শেখানো হয়নি।’’
বলিউডে যতই তাঁর নামে ‘বদনাম’ করুক না কেন, নিজের কেরিয়ারে বড়সড় হিট ফিল্ম উপহার দিয়েছেন অমিশা। চলতি বছর সানি দেওলের সঙ্গে ‘গদর: এক প্রেমকথা’-র শ্যুটিং করছেন। ‘কহো না... ’ মুক্তির পরের বছরই এই ফিল্মের প্রিক্যুয়েল দিয়ে বহু ‘শত্রু’র মুখেই ছাই দিয়েছিলেন হৃতিকের নায়িকা।