ছোট পর্দায় বেশ পরিচিত মুখ। কিন্তু এ বার বড় পর্দায় বড় মাপের অভিনেতাদের সঙ্গে একই ফ্রেমে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন ভেবে সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘ভুল ভুলাইয়া ২’ ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হয়েছিলেন অমর উপাধ্যায়।
‘কিঁউ কি সাঁস ভি কভি বহু থি’ নামে জনপ্রিয় ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতেন অমর। কিন্তু বড় পর্দায় কাজ করবেন বলে মাঝপথেই সেই ধারাবাহিক ছেড়ে দেন।
ধারাবাহিকের গল্পও এর ফলে নতুন মোড় নেয়। মৃত্যু হয় ‘মিহির’ চরিত্রের। ধারাবাহিকে তাঁর অনুপস্থিতি দর্শকদের শোকস্তব্ধ করে তোলে। অমরকে আবার ‘মিহির’-এর চরিত্রে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানিয়ে অনেকে টেলিভিশন চ্যানেলের দফতরে চিঠিও পাঠান।
অমরের জন্ম এক গুজরাতি পরিবারে। মুম্বইয়ে মালাদ এলাকায় বেড়ে ওঠা। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি পুণেতে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়াতে ভর্তি হন।
মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু করেন তিনি। ‘স্টারডাস্ট’ পত্রিকায় তাঁর ছবি বেরোনোর পর ‘দেখ ভাই দেখ’ নামের এক ধারাবাহিকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান অমর।
এর পর আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘কিঁউ কি সাঁস ভি কভি বহু থি’, ‘দেশ মেঁ নিকলা হোগা চাঁদ’, ‘সাথিয়া— পয়্যার কা নয়া এহসাস’, ‘কুসুম’, ‘কসৌটি জিন্দেগি কি’-এর মতো বহু জনপ্রিয় হিন্দি ধারাবাহিকে কাজ করেছেন তিনি।
শুধু একের পর এক হিট ধারাবাহিকে অভিনয়ই করেননি, ভোজপুরি, মরাঠি, গুজরাতি সিনেমাতেও কাজ করেছেন তিনি। বাদ পড়েনি বলিউডও।
‘এলওসি কার্গিল’, ‘১৩বি’, ‘কাগজ’-এর মতো হিন্দি ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। কিন্তু সবই পার্শ্বচরিত্র। বড় পর্দায় নিজের অভিনয় দক্ষতা দেখানোর সঠিক সুযোগ পাননি অমর।
একতা কপূরের প্রযোজনায় ‘মোলক্কী’ হিন্দি ধারাবাহিকেই তাঁকে শেষ বারের মতো অভিনয় করতে দেখা যাবে বলে ধারণা ছিল দর্শকের। কিন্তু অনুরাগীদের নতুন চমক দিতে তাঁর আবির্ভাব হয় কমেডি-হরর ধাঁচের ‘ভুলভুলাইয়া ২’ ছবিতে।
অমর ভেবেছিলেন, কার্তিক আরিয়ান, কিয়ারা আডবাণী, রাজপাল যাদব, সঞ্জয় মিশ্রের মতো বড় মাপের অভিনেতার সঙ্গে কাজ করে তিনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন।
এ ছাড়া তাঁর প্রিয় অভিনেত্রী তব্বুর সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পাচ্ছেন, তা জেনেই খুব উচ্ছ্বসিত ছিলেন অমর।
ছবির পরিচালক অনীশ বাজমি তাঁকে এমন একটি চরিত্রের জন্য বেছেছিলেন, যেখানে অভিনয় করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
অবশেষে, বড় পর্দায় সাফল্যের প্রথম ধাপে পা ফেলবেন ‘ভুলভুলাইয়া ২’-র মাধ্যমে, এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অনীশ।
কিন্তু ছবি মুক্তি পেতেই স্বপ্নভঙ্গ। পুরো ছবিতে যতটা সময় জুড়ে তাঁর স্ক্রিনে থাকার কথা ছিল, তার বেশির ভাগ অংশই ছবি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফলে, দর্শকদের কাছে পৌঁছনোর সুযোগ আবার হারালেন তিনি। যে ছবি কার্তিক আরিয়ানের জীবনে একটি মাইলফলক, সেই সিনেমাই আর এক অভিনেতার স্বপ্নভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়াল।
প্রচণ্ড হতাশ হলেও এই ঘটনার ইতিবাচক দিককেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন অমর। তব্বু, কার্তিক, কিয়ারা-সহ বাকি অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন বলে তিনি অনীশের কাছে কৃতজ্ঞ।