পৃথিবীর অন্যতম গরিব দেশ হাইতি। অর্থাভাব এবং খাদ্যাভাবে আটার বদলে কাদার তৈরি এক বিশেষ ধরনের রুটি খান সে দেশের মানুষ।
কিন্তু পাথর দিয়ে তৈরি খাবার! এ কি কখনও শোনা গিয়েছে? তা-ও আবার চিনের মতো দেশে! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। পাথরের তৈরি বিশেষ পদ তৈরি করে তাক লাগাচ্ছেন চিনের দোকানদাররা।
চিনে সম্প্রতি ব্যাপক জনপ্রিয় হওয়া এই পদের নাম ‘সুওদিউ’। যার অর্থ, চুষে ফেলে দিতে হয় যে খাবার।
‘সুওদিউ’য়ের মূল উপাদান পাথর। পাথরের টুকরোকে পরিষ্কার করে পেঁয়াজ, লঙ্কা এবং সস্ দিয়ে কষিয়ে ঝাল ঝাল করে তৈরি করা হয় এই পদ।
তবে ‘সুওদিউ’ চিবিয়ে খেলে হবে না। তা হলে আর কোনও মানুষের দাঁত আস্ত থাকার কথা নয়। তা হলে কী ভাবে খেতে হয় এই খাবার?
সুওদিউ খেতে হয় চুষে। রান্না করা পাথর ভাল করে চুষে ফেলে দিতে হয়। একে একে সব পাথরগুলি চুষে ফেলে দেওয়ার পর পাত্রের তলায় পড়ে থাকা তেলঝোল।
সুওদিউ-ই বিশ্বের সবথেকে শক্ত খাবার। আর এই খাবারেই আপাতত মজে চিনের তামাম জনতা।
পূর্ব চিনের হুবেই প্রদেশ থেকে শুরু হলেও বর্তমানে চিনের অনেক শহরেই সুওদিউ বিক্রি হয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিক্রি হয় রাস্তার ধারের মুখরোচক খাবারের দোকানে।
কী ভাবে তৈরি হয় জনপ্রিয় এই চিনা খাবার? প্রথমে নদীর ধার থেকে গোল এবং চ্যাপ্টা নুড়ি-পাথর সংগ্রহ করা হয়। পরে সেগুলি ভাল করে জলে ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়।
জলে ধোয়ার পর পাথরগুলিকে লঙ্কার সস্, পেঁয়াজ, রসুন, টোম্যাটো, রোজমেরি এবং বিভিন্ন মশলা দিয়ে ভাল করে ভেজে নেওয়া হয়। এর পর সেগুলি পাত্রে নিয়ে উপর থেকে লঙ্কার সস্ ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করা হয়।
লাল লাল রসালো পাথরগুলি চুষে আস্বাদনের পর সেগুলি ফেলে দেন গ্রাহক।
চিনে এক এক প্লেট সুওদিউ বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়।
মনে করা হয়, শত শত বছর আগে চিনের মাঝি সম্প্রদায়ের হাত ধরে সুওদিউের উৎপত্তি।
চিনের এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নৌকার মাঝিদের মুখে মুখে এই পদের কথা ছড়িয়ে পড়েছিল।
নৌকায় খাবার না থাকলে এ ভাবেই নাকি পাথর রান্না করে রসনাতৃপ্তি করতেন মাঝিরা। বহু দিন প্রচারের বাইরে থেকে সম্প্রতি এই পদ আবার জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
সম্প্রতি সুওদিউ রান্না করার এবং এই পদ খাওয়ার ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সারা বিশ্বের খাদ্যপ্রেমীদের নজরও কেড়েছে এই পদ।