‘লগান’ ছবির গৌরীকে মনে আছে? যাঁকে দেখে ‘রাধা ক্যায়সে না জ্বলে’ গান গেয়েছিলেন ‘ভুবন’ আমির খান। বা ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’ সিনেমার সুমন ‘চিঙ্কি’ আস্থানাকে মনে আছে? যিনি দোলা দিয়েছিলেন ‘মুন্না’ সঞ্জয় দত্তের মনে। এই দুই চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী গ্রেসি সিংহ। এবং দুই চরিত্রে অভিনয়ের সুবাদেই সমালোচকদের থেকে প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি।
দু’বছরের ব্যবধানে মুক্তি পাওয়া ‘লগান’ এবং ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’, দু’টি ছবিই বক্স অফিসে ব্যাপক ব্যবসা করেছিল।
‘লগান’ এবং ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’ ছবির মাঝে অজয় দেবগন অভিনীত ‘গঙ্গাজল’ ছবিতেও অভিনয় করেন গ্রেসি। সেই ছবিও সমালোচকদের প্রশংসা কুড়নোর পাশাপাশি বক্স অফিসে ঝড় তুলেছিল। সফল অভিনেত্রী হিসাবে গ্রেসিও বলিউডে আস্তে আস্তে নিজের জায়গা পাকা করছিলেন।
বলিউড ছবির পাশাপাশি ওই সময়ে দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতেও চুটিয়ে অভিনয় করতে শুরু করেন গ্রেসি। কিন্তু মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানেই উদীয়মান তারকা অভিনেত্রী গ্রেসি বলিউড থেকে হারিয়ে যান। বড় বাজেটের ছবি তো দূর অস্ত, তাঁর ঝুলিতে ছোট বাজেটের ছবি আসাও বন্ধ হয়ে যায়।
শেষমেশ ছবি না পেয়ে ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু করেন গ্রেসি। তবে সেখানেও বিশাল সাফল্য পেয়েছেন এমনটা নয়।
কিন্তু কেন বলিউডে এমন ভরাডুবি হল গ্রেসির? বলিপাড়ায় কানাঘুষোয় শোনা যায়, নিজের ভুলেই নাকি তাঁর এই অবস্থা হয়েছিল।
২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দেশদ্রোহী’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান গ্রেসি। সেই প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দেননি। ওই ছবিতে গ্রেসি অভিনয় করেছিলেন বিতর্কিত তারকা কমল রশিদ খান বা কেআরকে-র বিপরীতে।
‘দেশদ্রোহী’ ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ার পাশাপাশি সমালোচনার মুখেও পড়ে। খারাপ অভিনয়ের জন্য কমলকে বিদ্রুপের মুখেও পড়তে হয়।
ছবিকে তুলোধনা করার পাশাপাশি সমালোচকরা একে ‘বি-গ্রেড’ ছবির তকমাও দেন। আর এর পরই গ্রেসিকে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
বলিউডে চাউর হয়ে যায়, গ্রেসির হাতে ছবির সংখ্যা অনেক কম। আর এই জন্যই যা খুশি ছবিতে অভিনয় করতে তিনি রাজি হয়ে যাচ্ছেন। এই কথা চাউর হওয়ার পর বলিউডে গ্রেসির দর কমে যায়।
বলিউডের ঘনিষ্ঠ মহলে এই গুজবও শোনা যায়, গ্রেসির নাকি টাকার চাহিদা বেশি। আর সেই কারণেই তিনি ‘দেশদ্রোহী’র মতো ছবিতে অভিনয় করতেও রাজি হয়ে গিয়েছেন।
গ্রেসির অভিনয় নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল বলিউডে। আমির, অজয়, সঞ্জয়ের সঙ্গে অভিনয় করা অভিনেত্রী কেআরকের সঙ্গে অভিনয় করে নিজের ‘জাত’ নষ্ট করেছেন মনে করেও নাকি অনেক পরিচালক তাঁকে ছবি থেকে বাদ দেন।
‘দেশদ্রোহী’ মুক্তি পাওয়ার পর গ্রেসির কাছে বলিউডের বড় বাজেটের ছবির প্রস্তাব আসা বন্ধ হয়ে যায়। কম বাজেটের কয়েকটি বলিউড ছবিতে অভিনয় করার পাশাপাশি মরাঠি ছবিতেও অভিনয় শুরু করেন তিনি।
২০১৩ সালে একটি বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেছেন গ্রেসি। ‘সমাধি’ নামের এই ছবিতে গোবিন্দের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ছবিটির পরিচালনা করেছিলেন দীপক সান্যাল।
২০১৫ সালে শেষ বড় পর্দায় অভিনয় করেন গ্রেসি। সেই মরাঠি ছবির নাম ‘চুড়িয়াঁ’। গ্রেসির পাশাপাশি বিনোদ খন্না এবং সুধাংশু পাণ্ডে এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।