সব কিছু ঠিকঠাক ঠিক থাকলে বলিউডের ‘ভাইজান’ সলমন খানের ভ্রাতৃবধূ হতেন মহেশ ভট্টের কন্যা তথা অভিনেত্রী-পরিচালক-প্রযোজক পূজা ভট্ট। কিন্তু খান পরিবারের পুত্রবধূ হওয়া হয়নি পূজার। এর নেপথ্যে সলমনের হাত ছিল বলেও মনে করেন কেউ কেউ।
একটা সময় ছিল যখন পূজা এবং খান পরিবারের ছোট পুত্র সোহেল খান চুটিয়ে প্রেম করতেন।
তাঁদের প্রেম এমনই গভীরে পৌঁছেছিল যে, বিশেষ সম্পর্কও তৈরি হয়ে যায় ভট্ট এবং খান পরিবারের মধ্যে। পূজার সঙ্গে ছেলের বিয়ে দেবেন বলে তৈরি ছিলেন সলিম খানও। দুই পরিবারের একে অপরের বাড়িতে আনাগোনাও ছিল।
প্রকাশ্যে একে অপরের হাত ধরে সোহেল এবং পূজাকে মুম্বইয়ের রাস্তায় ঘুরতেও দেখা যেত।
মহেশ অনেক দিন ধরেই চাইছিলেন মেয়ের বিয়ে হয়ে যাক সোহেলের সঙ্গে। সোহেলের সঙ্গে তাড়াতাড়ি বিয়ে সেরে ফেলতে চাইছিলেন পূজাও।
কিন্তু সোহেল বার বার বিয়ে পিছিয়ে দিচ্ছিলেন। কারণ তখন পরিচালক হিসাবে নিজের কেরিয়ার শুরু করতে চাইছিলেন তিনি। সোহেলের নাকি দাবি ছিল, যত ক্ষণ না নিজেকে পরিচালক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন, তত দিন তিনি বিয়ে করবেন না।
অন্য দিকে, পূজার মনে হয়েছিল, কোনও অজানা হাত তাঁদের বিয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
পরিচালক হিসাবে কাজ শুরুর আগে মহেশের কাছে মাঝেমধ্যেই পরিচালনা সংক্রান্ত পরামর্শ নিতে যেতেন সোহেল।
এর মধ্যেই বিয়ে নিয়ে পূজা-সোহেলের তিক্ততা বাড়তে থাকে। শেষমেশ তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। পূজার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর পরই সীমা সচদেওকে বিয়ে করেন সোহেল।
সোহেলের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার আগে পূজা একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর এবং সোহেলের সম্পর্ক ভাঙার জন্য অনেকেই তৎপর। কিন্তু কোনও বাধার কাছে মাথা নত না করে তাঁরা জলদি বিয়ে করবেন।
সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর আবার অন্য এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা বিয়ে করে ফেলতাম যদি সোহেলের কেরিয়ার সামনে না আসত। সোহেল তখন পরিচালক হিসাবে যাত্রা শুরু করছিল।’’
পূজা এ-ও জানিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে খান পরিবারের সম্পর্ক মধুর ছিল। সলমনের বাবা-মা এবং বোনেরা তাঁকে খুব ভালবাসতেন। আরবাজের সঙ্গেও তাঁর ভাল বোঝাপড়া ছিল। একমাত্র সলমনের সঙ্গেই তিনি একটু দূরত্ব বজায় রাখতেন বলে দাবি করেছিলেন পূজা।
পূজা এ-ও দাবি করেছিলেন, তিনি ‘লভ’ বলে একটি ছবিতে সলমনের বিপরীতে অভিনয় করতে চাননি। আর সেই কারণেই তাঁদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়।
তাঁর এবং সোহেলের সঙ্গে সম্পর্ক যে সলমনের জন্যই ভেঙেছিল এমন দাবি পূজা কখনও করেননি।
তবে বলিউডে কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, পূজা এবং সোহেলের সম্পর্ক ভাঙার নেপথ্যে ছিলেন সলমন। তিনিই সোহেলকে বুঝিয়ে সম্পর্ক থেকে বার করে আনেন। যদিও সলমন এই নিয়ে কখনও কোনও কথা বলেননি।
পরিচালক হিসাবে ২০০২ সালে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন সোহেল। ছবিতে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনিই। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন সমীরা রেড্ডি। ‘ম্যায়নে দিল তুঝকো দিয়া’ নামের ওই ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।
ছবি সফল না হওয়ার কারণে নিরাশ হয়ে যান সোহেল। মনে করা হয়, সোহেলের ছবির পরিণতি দেখার জন্যই নাকি অপেক্ষা করেছিলেন পূজা। সোহেলের ছবি মুক্তি পাওয়ার পরের বছরই ব্যাবসায়ী তথা ভিডিয়ো জকি মণীশ মখিজাকে বিয়ে করেছিলেন পূজা।