ভারতীয় সন্তান হিসাবে আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষপদে যাওয়ার পরেই তাঁকে নিয়ে হইচই পড়েছিল। তবে তিনি চাকরি টিকিয়ে রাখতে পারেননি। তাঁর সংস্থার মালিকানা বদলাতেই চাকরি যায় তাঁর। কথা হচ্ছে পরাগ আগরওয়ালকে নিয়ে।
২০২১ সালের নভেম্বরে মাইক্রোব্লগিং সংস্থা টুইটার (বর্তমানে ‘এক্স’)-এর সিইও হন পরাগ। কে পরাগ? তখন এই প্রশ্নই উঠেছিল দেশবাসীর মনে। কী ভাবেই বা তিনি বিশ্বমানের এক সংস্থার শীর্ষকর্তা হলেন?
পরাগ অবশ্য সেই পদে এক বছরও ছিলেন না। ২০২২ সালে টুইটারের মালিকানা বদল হয়। ‘মাইক্রো ব্লগিং সাইট’-এর রাশ কুক্ষিগত করার সঙ্গে সঙ্গেই সংস্থার সিইও পরাগ-সহ তিন শীর্ষ আধিকারিককে ছাঁটাই করেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। এই নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করতেও দেখা গিয়েছিল পরাগকে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টুইটারের সিইও হিসাবে মূল বেতন এবং অন্যান্য খরচ বাবদ বার্ষিক ১০০ কোটি পারিশ্রমিক হিসাবে পেতেন পরাগ। ২০২২-এর অক্টোবরে তাঁকে ছাঁটাই করেন মাস্ক।
শোনা যায়, ছাঁটাই করার পরেও প্রায় ৪০০ কোটি টাকা সংস্থার তরফে প্রাপ্য ছিল পরাগের। তবে তিনি তা পেয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি।
তবে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই টাকা পরাগ পাননি। এই নিয়ে পরাগ এবং টুইটারের অন্যান্য বরখাস্ত হওয়া আধিকারিকেরা মামলা করেছিলেন বলেও শোনা যায়।
১৯৮১ সালে রাজস্থানের অজমেরে পরাগের জন্ম। সেই হিসেবে এখন ৪৩ বছর বয়স পরাগের। মুম্বইয়ের অ্যাটমিক এনার্জি সেন্ট্রাল স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ছাত্র হিসেবে মেধাবী ছিলেন। স্কুল শেষ করে আইআইটিতে পড়ার সুযোগ পান পরাগ।
পরাগ আইআইটি বম্বের ছাত্র। বিটেক করেছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে।
বিটেক সম্পূর্ণ করার পর ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যান পরাগ। সেখানে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি করেন।
গবেষণা করতে করতে তিনি শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করেছেন মাইক্রোসফ্ট, ইয়াহু এবং এটি অ্যান্ড টি ল্যাবে।
২০১১ সালের অক্টোবরে স্ট্যানফোর্ডে পিএইচডি সম্পূর্ণ করার পরই সফ্টঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে টুইটারে যোগ দেন পরাগ।
সেখান থেকে ঠিক সাড়ে ছ’বছরের মাথায় ২০১৮ সালের মার্চে তাঁকে চিফ টেকনোলজিকাল অফিসার বা সিটিও হিসেবে নিয়োগ করা হয়। যদিও অঘোষিত ভাবে ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকেই ওই পদ সামলাচ্ছিলেন তিনি।
সিটিও হিসেবে টুইটারে পরাগের কাজ প্রশংসা পায় কর্তৃপক্ষের। টুইটারের যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসির নজরে পড়েন তিনি। এর পর ২০২১ সালে তাঁকে সংস্থার সিইও করা হয়। কিন্তু ২০২২-এ চাকরি যায় তাঁর।
এখন কী করেন পরাগ? জানা যায়, বর্তমানে পরাগ কৃত্রিম মেধা নিয়ে কাজ করছেন। কৃত্রিম মেধার একটি সংস্থার হয়ে নাকি ২৪৯ কোটির তহবিলও গড়ে তুলেছেন তিনি।
পরাগ বিবাহিত। তাঁর স্ত্রীর নাম বিনীতা আগরওয়াল। ২০১৬ সালে জয়পুরে বিয়ে করেন দু’জনে। বিনীতাও একটি আমেরিকান সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত। দু’জনের এক পুত্রসন্তানও আছে। নাম অংশ আগরওয়াল।