‘নীতা মুকেশ অম্বানী কালচারাল সেন্টার’ উদ্বোধন হয়েছে কয়েক মাস আগে। সেখানে অম্বানী-জায়া নীতার রূপসজ্জা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন অনেকে। বিস্তর প্রশংসাও কুড়িয়েছিলেন নীতা। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নীতার সেই রূপসজ্জার নেপথ্যনায়িকার নাম নিশি সিংহ।
রূপটান শিল্পী (মেকআপ আর্টিস্ট) হিসাবে বলিউডের পরিচিত নাম নিশি। শুধু নীতা নন, বলিউডের নামীদামি তারকাদের ঢেলে সাজান নিশি।
তারকাদের পাশাপাশি, নামীদামি মডেলদেরও রূপসজ্জার দায়িত্ব মাঝেমধ্যেই নিশির কাঁধে এসে পড়ে।
জামশেদপুরের বিরসানগরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে নিশির জন্ম। সেখানেই বড় হওয়া। ছোটবেলায় স্থানীয় স্কুলেই পড়াশোনা করেছিলেন তিনি।
নিশির বাবা অজয়কুমার সিংহ ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। নিশির মামাদাদু রামলাখান সিংহ ছিলেন টাটা গোষ্ঠীর কর্মী।
পড়াশোনা শেষ করার পর ‘কিংফিশার’ সংস্থার বিমানকর্মী হিসাবে বেশ কয়েক বছর চাকরি করেন নিশি।
তবে এর অনেক আগে থেকেই রূপসজ্জার প্রতি আগ্রহ জন্মায় নিশির। দিল্লিতে সাত বছর এবং আমেরিকায় ছ’মাস রূপটানের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি।
এর পর দিল্লি এবং মুম্বইয়েও পসার জমান নিশি। ধীরে ধীরে রূপটান শিল্পী হিসাবে তাঁর নাম বলি মহলে পৌঁছয়। নামীদামি তারকাদের থেকে ডাক পেতে শুরু করেন তিনি।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রূপটান শিল্পী হিসাবে কাজ করে চলেছেন নিশি। রূপটান শিল্পী হিসাবে অন্তত এক ডজন ছবিতে কাজও করে ফেলেছেন তিনি।
নিশি যে ছবিগুলিতে রূপটান শিল্পী হিসাবে কাজ করেছেন, তার মধ্যে ‘ধড়ক’, ‘যুগ যুগ জিয়ো’, ‘ভুল ভুলাইয়া-২’, ‘পৃথ্বীরাজ চৌহান’, ‘ওএমজি-২’, ‘ঘোস্ট স্টোরিজ’, ‘গুড্ডু রঙ্গিলা’ উল্লেখযোগ্য।
বলি তারকাদের মধ্যে নিশির গ্রাহকের তালিকায় রয়েছেন, কিয়ারা অডবাণী, মীরা কপূর, ইয়ামি গৌতম, সারা আলি খান, আথিয়া শেট্টি, ফাতিমা সানা শেখ, শানায়া কপূর, জাহ্নবী কপূর, মৃণাল ঠাকুরের মতো তারকা।
শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরী এবং মাধুরী দীক্ষিতের জন্যও তুলি ধরেছেন নিশি। তুলি ধরেছেন দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী নয়নতারার জন্যও।
নিশি যেমন তারকাদের ডাকে সাড়া দেন। তেমনি নিশির ডাকেও সাড়া দেন তারকারা। রূপটানের বিশেষ কোনও শুট করার জন্য তারকাদের অনুরোধ করেন নিশি। সেই অনুরোধে সাড়াও দেন তারকারা।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রূপটান শিল্পী হিসাবে কোটি কোটি টাকা আয় করেন নিশি। এক ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, নিশি প্রতি অনুষ্ঠানে প্রায় এক লক্ষ টাকা করে পারিশ্রমিক নেন।
জামশেদপুর থেকে বলিউডের ‘গ্ল্যামার’ দুনিয়ার অন্যতম অংশ হওয়া সহজ ছিল না নিশির। কিন্তু তিনি করে দেখিয়েছেন।
একই সঙ্গে এখনও শিকড়ের সঙ্গে নিজেকে জুড়ে রেখেছেন নিশি। নিশির বাবা-মা, দাদু-ঠাকুমা, সবাই এখনও জামশেদপুরে থাকেন। মাঝেমধ্যেই তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যান নিশি।
সম্প্রতি নীতার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন নিশি। এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘নীতা অম্বানীর সঙ্গে কাজ করা অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা। আমার কাজ দেখে নীতা সন্তুষ্ট। আমি ভবিষ্যতে আবার ওঁর সঙ্গে কাজ করতে চাই।’’