শিক্ষা এবং জ্ঞান হল মানবতার সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার যা মানবজীবন এবং সমাজ গড়তে সাহায্য করে। তবে বিশ্বের সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি কে, তা নির্ধারিত হয় এক জনের অর্জিত ডিগ্রির ভিত্তিতে। যাঁর কাছে যত বেশি ডিগ্রি, তিনি তত বেশি শিক্ষিত। আর সেই নিরিখে সম্ভবত পৃথিবীর সবথেকে শিক্ষিত ব্যক্তি নিকোলাওস জেনিওস।
গ্রিস বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নিকোলাওস এক জন বিখ্যাত গবেষক এবং শিক্ষাবিদ। জনস্বাস্থ্য, চিকিৎসা গবেষণা এবং শিক্ষা— এই তিন ক্ষেত্রেই তাঁর অবাধ বিচরণ। বহু কৃতিত্বেরও তিনি অধিকারী।
অবিশ্বাস্য মনে হলেও নিকোলাওসের কাছে সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ডিগ্রি রয়েছে যা ডক্টরেট ডিগ্রির সমতুল্য। এ ছাড়াও নিকোলাওসের তিনটি ডক্টরেট ডিগ্রি রয়েছে। একই সঙ্গে সাতটি বৈজ্ঞানিক সংগঠনে শিক্ষকতার সঙ্গেও তিনি যুক্ত। বৈজ্ঞানিক সংগঠনগুলি তাঁকে সদস্যপদও দিয়েছে।
এ ছাড়াও নিকোলাওসের ঝুলিতে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ প্যারিসের মতো একাধিক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে তাঁর আরও একটি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করার কথা।
ক্যারিশমা ইউনিভার্সিটি থেকে মনোবিজ্ঞান এবং জনস্বাস্থ্য নিয়ে পিএইচডি করার পাশাপাশি হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের মতো নামী প্রতিষ্ঠান থেকেও নিকোলাওস ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিকোলাওসের গবেষণা বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় এবং বিশ্বের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর অগাধ জ্ঞান। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিকোলাওস বর্তমানে যে বিষয়গুলি নিয়ে গবেষণা করছেন, তা আগামী দিনে বিজ্ঞানের নতুন নতুন দিক খুলে দেবে।
শিক্ষাবিদ হিসাবে পৃথিবীতে খুব কম মানুষই আছেন, যাঁরা নিকোলাওসের সমকক্ষ বা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারবেন। বিজ্ঞান এবং কলা— এই দুই বিষয়েই নাকি তাঁর পাণ্ডিত্য অগাধ।
নিকোলাওস জনস্বাস্থ্য, চিকিৎসা গবেষণা, বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ফৌজদারি বিচার, বুদ্ধিমত্তা এবং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা-সহ একাধিক বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন।
একাধিক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন নিকোলাওস। বিভিন্ন সংস্থায় তাঁকে মোটা বেতনের বিনিময়ে পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে।
মানবদেহ এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে গবেষণার পাশাপাশি ব্যবসা নিয়েও পড়াশোনা করেছেন তিনি। তাই তাঁর গবেষণাপত্রগুলি পড়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন পড়ুয়া থেকে অধ্যাপক, সকলেই।
চিকিৎসক হিসাবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে নিকোলাওসের। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল থেকে ইমিউনোলজি, ফার্মাকোলজি, জেনেটিক্স, ক্যানসার জিনোমিক্স এবং কোভিডের মতো বিষয়ে তিনি পড়াশোনা করেছেন।
রক্তের মাত্রার উপর ভিত্তি করে নিকোলাওস এমন একটি খাদ্যতালিকা তৈরি করেছেন যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিক খুলে দেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নিকোলাওস বিভিন্ন বিষয়ে ৫০টিরও বেশি গবেষণাপত্র লিখেছেন। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্যনসার রোগ সংক্রান্ত। তাঁর গবেষণাপত্র প্রায়ই বিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়।
ইতিমধ্যেই চিকিৎসা বিষয়ে দু’টি বই লিখে ফেলেছেন নিকোলাওস।
নিকোলাওস এক জন মানুষ যিনি শিক্ষার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁর তৈরি অসরকারি সংস্থা দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়াদের অর্থসাহায্য করে।
নিকোলাওস বিশ্বাস করেন, নতুন নতুন ভাবনা এবং উদ্যোগ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির চাবিকাঠি। নতুন নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ তরুণ-তরুণীদের জন্য নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি করে।
পাশাপাশি নিকোলাওস এ-ও মনে করেন, বিশ্ব ক্রমাগত নতুন নতুন তথ্যের ভান্ডারে পরিণত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গবেষণা এবং আবিষ্কার হচ্ছে। আর উপযুক্ত শিক্ষা ছাড়া সে সব বোঝা সম্ভব নয়। সেই কারণেই প্রতিটি মানুষের উপযুক্ত শিক্ষা থাকা জরুরি বলে দাবি নিকোলাওসের।
উপযুক্ত শিক্ষা মানুষের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পড়ুয়াদের সমালোচনামূলক এবং সৃজনশীল চিন্তা করতে শেখায়। আর সেই কারণেও তিনি নিজেকে শিক্ষাক্ষেত্রে সঁপে দিয়েছেন বলে নিকলাওস জানিয়েছেন।