সম্প্রতি ব্রিটেন সফরে গিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই উপলক্ষে ঢেলে সাজানো হয়েছিল ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের বাসভবন তথা কার্যালয় ১০, ডাউনিং স্ট্রিট।
আলাদা আলাদা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সুনকের কার্যালয়ে কর্মরত আধিকারিকদের। বিশেষ দায়িত্ব পেয়েছিল ল্যারিও।
ল্যারির দায়িত্ব ছিল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ইঁদুরের উৎপাত বন্ধ করা। কিন্তু কে এই ল্যারি?
ল্যারি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের পোষা বি়ড়াল। ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের ‘চিফ মাউসার’ও বটে। অর্থাৎ, ল্যারির দায়িত্ব এলাকার ‘বেয়াদপ’ ইঁদুরদের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে দূরে রাখা।
এ ছাড়া আরও দায়িত্ব রয়েছে ল্যারির। ডাউনিং স্ট্রিটের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, আগত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানো এবং নিরাপত্তা প্রতিরক্ষা পরিদর্শন করার দায়িত্বও তাকে দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটেনে নির্বাচন আসে, নির্বাচন যায়। প্রধানমন্ত্রী বদলায়। বদলায় ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের গৃহকর্তাও। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে মার্জার-রাজ চলছে বিগত ১২ বছর ধরে।
ল্যারির জন্ম ২০০৭ সালে। ২০১১ সালে তাকে ‘ব্যাটারসি ডগস অ্যান্ড ক্যাটস হোম’ থেকে উদ্ধার করে ডাউনিং স্ট্রিটে নিয়ে আসা হয়।
ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং তাঁর স্ত্রী সামান্থার সন্তানদের সঙ্গে খেলা করার জন্য ল্যারিকে রাখা হয়েছিল।
পরে ব্রিটিশ ক্যাবিনেট অফিসে ল্যারিকে ‘চিফ মাউসার’ পদ দেওয়া হয়। ডাউনিং স্ট্রিটের কর্মীরাই দেখাশোনা করেন এই মেজাজি বিড়ালের।
২০১১ সালের ২২ এপ্রিল ডাউনিং স্ট্রিটো প্রথম ইঁদুর শিকার করেছিল ল্যারি। এর পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে একে একে অনেক ইঁদুর শিকার করেছে সে।
ল্যারি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। বরং তার দেখভাল করেন ডাউনিং স্ট্রিটের কর্মীরা।
ডেভিড ক্যামেরন ২০১৬ সালে জানিয়েছিলেন, ল্যারি ডাউনিং স্ট্রিটের সরকারি কর্মী। তাই প্রধানমন্ত্রী বদলালেও ল্যারি ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের পাকাপাকি সদস্য।
ল্যারি ‘চিফ মাউসার’ হওয়ার পর থেকে ডেভিড ক্যামেরন, থেরেসা মে, বরিস জনসন, লিজ় স্ট্রস এবং ঋষি সুনক— এই পাঁচ জন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে ল্যারির নিজস্ব অ্যাকাউন্টও আছে। সেই সব অ্যাকাউন্টে ফলোয়ারের সংখ্যাও বিপুল।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রাক্তন এবং বর্তমান প্রধানদের সঙ্গে ছবিও রয়েছে ল্যারির। ল্যারির সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলি হাতড়ালেই সেই সব ছবি দেখা যাবে।
২০১২ সালে ‘ব্যাটারসি ডগস অ্যান্ড ক্যাটস হোম’ এক বিবৃতি জারি করে জানায় যে, ল্যারির জনপ্রিয়তার কারণে ব্রিটেনে মানুষের বিড়াল পোষার পরিমাণ ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।