হার্দিক পাণ্ড্যকে নিয়ে জল্পনা চলছিল রবিবার বিকেল পর্যন্ত। গুজরাত না মুম্বই, কোন দলের জার্সি গায়ে তুলবেন তিনি? অবশেষে নাটক থেমেছে। স্পষ্ট হয়েছে, গুজরাত ছেড়ে মুম্বইয়ে যোগ দিয়েছেন হার্দিক।
গুজরাত তাদের ধরে রাখা ক্রিকেটারদের তালিকায় রেখেছিল হার্দিককে। পরে জানা যায়, মুম্বইয়ে সই করেছেন তিনি। চুক্তিও হয়ে গিয়েছে। রবিবার কোনও দল কিছু জানায়নি। সোমবার বেলায় সবটা পরিষ্কার হয়।
২০২২-এ হার্দিকের নেতৃত্বে গুজরাত আইপিএল জিতলেও ২০২৪ সালের আইপিএলে রোহিতের দলেই খেলবেন হার্দিক। ‘প্লেয়ার ট্রেডিং’-এর মাধ্যমে মুম্বইয়ে ফিরলেন হার্দিক।
কিন্তু ‘প্লেয়ার ট্রেডিং’ কী এবং তা কখন হয়, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে।
কোনও দল চাইলে আইপিএলের একটি মরসুম শেষে দলের কোনও খেলোয়াড়কে ‘ট্রেডিং উইন্ডো’তে রাখতে পারে। তখন অন্য কোনও দল চাইলে সেই খেলোয়াড়কে নিতে পারে। সহজ কথায়, একেই ‘প্লেয়ার ট্রেডিং’ বলে।
‘প্লেয়ার ট্রেডিং’ হতে পারে দু’ভাবে—টাকা দিয়ে কিনে বা খেলোয়াড় অদলবদল করে।
‘ট্রেডিং উইন্ডো’তে থাকা অন্য দলের খেলোয়াড়কে গ্যাঁটের কড়ি খসিয়ে কিনতে হলে, ওই খেলোয়াড়কে নিলামে যত টাকায় কেনা হয়েছিল, সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে একটি দলকে। টাকা পাবে ওই ক্রিকেটার আগে যে দলে ছিলেন, সেই দল।
ট্রেডিং উইন্ডোতে থাকা অন্য দলের খেলোয়াড়কে নিজেদের কোনও খেলোয়াড়ের বদলেও নিতে পারে কোনও দল। সে ক্ষেত্রে দুই খেলোয়াড়ের নিলামের দামের ফারাক জেনে অতিরিক্ত টাকা বেশি দামি ক্রিকেটার থাকা দলের হাতে তুলে দিতে হয়।
বিদেশি ক্রিকেটার ক্যামেরন গ্রিনকে আরসিবির কাছে বিক্রি করেছে রোহিতের দল। ফলে তাদের কাছে যে টাকা এসেছে তা দিয়ে গুজরাত থেকে হার্দিককে কিনেছে মুম্বই।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ক্যামেরন গ্রিনকে ১৭.৫ কোটি টাকা দিয়ে কিনেছিল। আরসিবিও একই পরিমাণ টাকা দিয়েছে মুম্বইকে।
অন্য দিকে, গুজরাত হার্দিককে কিনেছিল ১৫ কোটি টাকায়। সেই টাকা গুজরাতের হাতে তুলে দেবে মুম্বই। অর্থাৎ, সে ক্ষেত্রে মুম্বইয়ের পকেটে আরও আড়াই কোটি টাকা ঢুকবে। সেই টাকা চাইলে নিলামে ব্যবহার করতে পারবে মুম্বই।
নিয়ম অনুযায়ী, আইপিএল শেষের এক মাস পর থেকে ট্রেডিং উইন্ডো খোলা হয়। নিলামের এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত খোলা থাকে সেটি। নিলাম শেষের পরে আবার উইন্ডোটি খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তী মরসুম খেলা শুরুর এক মাস আগে পর্যন্ত সেই উইন্ডো খোলা থাকে।
আইপিএলের পরবর্তী নিলাম হবে ১৯ ডিসেম্বর। বর্তমান ট্রেডিং উইন্ডো ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত খোলা থাকবে। আবার ২০ ডিসেম্বর ট্রেডিং উইন্ডো খুলে দেওয়া হবে। বন্ধ হবে ২০২৪-এর আইপিএল শুরুর এক মাস আগে।
আইপিএলে ‘প্লেয়ার ট্রেড’ শুরু হয় ২০০৯ সালে। আশিস নেহরার বিনিময়ে ‘দিল্লি ডেয়ারডেভিলস’ (বর্তমানে দিল্লি ক্যাপিটালস) থেকে শিখর ধাওয়ানকে কিনেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী, লেনদেন করার আগে খেলোয়াড়ের সম্মতি থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু তারা কোনও দলের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলতে পারবেন না।
যদি কোনও এক দলের খেলোয়াড় অন্য দলে যেতে চান এবং তার দল তাঁকে যেতে না দেয়? সে ক্ষেত্রে কী হবে? খেলোয়াড় দলের সঙ্গে থাকবেন কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলই।
২০১০ সালে রবীন্দ্র জাডেজার আইপিএল খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন আইপিএল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ ছিল, রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর না করে মুম্বইয়ের সঙ্গে চুক্তি করার চেষ্টা করেছিলেন জাডেজা। ‘প্লেয়ার ট্রেডিং’-এর নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগে তাঁকে সে বছর খেলতে দেওয়া হয়নি।