স্বাধীনতার পর প্রথম বার পাকিস্তানে থাকা ভারতীয় দূতাবাসের মাথায় বসতে চলেছেন এক জন মহিলা। ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাসের প্রধান হচ্ছেন গীতিকা শ্রীবাস্তব।
গীতিকার আগে ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাসের দায়িত্বে ছিলেন এম সুরেশ কুমার। সুরেশের পর ইসলামাবাদে চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) হবেন গীতিকা। নয়াদিল্লি ফিরবেন সুরেশ।
ভারত এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের জেরে বর্তমানে উভয় দেশেরই দূতাবাসে কোনও কমিশনার নেই। সিডিএ-ই হল পাকিস্তানে থাকা ভারতীয় দূতাবাসের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার কূটনীতিক পদ।
গীতিকা এক জন ভারতীয় আমলা। ২০০৫ ব্যাচের ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস (আইএফএস) অফিসার তিনি।
গীতিকা বর্তমানে বিদেশ মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুগ্ম সচিবের পদে কর্মরত। তিনি এত দিন ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দায়িত্ব ছিলেন।
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গীতিকা বিদেশি ভাষা শিক্ষার অংশ হিসাবে ‘ম্যান্ডারিন’ শেখার পর তাঁকে সরকারের তরফে চিনের ভারতীয় দূতাবাসে পাঠানো হয়েছিল।
২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ভারতীয় কূটনীতিক হিসাবে চিনে কর্মরত ছিলেন গীতিকা।
অনেক দিন কলকাতার পাসপোর্ট অফিসেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন গীতিকা। দায়িত্ব পালন করেছেন ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভাগীয় ডিরেক্টর হিসাবেও।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের প্রথম ভারতীয় হাইকমিশনার হন শ্রী প্রকাশ। এর পর থেকে সেই পদে যাঁরা ছিলেন তাঁরা সকলেই পুরুষ। ১৯৪৭ সালের পর থেকে সেই পদে মোট ২২ জন ভারতীয় কূটনীতিক বসেছেন।
ইসলামাবাদে শেষ ভারতীয় হাইকমিশনার ছিলেন অজয় বিসারিয়া। ২০১৯ সালে ভারতে অনুচ্ছেদ ৩৭০ রদ করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ভারতীয় হাই কমিশনের মর্যাদা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পাকিস্তান। তখনই অজয়ের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
গীতিকার আগে ভারতের একাধিক মহিলা কূটনীতিক পাকিস্তানে দায়িত্ব পালন করলেও কেউ সর্বোচ্চ পদ পাননি।
ইসলামাবাদে থাকা ভারতীয় দূতাবাসে কাজ করা কঠিন বলে ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন আমলারা। কূটনীতিকদের পরিবার নিয়ে সে দেশে যাওয়ার অনুমতি দেয় না ভারত।
গীতিকা কবে ইসলামাবাদ গিয়ে ভারতীয় দূতাবাসে যোগ দেবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই পাকিস্তান উড়ে যেতে চলেছেন গীতিকা।
নয়াদিল্লির পাক দূতাবাসেও সম্প্রতি নতুন সিডিএ পাঠিয়েছে সে দেশের সরকার। কূটনীতিক সাদ আহমেদ ওয়ারাইচকে সিডিএ বানিয়ে দিল্লি পাঠিয়েছে পাকিস্তান।
এর আগে সাদ নিউইয়র্কে কর্মরত ছিলেন। সাদের আগে নয়াদিল্লিতে ছিলেন পাকিস্তানের সলমন শরিফ। তিনি গত মাসে ইসলামাবাদে ফিরে গিয়েছেন।