সংসারের জাঁতাকলে আটকে অনেকেই নিজেদের ‘প্যাশন’ ভুলে চাকরিকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। যা করতে মন থেকে ভাল লাগে, তা ধীরে ধীরে বিদায় নেয় জীবন থেকে।
তবে অনেকে এমনও রয়েছেন যাঁরা স্বপ্নের পিছনে ছুটে বেড়ান। সাফল্যও পান। মন থেকে যা করার ইচ্ছা করে, তা করে উপার্জনও করেন।
সে রকমই এক জন প্রিয়ঙ্কা গুপ্ত। ১০টা-৫টার চাকরি ছেড়ে নিজের ‘প্যাশন’কেই জীবিকা হিসাবে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকে তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
প্রিয়ঙ্কা পড়াশোনা করেছেন আইআইটি থেকে। কানপুর আইআইটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরি করেছেন বাইজুস এবং ওয়ালমার্টের মতো সংস্থায়।
চাকরি করার সময় দু’হাতে উপার্জন করেছেন প্রিয়ঙ্কা। তবে তাঁর আবেগ এবং আগ্রহের জায়গা ছিল শরীরচর্চা।
পাঁচ বছর চাকরি করার পরেই জীবন একঘেয়ে হয়ে উঠেছিল প্রিয়ঙ্কার কাছে। সিদ্ধান্ত নেন ব্যবসা খোলার।
যেমন ভাবা তেমন কাজ। বহুজাতিক সংস্থার চাকরি ছেড়ে দেন প্রিয়ঙ্কা।
তবে চাকরি ছাড়ার পরেও প্রিয়ঙ্কা প্রথমে বুঝতে পারেননি, ব্যবসায়ী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি কোন রাস্তায় হাঁটবেন।
প্রিয়ঙ্কা ঠিক করেন, বাড়িতে রান্না করা খাবার সরবরাহের ব্যবসা শুরু করবেন। সেই নিয়ে পড়াশোনাও করেন। কিন্তু শেষমেশ সাহসে কুলোয়নি। ফলে আবার একটি সংস্থায় চাকরি শুরু করেন।
কিছু দিন পর প্রিয়ঙ্কা আবার চাকরি ছাড়েন। ‘ইন্ডিয়াবুকস্টোর’ নামে একটি সংস্থা শুরু করেন। কিন্তু সেই ব্যবসা ডুবে যায়। সংস্থা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন তিনি।
এর পর অনেক ভেবে ‘ফিটনেস কোচ’ হিসাবে কাজ করা শুরু করেন প্রিয়ঙ্কা। পেশাদারদের সুস্থ জীবনযাপনের পরামর্শ দিতেই ছিল তাঁর উদ্যোগ।
শরীরচর্চা প্রশিক্ষক হিসাবে সাফল্য আসার পরেই প্রিয়ঙ্কা ঠিক করেন, শরীরচর্চা বিষয়ক একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন। করেও ফেলেন। সেই পথ ধরেও আসে সাফল্য।
বর্তমানে প্রিয়ঙ্কা এক জন প্রতিষ্ঠিত ‘ফিটনেস কোচ’। পাশাপাশি এক জন সফল ব্যবসায়ী। ইউটিউবে চ্যানেল রয়েছে তাঁর। ইনস্টাগ্রামেও প্রিয়ঙ্কার অনুরাগীর সংখ্যা চোখে পড়ার মতো।
সমাজমাধ্যম লিঙ্কডইনে প্রিয়ঙ্কা লিখেছেন, ‘‘আমি বহুজাতিক সংস্থা এবং আইআইটির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়েছি। এখন আমি পেশাদারদের সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করি। আইআইটির অন্য পড়ুয়াদের মতোই স্নাতক হওয়ার পরে আমি আর্থিক ভাবে সক্ষম হতে চাকরি শুরু করি।’’
প্রিয়ঙ্কা আরও লিখেছেন, “পাঁচ বছর চাকরির পর আমি প্রথম বিরতি নিয়েছিলাম। তখন আমি নিজের সংস্থা শুরুর সিদ্ধান্ত নিই। পরে আবার চাকরিতে যোগ দিয়েছিলাম। এখন আমি নিজের প্যাশনকেই কেরিয়ার হিসাবে বেছে নিয়েছি।’’