সদ্য মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ় ‘আরিয়া-৩’-এর সাফল্যে মজে অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন। ওয়েব সিরিজ়টির আগের দুই পর্বেও তাঁর অভিনয় সুনাম কুড়িয়েছিল।
অভিনেত্রী হিসাবে সব সময়ই দরাজ প্রশংসা পান সুস্মিতা। আলোচনা-সমালোচনায় বেশি থাকেন তাঁর প্রেমঘটিত সম্পর্কের জেরে।
একাধিক বার সম্পর্কে জড়িয়েছেন অভিনেত্রী। একাধিক বার বিয়ের মণ্ডপ অবধি যাবেন ভেবেওছেন। কিন্তু যাওয়া হয়নি। বলিউডের ‘ভাইজান’ সলমন খানের মতো সুস্মিতাও ‘এলিজিবল ব্যাচেলর’।
সুস্মিতা এমন এক জনের সঙ্গেও প্রেম করেছেন, যাঁর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়নি ঠিকই, কিন্তু তিনি সেই প্রেমিকের বিয়েতে ‘বেস্ট ম্যান’ (বরের সবচেয়ে কাছের বন্ধু) হিসাবে হাজির ছিলেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে গভীর ডুব দিয়েছিলেন প্রাক্তন ব্রহ্মাণ্ডসুন্দরী। তাঁর প্রথম প্রেমিক রজত তারা সম্পর্কেও জানিয়েছেন।
কেন তাঁর এবং রজতের সম্পর্ক টেকেনি, তা-ও খোলসা করেছেন সুস্মিতা।
সুস্মিতার বয়স তখন ১৭ কি ১৮ বছর। রজতের বয়স ২৩। তখনই একে অপরের সঙ্গে আলাপ, সেখান থেকে বন্ধুত্ব এবং বন্ধুত্ব গড়িয়ে প্রেম। শোনা যায়, রজতই নাকি সুস্মিতাকে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে জোর দিয়েছিলেন।
কিন্তু সুস্মিতা এবং রজতের সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। ১৯৯৪ সালে সুস্মিতা সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার পরেই তাঁদের সম্পর্কে ইতি পড়ে।
এই নিয়ে সুস্মিতাকে বিদ্রুপের শিকারও হতে হয়েছিল। সেই সময় অনেকে বলেছিলেন, সাফল্য পেতেই তিনি তাঁর প্রেমিককে ছেড়ে দিয়েছেন।
যদিও সুস্মিতা দাবি করেছিলেন, তাঁরা দু’জনে অনেক আলাপ-আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম ‘মিড ডে’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুস্মিতা বলেন, “রজত তারা খুব ভাল মানুষ। আমি খুব খুশি যে ও আমার প্রথম প্রেমিক। এই মানুষটির মতো উদারতা খুব কম মানুষের আছে। এখন সে এক কন্যার বাবা। আমি ওর বিয়েতে ‘বেস্ট ম্যান’ ছিলাম।’’
রজতের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানান, সেই সময় তিনি জীবনে রজতকে ছাড়িয়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিলেন। রজতও নাকি সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আর তাই অনেক আলোচনা করে তাঁরা দু’জনেই আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সুস্মিতা।
সুস্মিতা জানিয়েছেন, এখনও তাঁর এবং রজতের বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। রজতের বিয়ের জন্য অভিনেত্রী সার্বিয়া গিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছর জুলাই নাগাদ সুস্মিতা এবং শিল্পপতি ললিত মোদীর প্রেমের কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল সুস্মিতা ও ললিতের অন্তরঙ্গ কিছু ছবিও। সেই ছবি থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল তাঁদের রসায়ন।
যদিও জনসমক্ষে কোনও দিন ললিতের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি সুস্মিতা। ললিতের মতো ধনী শিল্পপতির সঙ্গে প্রেম করার জন্য তাঁকে কম কটাক্ষ শুনতে হয়নি। অভিযোগ ওঠে, তিনি নাকি টাকার লোভে ললিতের সঙ্গে প্রেম করছেন।
নিজের বিষয়ে এ ধরনের কটাক্ষ ছড়ানোর পর প্রাথমিক ভাবে নীরব থাকলেও তার পর সমাজমাধ্যমের পাতাতেই মুখ খুলেছিলেন সুস্মিতা।
সমাজমাধ্যমের পাতায় একটি পোস্ট করে সুস্মিতা লেখেন, ‘‘আমার বিষয়ে এত লেখা পড়ে আমি প্রথমে মজাই পেয়েছিলাম। তবে কাউকে ‘গোল্ড ডিগার’ বলার আগে সত্যিটা তো জেনে নিতে হবে। আমি হিরে বেশি ভালবাসি, সোনা নয়! আর আমার যদি কাউকে বিয়ে করার ইচ্ছা হত, তা হলে আমি এত দিনে বিয়ে করেই ফেলতাম। আমি চেষ্টায় বিরতি দিই না। আমি হয় কাজটা করি, না হলে করি না।’’
চলতি বছরের প্রথম দিকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন সুস্মিতা। চিকিৎসার পর জীবন ফিরে পেয়েছেন অভিনেত্রী। সেই সঙ্গে তাঁর জীবনে ফিরে এসেছেন তাঁর পুরনো প্রেমিক রোহমান শল।
২০১৮ সাল থেকে সুস্মিতার মনের মানুষ রোহমান। মাঝে বছর দুয়েকের জন্য দু’জনের মধ্যে মনোমালিন্য হলেও একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যাননি সুস্মিতা বা রোহমান কেউই।
চলতি বছরে সুস্মিতা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে ফের কাছাকাছি আসেন তাঁরা। বিচ্ছেদ ঘোষণার দু’বছরের মাথায় ফের ‘এক’ হয়েছেন যুগল। একসঙ্গে কাটিয়েছেন দীপাবলির উৎসব। তার সপ্তাহখানেক পরে ১৯ নভেম্বর ৪৮-এ পা দিলেন সুস্মিতা।