দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য মন্দির-মসজিদ-গির্জা। আরাধ্যকে শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন ধর্মস্থান, উপাসনালয় তৈরি করেছে আলাদা আলাদা ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়। কিন্তু কখনও কোথাও বিড়ালের মন্দির চোখে পড়েছে কি? অবিশ্বাস্য লাগলেও পৃথিবীর বুকে এমন এক মন্দির রয়েছে যেখানে পূজিত ‘মার্জারদেব’!
বিড়ালদের সম্মান জানাতে তৈরি এই মন্দির রয়েছে উদীয়মান সূর্যের দেশে। জাপানের কিয়োটোতে মন্দিরটি রয়েছে।
জাপানি ভাষায় এই মন্দিরের নাম ‘ন্যান ন্যান জি’। ইংরেজিতে একে ‘মিউ মিউ’ মন্দিরও বলা হয়।
এমন মন্দিরের কথা শোনার পর স্বাভাবিক ভাবেই মাথায় চিন্তা ঘুরবে যে, এমন একটা জায়গা না জানি কত বিড়ালের আস্তানা হবে। সত্যিই এই মন্দির অসংখ্য বিড়ালের বাস।
তবে তাজ্জবের বিষয় হল এই মন্দিরে এক জন পুরোহিতও আছেন। সেই পুরোহিতও এক বিড়াল। প্রধান পুরোহিতের আবার রয়েছে একাধিক সহকারী। তারাও সবাই বিড়াল।
‘মিউ মিউ’ মন্দিরের প্রধান বিড়াল সন্ন্যাসীর নাম ‘কোয়ুকি’। কিয়োটোর এই বিড়াল মন্দিরে প্রবেশ করলে দেখা মেলে কোয়ুকির। দু’পায়ে দাঁড়িয়ে এবং ল্যাজ নেড়ে অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতেও দেখা যায় তাকে।
কোনও দর্শনার্থী চাইলেই মন্দিরের অন্দরে গিয়ে বিড়াল-থিমযুক্ত মনপসন্দ খাবার এবং পানীয় অর্ডার করতে পারেন।
এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় কোয়ুকির মালিক বলেন, ‘‘২০১৬ সালে এই মন্দিরটি চিত্রশিল্পী তোরু কায়া চালু করেছিলেন। তাঁর প্রিয় বিড়ালের স্মরণে এই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল। তোরু কায়া মূলত মন্দিরের চিত্রশিল্পী ছিলেন।’’
‘মিউ মিউ’ মন্দিরে বিড়ালের অনেকগুলি মূর্তি এবং ছবি রয়েছে। মন্দিরে ভেট চড়ানোর ব্যবস্থাও রয়েছে। সেই ভেটসামগ্রী কিনতে পাওয়া যায় মন্দিরের ভিতরেই।
মন্দিরে কোয়ুকির সহকারী হিসাবে আরও ছ’টি বিড়াল কাজ করে। তারা হল ওয়াকা, চিন, আরুজি, রেন, কোনাতসু এবং চিচি।
কোয়ুকির মালিক জানান, মন্দিরে ঘুরতে আসা ‘পুণ্যার্থী’রা মাঝেমধ্যেই বিড়ালদের সঙ্গে খেলা করেন।
তিনি এ-ও জানান, কোয়ুকি-ই প্রথম বিড়াল পণ্ডিত নয় যে ‘মিউ মিউ’ মন্দিরের পুরোহিত হয়েছে। কোয়ুকির আগেও ওই মন্দিরে দু’জন পুরোহিত ছিল।
‘মিউ মিউ’ মন্দিরে অনেকগুলি বিড়াল থাকলেও মিশুকে স্বভাব এবং হাবভাবের কারণে কোয়ুকিই সকলের কাছে প্রিয়।
কারও যদি অদূর ভবিষ্যতে কিয়োটো যাওয়ার পরিকল্পমনা থাকে, তা হলে অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন ‘মিউ মিউ’ মন্দির থেকে।