মডেলিং থেকে কেরিয়ার শুরু। ১২ বছর আগে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন বলিপাড়ায়। সইফ আলি খান, নীল নীতিন মুকেশ, কুণাল খেমুর মতো বলি তারকাদের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগও পেয়েছিলেন। কিন্তু অভিনয়জগৎ থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে গেলেন বলি অভিনেত্রী পূজা গুপ্ত। কেন?
২০১১ সালে রেমো ডি’সুজ়ার পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ফালতু’। কমেডি ঘরানার এই ছবিতে কাজ করেই অভিনয়ে হাতেখড়ি হয় পূজার। আরশাদ ওয়ারসি, রীতেশ দেশমুখ, চন্দন রায় সান্যাল, বোমান ইরানি এবং মিঠুন চক্রবর্তীর মতো তারকাদের সঙ্গে এই ছবিতে অভিনয় করেন পূজা।
১২ বছরে কেরিয়ারে ১০টি ছবিতেও কাজ করেননি পূজা। তার আগেই সিনেমাজগৎ থেকে দূরে সরে যান তিনি।
১৯৮৭ সালের ৩০ জানুয়ারি দিল্লিতে জন্ম পূজার। বাবা-মায়ের সঙ্গে দিল্লিতেই থাকতেন তিনি। স্কুলে পড়তে পড়তেই মডেলিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন পূজা।
দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই বহু ফ্যাশন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ শুরু করেন পূজা। ২০০৭ সালে জাতীয় স্তরের একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন তিনি।
জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় জয়ের পর ভারতের তরফে মেক্সিকোয় গিয়ে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন পূজা। সেখানেও বিশ্বসুন্দরীদের তালিকায় প্রথম ১০ জনের মধ্যে নিজের নাম লিখিয়ে ফেলেন তিনি।
মডেলিংয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন পূজা। বিভিন্ন নামী সংস্থার বিজ্ঞাপনী প্রচারের মুখ হিসাবেও দেখা যেতে থাকে তাঁকে।
২০১১ সালে কমেডি ঘরানার ছবি ‘ফালতু’র হাত ধরে বড় পর্দায় প্রথম অভিনয় করেন পূজা। তার দু’বছর পর আরও একটি কমেডি ঘরানার ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
রাজ-ডিকে জুটির পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে ২০১৩ সালে মুক্তি পায় ‘গো গোয়া গন’। এই ছবিতে সইফ আলি খান, কুণাল খেমু এবং বীর দাসের সঙ্গে অভিনয় করেন পূজা। কমেডি ঘরানার ছবি হিসাবে দর্শকের প্রশংসা কুড়োয় এই ছবি।
২০১৩ সালেই আরও একটি হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান পূজা। সুশী গণেশন পরিচালিত এবং প্রযোজিত ক্রাইম-থ্রিলার ঘরানার ‘শর্টকাট রোমিয়ো’ ছবিতে নীল নীতিন মুকেশ এবং অমিশা পটেলের সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি।
‘শর্টকাট রোমিয়ো’ ছবিটি অবশ্য একটি তামিল ছবির হিন্দি অনুকরণ। ২০০৬ সালে ‘থিরুত্থু পায়ালে’ নামে একটি তামিল ছবি পরিচালনা করেন সুশী। সাত বছর পর আবার একই চিত্রনাট্যের অবলম্বনে ‘শর্টকাট রোমিয়ো’ পরিচালনা করেন তিনি।
‘শর্টকাট রোমিয়ো’ ছবিতে অভিনয়ের পর আবার দু’বছরের বিরতি। তার পর ‘হেট স্টোরি ৩’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান পূজা।
২০১৫ সালে বিশাল পাণ্ডের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘হেট স্টোরি ৩’। কর্ণ সিংহ গ্রোভার, শরমন জোশী, জ়ারিন খান, ডেজ়ি শাহ মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবির একটি গানে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান পূজা।
ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি মার্শাল আর্টসের প্রশিক্ষণও নেন পূজা। বর্তমানে ভারতের তরফে জার্মানির পর্যটন কেন্দ্রের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসাবে নিযুক্ত রয়েছেন পূজা।
২০১৯ সালে দীর্ঘকালীন প্রেমিক বরুণ তালুকদারের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন পূজা। বরুণ পেশায় এক জন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার।
বিয়ের পর আর বড় পর্দায় অভিনয় করতে দেখা যায়নি পূজাকে। ২০২০ সালে বিক্রম ভট্ট এবং মিকা সিংহের প্রযোজনায় মুক্তি পায় ‘ডেঞ্জারাস’ নামের একটি ওয়েব সিরিজ়। এই সিরিজ়ে বিপাশা বসু এবং কর্ণ সিংহ গ্রোভারের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় পূজাকে।
‘ডেঞ্জারাস’ ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয়ের পর যেন উধাও হয়ে যান পূজা। টানা তিন বছর কোনও ছবি বা ওয়েব সিরিজ়ে দেখা পাওয়া যায়নি অভিনেত্রীর।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ‘গো গোয়া গন’ ছবির দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে কাজ শুরু করেছেন ছবিনির্মাতারা। এই ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পূজাকে।
অভিনয় করতে দেখা না গেলেও সমাজমাধ্যমে যথেষ্ট সক্রিয় পূজা। অভিনেত্রীর অনুরাগী সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে পূজার অনুরাগী সংখ্যা ১৩ লক্ষের গণ্ডি পার করেছে।