সব কিছু পরিকল্পনামাফিক চললে মেয়ে আসিফা ভুট্টো জারদারিকে পাকিস্তানের ‘ফার্স্ট লেডি’ ঘোষণা করতে চলেছেন সে দেশের নতুন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। বিভিন্ন পাক সংবাদমাধ্যমে তেমনটাই দাবি করা হচ্ছে।
যদি সত্যিই তেমনটা হয়, তা হলে রীতি এবং ঐতিহ্য ভেঙে দিতে চলেছেন আসিফ। প্রেসিডেন্টের স্ত্রীকেই সাধারণত ‘ফার্স্ট লেডি’ তকমা দেওয়া হয়। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, নিজের কন্যাকে পাকিস্তানের ‘ফার্স্ট লেডি’ হিসাবে ঘোষণা করে রীতি ভাঙতে চলেছেন আসিফ।
আসিফ বিপত্নীক হওয়ার কারণেই তিনি ‘ফার্স্ট লেডি’র তকমা কন্যাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আসিফাই হবেন পাকিস্তানের প্রথম কোনও প্রেসিডেন্ট-কন্যা যিনি ‘ফার্স্ট লেডি’ হতে চলেছেন।
সূত্রকে উদ্ধৃত করে পাক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি ভাবে ঘোষণার পরে পাকিস্তানের ‘ফার্স্ট লেডি’ হওয়ার সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পাবেন আসিফা। তাঁকে সমস্ত প্রোটোকলও মেনে চলতে হবে।
কে এই আসিফা? আসিফা হলেন পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জ়ারদারি এবং পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর কনিষ্ঠ কন্যা। আসিফ এবং বেনজিরের অপর দুই সন্তান হলেন বিলাওয়াল এবং বখতাওয়ার।
আসিফার জন্ম ১৯৯৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। বড় হয়েছেন পাকিস্তানেই।
২০০৭ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন বেনজির। তখন আসিফার বয়স ১৪।
পাকিস্তানে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য অক্সফোর্ড ব্রুকস ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন আসিফা। এর পর ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এবং এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন।
২০২০ সালে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) একটি সমাবেশ থেকে পাকিস্তানের রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় আসিফার।
বর্তমানে পোলিও নির্মূলের লক্ষ্যে পাকিস্তানের দূত হিসাবে কাজ করছেন বেনজির-কন্যা।
রবিবার পিপিপির অন্যতম চেয়ারম্যান আসিফ পাকিস্তানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথগ্রহণ করেছেন। এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নিলেন তিনি।
আসিফই পাকিস্তানের প্রথম অসামরিক ব্যক্তি, যিনি দ্বিতীয় বারের জন্য পাক প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিলেন।
এর আগে, ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন আসিফ।
গত এক দশকে তিন সন্তানের মধ্যে আসিফের পাশে সব থেকে বেশি দেখা গিয়েছে ৩১ বছর বয়সি আসিফাকেই।
পাকিস্তানের সদ্য শেষ হওয়া সাধারণ নির্বাচনে দাদা বিলাওয়ালের জন্যও প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
পাক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমাজমাধ্যমে আসিফা সক্রিয়। প্রায়ই তাঁকে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডল এবং ফেসবুকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পোস্ট করতে দেখা যায়।
অন্য একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে পাকিস্তানের খানেওয়াল এলাকায় পিপিপির একটি মিছিলে দাদা বিলাওয়ালের সঙ্গে হাঁটছিলেন আসিফা। সেই সময় সংবাদমাধ্যমের একটি ড্রোন এসে তাঁকে আঘাত করে। তিনি আহত হয়েছিলেন। অবিলম্বে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এর পর তিনি আবার মিছিলে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেন।