মঙ্গলবার দ্বারকার সেক্টর-৩ এলাকায় বসতে চলেছে হরিয়ানার গ্যাংস্টার সন্দীপ ওরফে ‘কালা জাথেদি’র বিয়ের আসর। পাত্রীও গ্যাংস্টার। নাম অনুরাধা চৌধরি। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন সন্দীপ এবং অনুরাধা।
সন্দীপের দৌরাত্ম্য দিল্লি-হরিয়ানার বুকে হলেও অনুরাধা ‘রাজ’ করেন রাজস্থানে। তিনি ‘ম্যাডাম মিঞ্জ’ ওরফে ‘রাজস্থানের রিভলভার রানি’ ওরফে ‘লেডি ডন’ নামেও পরিচিত।
বর্তমানে জেলে বন্দি রয়েছেন সন্দীপ। মঙ্গলবার দিল্লির একটি আদালত বিয়ের জন্য তাঁকে প্যারোলে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। তাঁর বিয়েতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার নির্দেশও দিল্লি পুলিশকে দিয়েছে আদালত।
সন্দীপ যাতে বিয়ে করতে পারেন তার জন্য তাঁকে ৬ ঘণ্টার জন্য মুক্তি দিয়েছে আদালত। বিয়ে করে আবার তাঁকে ফিরে যেতে হবে জেলে।
অপরাধ জগতের ‘মুকুটহীন সম্রাট’ সন্দীপের হবু স্ত্রী অনুরাধাও কম নন। অনুরাধার জন্ম রাজস্থানের সিকারের আলাফসার গ্রামে। মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর বাবা তাঁকে বড় করেন। পড়াশোনা শেষ করে শেয়ার কেনাবেচায় মনোযোগ দেন অনুরাধা। ব্যবসাও পেতে বসেন।
তবে অনুরাধার জীবনে শীঘ্রই সঙ্কট নেমে আসে। ব্যবসা করতে গিয়ে কোটি টাকার ঋণে ডুবে যান। শোনা যায়, ব্যবসায়িক অংশীদারদের বিশ্বাসঘাতকার কারণেই ক্ষতির মুখে পড়েন অনুরাধা।
ঋণের বোঝা সামলাতে রাজস্থানের গ্যাংস্টার আনন্দপালের আশ্রয় নেন অনুরাধা। তার সঙ্গে কাজ করাও শুরু করেন। এই ভাবে অপরাধ জগতে পা পড়ে অনুরাধার।
শীঘ্রই ‘লেডি ডন’ এবং ‘ম্যাডাম মিঞ্জ’ তকমা জোটে অনুরাধার।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ে উত্তরাখণ্ডে সন্দীপের সঙ্গে আলাপ হয় অনুরাধার।
বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে পুলিশের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় তখনই নাম ছিল সন্দীপের। পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি।
অন্য দিকে, গ্যাংস্টার রাজু বাসৌদির হাত থেকে বাঁচতে অনুরাধাও তখন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
পুলিশ এবং শত্রুদের নজর এড়িয়ে সন্দীপ এবং অনুরাধা ন’মাস ধরে এক শহর থেকে অন্য শহরে ঘুরে উত্তরাখণ্ডের গাড়ওয়াল এলাকায় আশ্রয় নেন। সেখানেই দু’জনের প্রেম শুরু হয়। এর পর তাঁরা যেখানেই গা ঢাকা দিতে গিয়েছিলেন, একসঙ্গে গিয়েছিলেন।
তবে তাঁদের প্রেমকাহিনিতে ব্যাঘাত ঘটে ২০২১ সালের জুলাই মাসে। উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে সন্দীপ এবং অনুরাধাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সন্দীপ এবং অনুরাধার প্রেমকাহিনিতে ব্যাঘাত ঘটলেও প্রেমে ছেদ পড়েনি। দুই গ্যাংস্টারের অনুগামীরা জেলের মধ্যেও তাঁদের প্রেম চলতে থাকার বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন বলে শোনা যায়। প্রায় চার বছর প্রেমপর্ব সেরে এ বার বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিল গ্যাংস্টার যুগল।
শোনা যায়, সন্দীপ এবং অনুরাধার বিয়ের সমস্ত বন্দোবস্ত করেছেন গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই। তবে সেই তথ্য কতটা সত্য, তা নিয়ে চিন্তার অবকাশ রয়েছে।