দেশে ফাইভ জি পরিষেবা শুরু হতে চলেছে কয়েক মাসের মধ্যেই। এরই মাঝে রিল্যায়্যান্স জিয়ো সংস্থার চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী। এর দায়িত্ব পেলেন তাঁর পুত্র আকাশ। সংস্থার নন-এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ছিলেন তিনি।
২৭ জুন বোর্ড অব ডিরেক্টরসের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এত দিন বাবার পাশে থেকেই কাজ করেছেন আকাশ। কিন্তু এখন থেকে একা হাতে সামলাতে হবে সংস্থার দায়িত্ব।
২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী, তিনি আড়াই লক্ষ কোটি টাকার মালিক। মুম্বইয়ের ক্যাপিয়ন স্কুলে তাঁর পড়াশোনা। এর পর তিনি ধীরুভাই অম্বানী ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়েছেন। আকাশের দাবি, প্রাথমিক স্কুলজীবনে তাঁর কোনও ধারণা ছিল না যে, তিনি ভারতের সবচেয়ে ধনী পরিবারের সদস্য।
সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, তিনি একাদশ শ্রেণিতে পড়াকালীন রিল্যায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাস নিয়ে একটি রচনাও লিখেছিলেন।
পরবর্তীতে, অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করতে তিনি বিদেশে পাড়ি দেন। আমেরিকার রোডে আইল্যান্ড এলাকার ব্রাউন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করেন।
আমেরিকা থেকে ফিরে আসার চার দিন পরেই তিনি জিয়োর সঙ্গে যুক্ত হন। সেই সময় এই সংস্থায় ৬০ জন কাজ করতেন।
এক সময় যে স্টার্টআপ সংস্থার সঙ্গে তিনি যুক্ত হয়েছিলেন, ২০১৪ সালে সেই সংস্থারই বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সদস্য হন।
যদিও কর্মজগতে তাঁর হাতেখড়ি হয়েছে মা নীতা অম্বানীর মাধ্যমে। ক্রিকেট-ভক্ত হওয়ায় নীতা তাঁকে ‘মুম্বই ইন্ডিয়ানস’ সংক্রান্ত কাজ সামলানোর দায়িত্ব দেন। এখনও তিনি এই কাজের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
শুধু মাত্র ক্রিকেটই নয়, ফুটবল খেলারও ভক্ত তিনি। তাঁর প্রিয় দল আর্সেনাল। খেলাধুলো সংক্রান্ত বিভিন্ন স্মারক নিজের সংগ্রহে রাখেন আকাশ। তাঁর কাছে আর্সেনালের কয়েকটি জার্সি রয়েছে। এমনকি, ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে সুনীল গাওস্কর যে ব্যাট দিয়ে খেলেছিলেন, তা-ও সংগ্রহে রেখেছেন তিনি।
তাঁর বিলাসবহুল গাড়ির সংগ্রহও দেখার মতো। রোলস রয়েজ, মার্সিডিজ বেন্জ, বিএমডব্লিউ, রেঞ্জ রোভার সিরিজের বিভিন্ন গাড়ি কিনেছেন তিনি। প্রতিটি গাড়ির মূল্য তিন থেকে ছয় কোটি টাকা।
২০১৮ সালের মার্চে আকাশের সঙ্গে তাঁর ছোটবেলার বান্ধবী শ্লোক মেহতার আশীর্বাদ সম্পন্ন হয়। গোয়ার একটি বিলাসবহুল রিসর্টে তাঁদের আশীর্বাদের অনুষ্ঠান হয়েছিল।
ওই বছর ডিসেম্বর মাসেই তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্সের জিয়ো ওয়ার্ল্ড সেন্টারে তাঁরা বিয়ে করেন। এই অনুষ্ঠানে বলিউডের বহু তারকা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে সংস্থার নন-এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর পদ থেকে চেয়ারম্যান পদে তাঁর উঠে আসার ফলে দায়িত্বভারও বেড়েছে অনেক। অম্বানী-পুত্র কি বাবার দেখানো পথ অনুসরণ করেই চলবেন, নাকি জিয়ো নিয়ে তাঁর ভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে, সেটাই দেখার।