টিনসেল নগরীতে সফল হওয়া তারকাদের সংখ্যা খুব বেশি না হলেও বলিপাড়া থেকে কাজের অভাবে দূরে সরে যাওয়া নায়ক-নায়িকাদের সংখ্যাটা অনেক। দুর্ভাগ্যবশত, দ্বিতীয় তালিকার অন্তর্ভুক্ত ছিলেন কাঞ্চন।
এক সময় অক্ষয় কুমার, মিঠুন চক্রবর্তী, সলমন খান এবং গোবিন্দের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন কাঞ্চন। এখন তিনি বলিপাড়া থেকে শত হস্ত দূরে।
নব্বইয়ের দশকে একচেটিয়া অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে কাঞ্চনকে। মুম্বইয়ে জন্ম এই অভিনেত্রীর। মডেলিংয়ের পেশায় থাকলেও পরে অভিনয়ে নামেন তিনি।
১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সনম বেওয়াফা’ ছবিতে সলমন খানের বিপরীতে অভিনয় করে প্রচারে আসেন কাঞ্চন।
এর আগে অবশ্য ওয়াহিদা রহমান, সঞ্জীব কুমারের মতো তারকাদের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন কাঞ্চন। কিন্তু তাঁর পরিচিতি গড়ে ওঠেনি সে ভাবে। তার পর প্রায় দু’দশকের দীর্ঘ বিরতির পরে বড় পর্দায় ফিরে আসেন অভিনেত্রী।
সলমনের সঙ্গে ছবিতে কাজ করার পর অভিনয়ের পাশাপাশি কাঞ্চনের রূপ নিয়েও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিল দর্শক। অভিনেত্রীর চোখেমুখে যে সারল্য ফুটে উঠত তা নিয়ে আলোচনাও করতেন বলিপাড়ার অনেকে।
কাঞ্চন যে সময় অভিনয়ে নেমেছিলেন, তখন তাঁর সমসাময়িক অভিনেত্রী ছিলেন শ্রীদেবী, করিশ্মা কপূর, দিব্যা ভারতী প্রমুখ। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, কাঞ্চন খুব সহজেই তাঁর সমসাময়িক অভিনেত্রীদের সঙ্গে টক্কর দিতে পারতেন।
কিন্তু কালের নিয়মে বলিউড থেকে হারিয়ে যেতে থাকলেন কাঞ্চন। শ্রীদেবী এবং করিশ্মার মতো অভিনেত্রীরা সাহসী চরিত্রে কাজ করতে শুরু করে দিয়েছিলেন। অন্য দিকে, কাঞ্চন কোনও রকম সাহসী পোশাকে, সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করতে রাজি ছিলেন না।
ধীরে ধীরে কাঞ্চনের কাজ কমতে থাকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, অভিনেত্রীকে বাধ্য হয়ে কম বাজেটের ছবিতেও কাজ করতে হয়। তবে, এ ভাবে বেশি দিন কাটাতে পারেননি কাঞ্চন।
বলিপাড়া ছেড়ে দক্ষিণী সিনেমাজগতে চলে আসেন কাঞ্চন। ১৯৯৩ সালে ‘গান্ধর্ভম’ নামের মালয়ালম ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। মোহনলালের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল কাঞ্চনকে।
দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে গিয়েও শুরুর দিকে সমস্যার মুখে পড়েছিলেন কাঞ্চন। তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, ‘গান্ধর্ভম’ ছবির জন্য প্রযোজক প্রথমে রাম্য কৃষ্ণন, মীনা, দিব্যা ভারতী এবং রম্ভাকে পছন্দ করেছিলেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাঞ্চনকেই অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন ‘গান্ধর্ভম’ ছবির প্রযোজক। তার কারণ, বাকি অভিনেত্রীরা তখন হিন্দি ছবিতেও কাজ করছিলেন। তাই কাঞ্চনকে কাজের সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি।
‘গান্ধর্ভম’ ছবি হিট হওয়ার পর বহু তেলুগু ছবিতে অভিনয় করেছিলেন কাঞ্চন। মনোজ কুমারের সঙ্গে ‘অমানত’ এবং গোবিন্দের সঙ্গে ‘কুলি নম্বর ওয়ান’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
মিঠুন চক্রবর্তী, অক্ষয় কুমারের সঙ্গে একই ছবিতে কাজ করেছেন কাঞ্চন। শ্রীদেবীর ‘আর্মি’ ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। এই ছবিতে অতিথি শিল্পী হিসাবে দেখা গিয়েছিল শাহরুখ খানকে।
কিন্তু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি থেকেও হঠাৎ করে হারিয়ে যান কাঞ্চন। নেটদুনিয়াতেও কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না অভিনেত্রীকে। বর্তমানে তিনি কোথায় রয়েছেন, কী করছেন— সবকিছুই ধোঁয়াশা।