Sambhar Salt Lake

দেবীর আশীর্বাদে সোনা-রুপোয় ভরে এলাকা, দেবীর অভিশাপেই সব হারিয়ে লবণাক্ত হ্রদ হয় ‘শুক্রাচার্যের গ্রাম’

২০১৯ সালের নভেম্বরে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে সেই হ্রদ এবং সংলগ্ন এলাকায়। দেশি এবং পরিযায়ী মিলিয়ে সেখানে ১০ হাজারেরও বেশি পাখির মৃত্যু হয়। বেশ কয়েক দিন ধরে অব্যাহত ছিল পাখিদের মৃত্যুমিছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫ ১০:৩১
Share:
০১ ১৬
Sambhar Salt Lake

জয়পুর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সম্ভর লেক ভারতের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ লবণাক্ত হ্রদ। এটির পরিবেশগত গুরুত্বও রয়েছে। প্রতি বছর শীতকালে এখানে কয়েক হাজার পরিযায়ী পাখি আসে।

০২ ১৬
Sambhar Salt Lake

প্রতি বছর প্রচুর দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটক ওই হ্রদ পরিদর্শনে আসেন। সম্ভর হ্রদ পরিযায়ী পাখিদের অভয়ারণ্য হিসাবেও পরিচিত। তাই প্রচুর পাখিপ্রেমী প্রতি বছর ওই জায়গায় ভিড় জমান।

Advertisement
০৩ ১৬
Sambhar Salt Lake

তবে ২০১৯ সালের নভেম্বরে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে সেই হ্রদ এবং সংলগ্ন এলাকায়। দেশি এবং পরিযায়ী মিলিয়ে সেখানে ১০ হাজারেরও বেশি পাখির মৃত্যু হয়। বেশ কয়েক দিন ধরে অব্যাহত ছিল পাখিদের মৃত্যুমিছিল।

০৪ ১৬

প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করা হয়েছিল, এভিয়ান বচুলিজ়ম রোগ বা দূষণের কারণে পাখিগুলির মৃত্যু হয়েছিল। অনেকেই আবার পেয়েছিলেন রহস্যের গন্ধ।

০৫ ১৬

আর তা হবে না-ই বা কেন? যুগ যুগ ধরে পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম জায়গা ওই লবণাক্ত হ্রদকে ঘিরে তো রহস্য কম নেই।

০৬ ১৬

ওই হ্রদের উৎপত্তি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের বিশ্বাস, দেবী শাকম্ভরীর অভিশাপের কারণে তৈরি হয়েছে ওই হ্রদ। হ্রদ পরিদর্শন করার পর অনেকেরই আবার স্থানীয়দের সেই দাবি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়েছে।

০৭ ১৬

সম্ভরের এক দিকে রয়েছে এই বিশাল লবণাক্ত হ্রদ। অন্য দিকে রাস্তা থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে মিষ্টি জলের দেবযানী সরোবর রয়েছে। সেই সরোবরে পদ্মফুল ফোটে। কিন্তু কী ভাবে লবণাক্ত হ্রদের কাছেই এ রকম মিষ্টি জলের সরোবর রয়েছে এবং কী ভাবে সেখানে পদ্ম ফোটে, তা অনেককেই অবাক করে।

০৮ ১৬

মহাভারতেও সম্ভর হ্রদের উল্লেখ রয়েছে। দেবযানী তীর্থ সরোবরের প্রধান পুরোহিত হরিপ্রসাদ শর্মা সংবাদমাধ্যম নিউজ় ১৮-কে জানিয়েছেন, দেবী শাকম্ভরী বা শাকম্ভরীমাতা সম্ভর অঞ্চলের কুলদেবী। রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানও নাকি সেই দেবীর উপাসক ছিলেন বলে দাবি করেন অনেকে।

০৯ ১৬

কিংবদন্তি অনুযায়ী, বহু যুগ আগে সম্ভরের লবণাক্ত হ্রদের জায়গায় এক বনাঞ্চল ছিল। সেখানে বাস করতেন অনেক মানুষ। শাকম্ভরীমাতা তাঁদের ভক্তিতে প্রসন্ন হয়ে সেই বনাঞ্চল সমভূমিতে পরিণত করেন। পাশাপাশি, সম্ভরের বেশির ভাগ অংশকে সোনা এবং রুপোয় পরিণত করেছিলেন দেবী।

১০ ১৬

তবে যে সব এলাকা সোনা এবং রুপোয় রূপান্তরিত হয়নি, সেখানে নাকি শীঘ্রই বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে প়়ড়ে। ব্যাপক লুটপাট শুরু হয় চার দিকে। নগরবাসী শাকম্ভরীমাতাকে তাঁর আশীর্বাদ প্রত্যাহার করতে বলেন।

১১ ১৬

তখনই নাকি দেবী রুষ্ট হয়ে ওই অঞ্চলকে অভিশাপ দেন। লবণাক্ত হ্রদে পরিণত হয় সোনা এবং রুপোর সেই শহর। সেই রূপান্তরের ফলেই বর্তমান সম্ভর হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হয়।

১২ ১৬

সম্ভর নামটি দেবী শাকম্ভরীর নাম থেকেই এসেছে। লবণাক্ত হ্রদের ধারে শাকম্ভরী দেবীর একটি মন্দির রয়েছে।

১৩ ১৬

১৮৮৪ সালে সম্ভর হ্রদের কাছে ক্ষুদ্র পরিসরে খননকাজ চলাকালীন বেশি কয়েকটি প্রাচীন ভাস্কর্য আবিষ্কৃত হয়।

১৪ ১৬

একটি মাটির স্তূপের পাশাপাশি কিছু পোড়ামাটির কাঠামো, মুদ্রা এবং সিলমোহর পাওয়া গিয়েছিল। সম্ভর থেকে আবিষ্কৃত সেই ভাস্কর্য বৌদ্ধধর্ম দ্বারা প্রভাবিত ছিল বলে মনে হয়।

১৫ ১৬

পরবর্তী কালে, অর্থাৎ ১৯৩৪ সালে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে সম্ভর হ্রদের চার পাশে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চালানো হয়। সেই সময় প্রচুর পরিমাণে পোড়ামাটির মূর্তি এবং পাথরের জিনিসপত্রের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল সেখানে।

১৬ ১৬

সম্ভর থেকে পাওয়া ওই ভাস্কর্যগুলির বেশ কয়েকটি রাজস্থানের জয়পুরের অ্যালবার্ট হল জাদুঘরে রয়েছে। মহাভারতে সম্ভর হ্রদকে রাক্ষস রাজা বৃষ্পর্বের রাজ্যের অংশ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। পুরোহিত শুক্রাচার্যের বাস ছিল সেখানে। শুক্রাচার্যের কন্যা দেবযানী এবং রাজা যযাতির বিবাহও নাকি সেখানেই হয়েছিল।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement