২০২১-এর গোড়ার আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেত্রী কমলা হ্যারিস। এ বার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হলেন আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত, ঋষি সুনক।
শুধু ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসাবে নয়, ২০২০-র নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের ‘রানিং মেট’ হিসাবে জিতে কমলা আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ারও রেকর্ড গড়েছিলেন।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সে ক্ষমতাসীন কনজ়ারভেটিভ পার্টির এমপিদের সমর্থনে নির্বাচিত ৪২ বছরের ঋষিও একই সঙ্গে দু’টি রেকর্ড গড়েছেন।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত ৪২ বছরের ঋষি প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি ওই পদে নির্বাচিত সবচেয়ে কমবয়সি নেতা।
শুধু কমলা বা ঋষি নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্টের মতো পদে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা।
তালিকায় রয়েছেন পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টোনিও কোস্টা, গায়ানার প্রেসিডেন্ট মহম্মদ ইরফান, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ যুগনাউথের মতো পরিচিত রাষ্ট্রনেতারা।
ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মরিশাসের নাগরিকদের বড় অংশ ভারতীয় বংশোদ্ভূত। শুধু প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ নন, সেখানকার প্রেসিডেন্ট পৃথ্বীরাজ রুপুনও ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
২০১৭ সাল থেকে মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা পূর্বপুরুষেরা এসেছিলেন উত্তরপ্রদেশ থেকে। তাঁরা ছিলেন হিন্দু আহির জনগোষ্ঠীর মানুষ।
২০১৫ সাল থেকে পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা অ্যান্টোনিওর পূর্বপুরুষেরা ছিলেন পর্তুগিজ উপনিবেশ গোয়ার মানুষ। কোঙ্কনিতে অ্যান্টোনিওর নাম বাবুশ। যার অর্থ ‘ভালবাসার মানুষ’।
দক্ষিণ আমেরিকার ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র সুরিনামে ২০২০ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন চন্দ্রিকাপ্রসাদ সান্তোখি। ৬৩ বছরের এই প্রাক্তন পুলিশ অফিসার অবশ্য নিজের দেশে ‘চ্যান’ নামে পরিচিত।
দক্ষিণ আফ্রিকার আর এক দেশ, সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ গায়নার প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন আরও এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত, ৪২ বছরের মহম্মদ ইরফান আলি।
ঋষি বা অ্যান্টোনিওর মতো শীর্ষ পদে না হলেও এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত ১৫টি দেশের অর্ধশতের বেশি ভারতীয় মন্ত্রী রয়েছেন বলে সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্ত্রীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশে।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে ব্রিটেনে অর্থমন্ত্রীর পদ সামলেছেন ঋষি। ওই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা গিয়েছে প্রীতি পটেল, সুয়েল্লা ব্রেভারমানের কনজ়ারভেটিভ নেত্রীদের।
গত জুলাইয়ে বরিস জনসনের ইস্তফার পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদের লড়াইয়ে নেমেছিলেন ঋষি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লিজ় ট্রাসের কাছে ভোটাভুটিতে হেরে যান তিনি। এ বার কনজ়ারভেটিভ পার্টির এমপিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের সমর্থনে ঋষি প্রধানমন্ত্রী হলেন।