লাদাখে চিনা সেনাকে রুখে দিলেন ভারতীয় পশুপালকেরাই। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে পশুপালনে বাধা দিচ্ছিল চিনা সেনা, আর তখনই রুখে দাঁড়ান স্থানীয়রা।
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-র কাছে পশুচারণে বাধা দিয়েছিল চিনা সেনা। রুখে দাঁড়ালেন ভারতীয় পশুপালকেরা। স্পষ্ট জানালেন, ভারতীয় ভুখণ্ডেই রয়েছেন তাঁরা।
সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি। ভিডিয়ো দেখে পাশুপালকদের সাহসের প্রশংসা করেছেন অনেকেই।
পূ্র্ব লাদাখে যাযাবরদের মূল জীবিকা পশুপালন। ভারত এবং চিনের মাঝে সীমান্তরেখা এলএসির কাছের জমিতে পশু চরাতে নিয়ে যান তাঁরা।
গত তিন বছর ধরে পূর্ব লাদাখে এলএসির কাছে পশু চরাতে আর নিয়ে যান না স্থানীয়েরা। সম্প্রতি ফের সেই এলাকায় পশু চরাতে যাচ্ছেন তাঁরা।
চিনের সেনা বাধা দিতে এলে পাল্টা জবাব দেন তাঁরা। মনে করিয়ে দেন, ওই এলাকায় পশুচারণ তাঁদের অধিকার।
ভিডিয়োটি জানুয়ারির শুরুর দিকে তোলা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে চিনা সেনার অন্তত তিনটি সাঁজোয়া গাড়ি, বেশ কয়েক জন জওয়ান রয়েছেন। তাঁরা যাযাবরদের ওই জায়গা থেকে চলে যেতে বলেন।
যাযাবরেরা সে সবে কান দেননি। ভিডিয়োতে তাঁদের বচসা করতে দেখা গিয়েছে। পশুপালকেরা জোর গলায় জানান, ভারতীয় ভূখণ্ডেই রয়েছেন তাঁরা।
বিবাদ চরমে উঠলে কয়েক জন পশুপালক হাতে ইট তোলার চেষ্টা করেন। তবে তা কাউকে ছুড়ে মারেননি।
যাযাবরদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে চুশুলের কাউন্সিলর কনচক স্টানজিন। তাঁদের সমর্থন করার জন্য ভারতীয় সেনাকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ তিনি লিখেছেন, ‘‘পূর্ব লাদাখে প্যাংগংয়ের উত্তর পারে পশুচারণ নিয়ে সরব হয়েছেন পশুপালক এবং যাযাবররা। তাঁদের অধিকার রক্ষায় সাহায্য করেছে সেনাবাহিনী। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের স্বার্থরক্ষা এবং স্থানীয়দের সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ভারতীয় সেনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি।’’
অন্য একটি পোস্টে ওই ঘটনার ভিডিয়ো দিয়েছেন স্টানজিন। তাতে লিখেছেন, ‘‘পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র সামনে স্থানীয়েরা কী ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছেন, দেখুন। আমাদের ভূখণ্ডেই আমাদের যাযাবরদের পশুচারণে বাধা দিচ্ছে পিএলএ। ভিন্ন মতামতের কারণে এই নিয়ে সুরাহার প্রক্রিয়া কখনওই শেষ হওয়ার নয়। কিন্তু আমি যাযাবরদের কুর্নিশ জানাই, যাঁরা সব সময় আমাদের জমি রক্ষায় সচেষ্ট। আমাদের দেশের দ্বিতীয় অভিভাবক বাহিনী।’’
২০২০ সালের জুন মাসে গালওয়ানে ভারত এবং চিন সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তাতে মারা গিয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। চিন দাবি করে, তাদের চার জন সেনা মারা গিয়েছেন। যদিও মনে করা হয়, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি।
তার পর থেকে দুই দেশের সামরিকস্তরে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। তবে রফাসূত্র পুরোপুরি মেলেনি। একটি সংবাদ মাধ্যমকে সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে জানিয়েছেন, এলএসির কাছে পরিস্থিতি ‘স্থিতিশীল হলেও উত্তেজনাপ্রবণ’। এই পরিস্থিতিতে চিনের সেনা পশুচারণে বাধা দিলে রুখে দাঁড়ালেন স্থানীয়েরাও।