সমাজমাধ্যমের যুগে পান থেকে চুল খসলেই জনতার রোষে পড়তে হয় তারকাদের। সে তাঁদের কোনও বক্তব্য নিয়ে হোক, পোশাক বা তাঁদের কোনও কাজ নিয়ে হোক। বিতর্ক ও জল্পনার হাত থেকে রক্ষা পাননি অস্কারজয়ী সুরকার এআর রহমানও।
২০২৩ সালে মুক্তি পায় ম্রুণাল ঠাকুর ও ঈশান খট্টর অভিনীত ‘পিপ্পা’। ছবিটি সমাজের নানা স্তরে বেশ আলোচিত ও সমালোচিত হয়। তবে ছবির থেকেও বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল একটি নজরুলগীতির নতুন রূপ।
২০২৩ সালের অন্যতম বিতর্কিত বিষয়টি ছিল কাজী নজরুলের গান ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’-এর নবরূপ। যে গানটি নতুন ভাবে সুর দিয়ে তৈরি করেছিলেন রহমান।
‘পিপ্পা’ ছবিতে ব্যবহৃত এই গান প্রকাশ্যে আসার পর নজরুল ভক্তদের সমস্ত ক্ষোভ গিয়ে পড়ে তাঁর উপর। প্রশ্ন তোলেন নজরুল পরিবারের একাংশও।
সেই বিতর্কের পর সে ভাবে সুরকারকে দেখেননি অনুরাগীরা। এ বিষয়ে কোথাও কোনও মন্তব্যও করেননি তিনি। তবে নতুন বছরে শোনা গেল তাঁর মন্তব্য।
না, তবে এ বারেও সেই বিতর্ক নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে ‘দ্য অক্সফোর্ড ইউনিয়ন ডিবেটিং সোসাইটি’র ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন গায়ক।
তাদের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে উঠে আসে অনেক ধরনের বিষয়। সেখানেই গায়ক জানান, তাঁর মা শিখিয়েছিলেন, কী ভাবে ব্যর্থতার মুখোমুখি হতে হয়।
অন্ধকার সময়, নেতিবাচক ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসার কথাও জানিয়েছিলেন তাঁর মা। জানান, জীবনে একটা সময় নানা ধরনের উল্টোপাল্টা খেয়াল আসত তাঁর মাথায়।
ছোটদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মায়ের দেওয়ার পরামর্শ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন রহমান।
তিনি বলেন, “ছোট বয়সে অনেক সময় নিজেকে শেষ করে ফেলার ভাবনা এসেছে আমার মাথায়। সেই ভাবনা থেকে নিজেকে বার করার জন্য আমায় অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সে সময় মা আমায় বলেছিল, যখন আমি অন্যের জন্য বাঁচব তখন আর এ সব ভাবনা আমার মাথায় আসবে না।”
মায়ের সেই কথাগুলো গায়ক এখনও ভোলেননি। এই পরামর্শ এখনও প্রতিটা পদক্ষেপে মেনে চলেন তিনি।
গায়ক মনে করেন, স্বার্থপর না হয়ে অন্য কারও জন্য বাঁচলে তবেই সেটাকে জীবন বলে। কারও জন্য সুর বাঁধা হোক কিংবা কারও জন্য খাবার কেনা— নিজের জন্য না ভেবে চারপাশের মানুষের কথা মানলে কখনও নেতিবাচক চিন্তাভাবনা মনকে প্রভাবিত করে না।