৩৭ বছরের যুবক স্বামীর সঙ্গে যৌনজীবনের কথা প্রকাশ্যে এনে হইচই ফেলেছিলেন ইংল্যান্ডের সমারসেটের অশীতিপর বৃদ্ধা আইরিস জোনস। বিয়ের প্রায় তিন বছরের মধ্যে যুবক স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানলেন তিনি।
২০১৯ সালে মিশরের কায়রোর যুবক মহম্মদ ইব্রিহামের সঙ্গে আলাপ হয় ফেসবুকে। ফেসবুকে তৈরি হওয়া বন্ধুত্ব শীঘ্রই প্রেমে পরিণত হয়। আইরিসে মন মজে ইব্রিহামেরও।
২০২০ সালের নভেম্বরে বিয়ে করেন আইরিস এবং ইব্রিহাম। যুগলের প্রেম এবং বিয়ের কাহিনি দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমের নজর কেড়েছিল সে সময়।
অসম প্রেমের কারণে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন আইরিস এবং ইব্রিহাম। সেই সব শোয়ে নিজেদের প্রেম থেকে শুরু করে যৌনজীবন— সব বিষয়েই অকপট ছিলেন যুগল।
তবে বিয়ের তিন বছর পার হতে না হতেই একে অপরের থেকে দূরে সরেছেন যুগল। সম্প্রতি বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে আইরিস এবং ইব্রিহামের।
বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যম ‘ক্লোজার’কে আইরিস বলেন, ‘‘আমি ইব্রিহামের সব কিছু পছন্দ করতাম। আমাদের যৌনজীবন দুর্দান্ত কাটছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে আমাদের সম্পর্ক জটিল হতে শুরু করল। আমরা প্রেম করার পরিবর্তে সব কিছু নিয়ে তর্ক করতে শুরু করেছিলাম। আমি সেটা মানতে পারছিলাম না। আর সেই কারণেই ইব্রিহামকে ছেড়েছি।’’
আইরিস জানিয়েছেন, তিনি এখন তাঁর পোষা বিড়ালের সঙ্গে জীবন উপভোগ করছেন। আইরিসের কথায়, ‘‘মহম্মদ চলে যাওয়ার ক’দিন পরেই আমি বিড়ালটিকে খুঁজে পাই। বিড়ালটি আমার অন্তরঙ্গ সঙ্গী। ও কোনও কিছু নিয়ে অভিযোগ করে না। খুব শান্ত। দেখতেও খুব সুন্দর।’’
আইরিস জানিয়েছেন, তিনি খুশি যে তাঁর পোষা বেড়াল ইব্রিহামের মতো কোনও সমস্যা তৈরি করে না। প্রাক্তন স্বামীকে চোখে হারাচ্ছেন না বলেও আইরিস জানিয়েছেন।
ইব্রিহামের উপর তিনি বিরক্ত বলেও আইরিস জানিয়েছেন। তিনি জানান, ইব্রিহাম বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সময় তাঁর রাতের খাবারটা পর্যন্ত নিয়ে চলে গিয়েছিলেন। আর তা দেখে তিনি মনে মনে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন আইরিস।
এই দম্পতির বিচ্ছেদে শোকপ্রকাশ করেছেন তাঁদের অনুরাগীরা। অনেকের মতে, ইব্রিহাম টাকার জন্য বিয়ে করেননি আইরিসকে, ভালবেসে করেছিলেন। তা হলে কী ভাবে দু’বছরের মধ্যেই তাঁদের ভালবাসা শেষ হল!
বিয়ের পর ইব্রিহাম অবশ্য স্বীকার করেছিলেন, সমারসেটের ওয়েস্টন সুপার মেরে পাকাপাকি ভাবে বাস করতে চাইছিলেন তিনি। কিন্তু থাকার অনুমতি পেতে হলে ওখানকার কোনও স্থায়ী বাসিন্দাকে বিয়ে করতে হবে। আর সেই কারণেই তিনি আইরিসকে বিয়ে করেছিলেন। তবে সেই বিয়ে ভালবাসা থেকে হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।
আইরিসকে বিয়ে করার পর ২০২১ সালে ইব্রিহামকে সরকারের তরফে তিন বছরের ভিসা দেওয়া হয়েছিল।
২০২০ সালে সংবাদমাধ্যমে ইব্রিহাম দাবি করেছিলেন, কেউ যদি তাঁর এবং আইরিসের সম্পর্ক নিয়ে সন্দীহান হয়ে থাকেন, তা হলে সেই সন্দিগ্ধ ব্যক্তির ‘জাহান্নমে’ যাওয়া উচিত।
ইব্রিহাম বলেছিলেন, ‘‘ভালবাসার বয়স হয় না। প্রেমকে কোনও সীমান্ত বেঁধে রাখতে পারে না। আইরিস আমাকে বেছে নিয়েছে এবং আমি আইরিসকে বেছে নিয়েছি।’’
ইব্রিহাম আরও বলেন, ‘‘আমাদের ভালবাসা নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তোলেন, তাঁদের বিষয়টিতে নাক না গলানোর অনুরোধ করব। হয় নিজেদের চরকায় তেল দিন, না হলে জাহান্নমে যান।’’
ইব্রিহাম জানিয়েছিলেন, সংবাদমাধ্যমে তাঁকে বিভিন্ন ভাবে অপমান করা হয়। এই সব শুনে তাঁর কষ্ট হয় বলেও তিনি দাবি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘লোকে মনে করি আমি আইরিসের খেলনা। কিন্তু আমি এক জন মানুষ। কোনও পুতুল নই। দয়া করে এ সব বলা বন্ধ করুন।’’
আইরিসের কত টাকা রয়েছে বা তিনি কতটা ধনী, তা দেখে তিনি বিয়ে করেননি বলে দাবি করেছিলেন ইব্রিহাম। পৃথিবীর যে কোনও দেশে তিনি আইরিসের সঙ্গে কাটাতে পারবেন বলেও ইব্রিহাম জানিয়েছিলেন।
এত প্রেম-ভালবাসার কথা বলেও বিচ্ছেদ হয়েছে আইরিস-ইব্রাহিমের। নিন্দকদের মতে, ইব্রিহাম নাকি নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আইরিসকে বিয়ে করেছিলেন। আর তা বুঝতে পেরেই নাকি ইব্রিহামের জায়গায় পোষ্য বিড়ালকে মনে জায়গা দিয়েছেন আইরিস।