ডোভার লেন যাচ্ছে, রদ্যাঁও দেখছে

সংস্কৃতি বাঙালির রক্তে। সে ভাল খাওয়াদাওয়া, স্বচ্ছন্দ জীবন যাপনের চেয়ে অনেক বেশি দর দেয় সংস্কৃতিচর্চাকে। এটাই আমার সবচেয়ে প্রিয়। এই ‘কালচার লাভিং বাঙালিই’ আমায় খুব টানে। অনেকে ভেবে বসতে পারেন, বাঙালির শুধু বাংলা সংস্কৃতি-প্রীতির কথাই আমি বলছি। মোটেও না। বাঙালি যে কোনও সংস্কৃতির প্রতিই উৎসুক। আর এটাই বাঙালির ইউএসপি।

Advertisement

শুভা মুদগল

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০০
Share:

সংস্কৃতি বাঙালির রক্তে। সে ভাল খাওয়াদাওয়া, স্বচ্ছন্দ জীবন যাপনের চেয়ে অনেক বেশি দর দেয় সংস্কৃতিচর্চাকে। এটাই আমার সবচেয়ে প্রিয়। এই ‘কালচার লাভিং বাঙালিই’ আমায় খুব টানে। অনেকে ভেবে বসতে পারেন, বাঙালির শুধু বাংলা সংস্কৃতি-প্রীতির কথাই আমি বলছি। মোটেও না। বাঙালি যে কোনও সংস্কৃতির প্রতিই উৎসুক। আর এটাই বাঙালির ইউএসপি।

Advertisement

খেয়াল করলে দেখবেন, সবচেয়ে নামকরা হাতে-গোনা যে ক’টা শাস্ত্রীয় সংগীতের সম্মেলন হত সারা ভারতে, তার মধ্যে কলকাতায় হত অনেকগুলোই। সারা রাত বসে বিশ্বের তাবড় শাস্ত্রীয় সংগীতের ওস্তাদদের সংগীতের রস যেমন নিয়েছে বাঙালি, তেমনই পিট সিগার-এর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আবার, রদ্যাঁ-র এগজিবিশন দেখতে গেছে বাচ্চার হাত ধরে। লাইনে বাচ্চা দেখে অনেকে হয়তো ফুট কেটেছেন। কিন্তু আমি জানি, ওই বাচ্চার অবচেতনে আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির বীজ তখনই এক মধ্যবিত্ত বাঙালি বাবা রোপণ করেছেন। অনেকেই বোধ হয় জানেন না, শাস্ত্রীয় সংগীত রচনার প্রথম দিকের বহু বন্দিশ রচিত হয়েছে বাংলায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগেও সংগীতকে বিশ্বজনীন করে তুলেছিলেন ঠাকুর পরিবারের আর এক জন সংগীত-সাধক— সৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুর। নানা ধরনের ভারতীয় বাদ্যযন্ত্র সম্পর্কে ছিল তাঁর অগাধ জ্ঞান। তিনি তাঁর বাদ্যযন্ত্রের সংগ্রহ নিয়ে বিদেশে বহু প্রদর্শনী করেছেন।

এই বিষয়ে তাঁর বইও রয়েছে। আমার ধারণা, এখনও বাঙালিরা বোধহয় বই পড়তে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে। এত বড় বইমেলা ভারতে আর কোথাও হয় কি না, বা হলেও এত লোক সেখানে উৎসবের মতো যোগ দেয় কি না, জানা নেই। বইয়ের জন্য রাস্তা জ্যাম কিংবা বইয়ের জন্য বাস রুট চেঞ্জ, এ বোধহয় বাঙালিরাই পারে।

Advertisement

এই যে সংস্কৃতির প্রতি নেশা, এটাই বাঙালিকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে রাখে। যুগ মিলিয়ে সবই বদলাবে, সেটাই প্রথা। কিন্তু যতই বদলাক, বেসিকটা ঠিকই থাকবে। আর বাঙালির সব ধরনের সংস্কৃতি-প্রীতি থেকে যাবে, সেটা একটা বড় ভরসা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement