প্রতীকী ছবি
গৃহঋণের সঠিক পরিমাণ কত? এই প্রশ্নটি শুধু অর্থনীতি সংক্রান্তই নয়, বরং সংস্কৃতি সংক্রান্তও। এক জন গড়পড়তা মার্কিন নাগরিক এক জন গড়পড়তা জাপানি নাগরিকের তুলনায় অনেক বেশি ঋণের বোঝা নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে উভয়েই গত ৪ দশকে আর্থিক ভাবে সমৃদ্ধ হয়েছেন। ঠিক সে রকম ভাবেই, ভারতের অন্যান্য জাতির তুলনায় বাঙালিদের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কম। আর্থিক অবস্থার যখন অবনতি হয়, তখন সামাজিক সমর্থন কম থাকে এবং ঋণ পরিশোধ না করতে পারার লজ্জা বাঙালিদের ভীষণ ভাবে প্রভাবিত করে। তাই অন্যান্য জাতির তুলনায় গড়পড়তা বাঙালির ঋণের পরিমাণ অনেক কম থাকে বা থাকে না বললেই চলে।
কিন্তু ঋণ না করে কী ভাবে সঞ্চয় বাস্তবায়িত করা যায়? পরিবারে যা উপার্জন হয়, তার থেকে ব্যয় অনেক কম করে, আধুনিক ভোগবাদের ফাঁদে পা না দিয়ে এবং বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য ঋণ নেওয়া এড়িয়ে গিয়ে একটি পরিবার গৃহঋণের বোঝা থেকে মুক্ত হতে পারে। এই সঞ্চয়গুলোই নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় খরচ এবং ভবিষ্যতের জন্য ব্যয়, যেমন সন্তানের পড়াশোনা এবং বিয়ের পরিকল্পনা করার সময়ে কাজে আসবে।
যেহেতু সঞ্চয় হল স্বচ্ছন্দ ভাবে ভবিষ্যৎ জীবনের পথ চলার পেট্রল, তাই কোথা থেকে কীভাবে সঞ্চয় করতে হবে, সেই ব্যাপারে পরিবারকে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। মুদ্রাস্ফীতি হওয়ার আগেই প্রয়োজনমতো সঞ্চয় করে রাখা জরুরি।
অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা পরিবারকে মাথায় রাখতে হবে, তা হল - ঋণের ফাঁদ এড়িয়ে চলা। সাধারণত, একটি পরিবার ১০ বারের মধ্যে ৯ বারই চিকিৎসাজনিত সঙ্কটের কারণে ঋণের ফাঁদে পড়ে। তাই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিমা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
আগের ঋণ শোধ করার জন্য আবার ঋণ নেওয়াও ঋণের ফাঁদের মধ্যেই পরে। এই চক্রটি প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে সঞ্চয় বাড়ানো দরকার। শুধু তাই নয়, বন্ধু ও পরিবারের সাহায্য নিয়ে ঋণের চাপে নড়বড়ে পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা জরুরি।
এই প্রতিবেদনটি ‘টাকা টক্’ ফিচারের অংশ।