Retirement Plan

Retirement plans: অবসর নিয়েছেন বলে কর বাঁচানোর সুযোগের সঞ্চয় প্রকল্প থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না

মধ্য-চল্লিশে বা পঞ্চাশের সামান্য ওপাশে পৌঁছে যদি কোনও কারণে অবসর নিতে হয়, তা হলে একটি অসম লড়াইয়ের জন্য তৈরি থাকুন।

Advertisement

নীলাঞ্জন দে

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

সময়ের আগে অবসর (আর্লি রিটায়ারমেন্ট) নিয়ে চিন্তা প্রায় বিশ্বজোড়া। আগে তা-ও যা খানিকটা স্বেচ্ছাবসর ছিল, এখন সেটাই কিছুটা গতানুগতিক। এমনকি, চাপে পড়েও।

Advertisement

আশেপাশে তাকালেই দেখবেন কর্মঠ মানুষ, খাটার বয়স পেরিয়ে যায়নি, কিন্তু অবসর নিচ্ছেন। বা নিতে বাধ্য হয়েছেন। ‘স্বেচ্ছায়’ না ছাড়লে আপনাকে যা বেতন দেওয়া হয়, তার চেয়ে কম দিয়ে দুই বা তিনজন অল্পবয়সীকে কোম্পানি চাকরি দেবে কী করে? সময় থাকতে থাকতে ভিন্ন কোনও ‘স্কিল’ তৈরি করুন বা বিকল্প পেশার সন্ধান করুন ইত্যাদি পরামর্শ পেলেও সেগুলো সবাই করে উঠতে পারেন না।
মধ্য-চল্লিশে বা পঞ্চাশের সামান্য ওপাশে পৌঁছে যদি কোনও কারণে অবসর নিতে হয়, তা হলে একটি অসম লড়াইয়ের জন্য তৈরি থাকুন। সুচারুভাবে বিনিয়োগ না করে থাকলে, পরিকল্পনায় ফাঁক থাকলে কপালে দুঃখ আছে বলাই বাহুল্য।

হাতে অনেক সময়, ঠিক কিছু-না-কিছু করে নেব— এমন চিন্তার স্থান আজকাল আর নেই। যথাসম্ভব আগে শুরু করে পরিলপ্নামাফিক বিনিয়োগ মারফত সম্পদ বৃদ্ধি করুন— এই পরামর্শেও আর নতুনত্ব কিছু নেই। তাই সে সবের পুনরাবৃত্তি না করে কেবল দু-একটি সাধারণ ভুলচুক যাতে না হয় সে ব্যাপারে জানানো যেতে পারে।

Advertisement

সময়ের আগে অবসর নিন বা না-নিন, ‘লিকুইডিটি’ কখনওই একেবারে ১০০ ভাগ বর্জন করবেন না। আপনার আ্যসেটের অন্তত কিছুটা যেন সহজেই বিক্রি করে দেওয়ার মতো হয়। ক্যাশ, ফান্ড, স্টক, কমোডিটি ইত্যাদিতে লগ্নি করা থাকলে ভাল। কারণ, এগুলি থেকে সহজেই বেরিয়ে আসার রাস্তা আছে। অসুবিধে হয় বাড়ির মতো স্থাবর সম্পত্তি নিয়ে। বাজারে দাম নেই, ক্রেতার অভাব। সেজন্যে জমি-বাড়ি বিক্রি হচ্ছে না, এমন খুবই সাধারণ ভাবে আজকাল দেখা যায়। আপনার ‘রিটায়ারমেন্ট পোর্টফোলিয়ো’-তে জমি-বাড়ির অংশ ঠিক কতটা, তা একবার যাচাই করে নিন। তা যাতে হাতের বাইরে চলে না-যায়, সেটা দেখুন। এখানে "রিট" (REIT) ইত্যাদির প্রসঙ্গ আসছে না। সাবেকি ভাবে মাপজোক নেওয়া সম্ভব এমন স্কোয়ার ফুট বা কাঠার কথাই বলা হচ্ছে।

‘লিকুইডিটি’ যেমন একটি প্রাথমিক দায়িত্ব, তেমনই প্রয়োজন পোর্টফোলিয়োর অন্তর্গত অ্যাসেটগুলির সংখ্যা সীমিত রাখা। অর্থাৎ, খুব বেশিমাত্রায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা উচিত হবে না। ‘ওভার ডাইভারসিফিকেশন’" পরবর্তীকালে অভিশাপ রূপে দেখা দিতে পারে। রিটার্ন এর উপর চাপ আসতে পারে। দরকার হলে নিজের ‘রিস্ক’ নিজে বুঝে

সবক’টি অ্যাসেট ক্লাসেই বিনিয়োগ করুন। কিন্তু প্রতিটি বিনিয়োগ যেন স্বতন্ত্র হয়। কোন রকম ওভারল্যাপ যেন না হয়। মিউচুয়াল ফান্ড বা ইনস্যুরেন্সের ক্ষেত্রে এমন আমরা প্রায়শই দেখি। একই লগ্নিকারী একাধিক সমগোত্রীয় ফান্ড কিনেছেন (যার কয়েকটি আলাদা ভাবে না কিনলেও চলত) এমন আকছার হয়। সেই ভাবেই তিন চার ধরনের ‘এন্ডাওমেন্ট প্ল্যান’ নিয়েছেন, জীবনবিমা কোম্পানিগুলো শুধু আলাদা, প্রোডাক্ট ডিফারেনসিয়েশন থাকলেও তা অতি সূক্ষ্ম, এমনও দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যবিমার পরিধি না বাড়ানোও অন্যতম গাফিলতি।
কর বাঁচানোর সর্বতো প্রচেষ্টা না করাও একটি খুব সাধারণ ভুল। সরকারি নিয়মে সেকশন ৮০সি-র সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তার পুরো সুযোগ নেন না অথবা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন, এমন মানুষও আছেন। কিন্তু গা-ছাড়া ভাবনার কোন অর্থ এ যুগে আর নেই। তিন বছর লক-ইন সমেত এলএসএস অথবা ট্যাক্স সেভিংস ফান্ড তো আছেই। প্রতিবছর এক বা একাধিক এই শ্রেণির ফান্ড বেছে দেড় লক্ষ টাকার বিনিয়োগ করা কি সত্যিই দুরূহ কাজ? এককালীন না হোক, সারা বছরে প্রত্যেক মাসেই অল্প করে এই বিনিয়োগটা কিন্তু করা যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement