সঞ্চয়ের মূল কথাটাই কিন্তু ঝুঁকির ভিত্তিতে বিনিয়োগকে ছড়িয়ে দেওয়া। প্রতীকী ছবি।
বয়েস অনুযায়ী সঞ্চয়ের কৌশল ঠিক করার মধ্যে কোনও নতুনত্ব নেই। হিসাবটাও সোজা। বয়স কম হলে ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা বেশি। কেন? না, ক্ষতি হলে তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য জীবনে অনেকটা সময় পাওয়া যায়। আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকি কম, এমন সঞ্চয়ের রাস্তা বাছতে হয়। কারণ সেই একই। ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সময় কমে যায় তাই।সঞ্চয়ের গোটা কৌশলটার মূলে কিন্তু একটাই অঙ্ক। আয়ের জন্য সামনে কতটা সময় পড়ে আছে। আর একটা অঙ্কও করা হয়ে থাকে অবশ্যই। আর তা হল বয়সের সঙ্গে আয় বাড়ার ব্যাপারটা। এটা খানিকটা ওই বাঁদরের তৈলাক্ত বাঁশে ওঠার মতোই। এক দিকে যেমন আয়ের জন্য সময় কমছে, তেমনই অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়ও বাড়ছে। ভাল সঞ্চয় কৌশল সেটাই, যা আয়ের এই দুই দিক সামলে আমাদের ভবিষ্যতকে সুনিশ্চিত করে তুলতে পারে।
আর এই অঙ্ক ধরেই আজকাল উপদেষ্টারা বলছেন বয়স কম হলে জোরদার সঞ্চয়ের পথে এগোতে। যেমন, সাধারণ ভাবে অনেকেই হাইব্রিড বা মিশ্র বিনিয়োগের মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা রাখতে বলেন। কারণ এই ফান্ডগুলি ঋণপ্ত্র এবং শেয়ারে বিনিয়োগ করে। যাঁরা ঝুঁকি এড়াতে পছন্দ করেন, তাঁরা এই ধরনের ফান্ডে টাকা রাখেন। যার ৬৫ থেকে ৮০ শতাংশই ঋণপত্রের মতো কম ঝুঁকির বিনিয়োগের রাস্তা খুঁজে নেয়। এতে করের সুবিধাও পাওয়া যায়।
কিন্তু এমন ফান্ডও আছে, যাতে শেয়ারে টাকা বেশি লগ্নি করা হয়। একে অ্যাগ্রেসিভ হাইব্রিড ফান্ড যাকে বাংলায় আমরা আগ্রাসী মিশ্র ফান্ড বলতেই পারি। এই ধরনের ফান্ডে বিনিয়োগের কৌশল হল অন্তত ৬৫ শতাংশ টাকা শেয়ারে এবং বাকিটা ঋণপত্রে দেওয়া। আর যেহেতু শেয়ারে এতটা অংশ রাখা হয়, তাই এতে করের অঙ্ক কষা হয় শেয়ারে বিনিয়োগের উপর করের নিয়মেই।
কেন বয়স কম হলে আগ্রাসী ফান্ডে বিনিয়োগের কথা বলছেন উপদেষ্টারা? সঞ্চয়ের মূল কথাটাই কিন্তু ঝুঁকির ভিত্তিতে বিনিয়োগকে ছড়িয়ে দেওয়া। যাতে ঝুঁকি সামলিয়ে সঞ্চয়ের লাভ ঘরে আনা যায়। বয়স কম হলে ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা যে বেশি, তার কারণ আমরা প্রথমেই আলোচনা করেছি। প্রশ্ন উঠতেই পারে বয়স কম হলে কেন পুরোটাই শেয়ারে লাগাব না? এর উত্তর হল ঝুঁকিকে ছড়িয়ে দেওয়া। মাথায় রাখতে হবে শেয়ার আর ঋণপত্রের বাজার চলে বিপরীত দিকে। শেয়ার বাজার উঠলে ঋণপত্রের বাজার পড়ে আর শেয়ার বাজার পড়লে হয় উল্টোটা। তাই শেয়ার বাজারের পতনের ক্ষতি সামলাতে ঋণপত্রে বিনিয়োগ করা। এটা মাথায় রাখলেই ব্যস! আর সমস্যা নেই। নেমে পড়ুন আগ্রাসী ফান্ডে বিনিয়োগ করতে। তবে তার আগে এক বার উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া বোধহয় ভাল।