বিনিয়োগের ধরন বদলে, বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সঞ্চয় চলুক। প্রতীকী ছবি।
আমার এক বন্ধুর পরিচয় সূত্র ধরে এসেছিলেন যিনি, তাঁর বয়স ৫০-৫২র বেশি নয়। পোর্টফোলিওর মূল অংশটি হাতে লিখে এনেছিলেন। এ-ফোর মাপের কাগজের অর্ধেক। প্রধানত ফিক্সড-ইনকাম সিকিউরিটিজ, কয়েকটি ডেট-ঘেঁষা হাইব্রিড ফান্ড। নিজেই বললেন, বহু দিন আগেই বুঝেছেন এতে কুলোবে না। চাকরি থেকে অবসর আর কয়েক বছর বাদেই। দেরি করে শুরু করেছেন, তা-ও তিনি বেশ জানেন।
আসলে এটাই যত নষ্টের গোড়া! দেরিতে শুরু এবং পরিকল্পনা মাফিক সঞ্চয়ের অভাবে অবসরকালে পকেটে টান পড়ার আশঙ্কা। কাজেই লগ্নির বিষয়ে দু'ভাবে নিজেকে কৌশলী করে তুলুন। নিজের আর্থিক পরিকল্পনা এমন ভাবেই করে রাখুন, যাতে:
এক, যথাসম্ভব আগে থেকেই যেন বিনিয়োগ শুরু হয়
দুই, পদ্ধতি বদলালেও লগ্নিতে যেন ছেদ না পড়ে
অনেকের অবস্থাই পরিচিত সূত্রে আসা ওই লগ্নিকারীর মত। বলে বিনিয়োগের প্রক্রিয়া চালু হোক নিজস্ব রোজগার শুরু হওয়ার সময় থেকেই। উপার্জনের অঙ্ক বাড়লে, কেরিয়ার এগোলে, বিনিয়োগের পরিমাণও বাড়ুক। তাতে মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্রও শক্তপোক্ত হবে।
না থেমে, না ভেঙে চালিয়ে যাওয়া অবশ্য কঠিন কাজ। কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। বিনিয়োগের ধরন বদলে, বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সঞ্চয় চলুক। হয়তো তখনই সুফল পাবেন না। সুবিধাটুকু বুঝবেন পরে।
মূল্যবৃদ্ধির জেরে জমানো টাকার দাম যে কী নিদারুন ভাবে কমছে, তা বুঝে উঠতে পারেন না অনেকেই। এই মুহুর্তে মূল্যবৃদ্ধির হার কম- সর্বশেষ পরিসংখ্যান তাই বলছে। কিন্তু খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়া যে এখনও গৃহস্থের সংসারে আঘাত হানছে, তা খুব পরিষ্কার।
এই অবস্থায় ডেট-নির্ভর হাইব্রিড ফান্ড আপনাকে কোনও বিশেষ সুবিধা দেওয়া দূরে থাক, বরং পোর্টফোলিওকে পিছিয়েই দেবে। লগ্নিতে রিটার্ন কম হবে, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে পারবেন না।
কারণ:
¤ হাইব্রিড ফান্ডে ঋণপত্র বেশি, পারফরমেন্সের গণ্ডি ছোট
¤ সুদের হার জনিত ঝুঁকি খুব বেশি
¤ ক্রেডিট রিস্কও কম নেই
রেপো রেটে নিত্য পরিবর্তনের যুগে বাজারে সুদের হার বদলে যাচ্ছে অতি দ্রুত। তার জেরে ঋণের বাজার ইদানিং বেশ অস্থির।
তাহলে বিনিয়োগকারী কী করবেন?
¤ যদি সময় থাকে, লগ্নির ধরন বদলে ইকুইটি-মূখী হতে হবে।
¤ ডেট থেকে ইকুইটিতে লগ্নি বদল করুন নিয়ম ও যথাযথ পদ্ধতি মেনে।
¤ লগ্নির ধরন বদলাতে হলে কর দিতে হতে পারে। সে বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে।
সব মিলিয়ে প্রক্রিয়াটি সোজা নয়। তবে এখনও সময় হাতে সময় থাকে, তা হলে শুরু করতে দেরি যেন না হয়।
প্রতিবেদক সঞ্চয় উপদেষ্টা। বক্তব্য নিজস্ব
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।