প্রতীকী ছবি
আজকের সঞ্চয় আপনাকে দেবে কালকের সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ জমাও রাখতে হবে সঠিক জায়গায়। না হলেই তো সব শেষ। এখন যা দিনকাল পড়েছে, তাতে চার দিকে শুধু বেইমানি আর জালিয়াতি। আবার ব্যাঙ্কে টাকা রাখলে কেবল ‘নাম কে ওয়াস্তে’ সুদ। মুদ্রাস্ফীতির যুগে সুদের হার এসে ঠেকেছে তলানিতে। তা হলে মধ্যবিত্তেরা করবেই বা কী!
যদি বেসরকারি চাকরি করেও অবসরের পরে সরকারি চাকরির মতো মাসে মাসে পেনশন পাওয়া যেত, তা হলে বেশ হতো। তা কিন্তু বাস্তবে হতেই পারে। তবে তার জন্য আপনাকে বিনিয়োগ করতে হবে জাতীয় পেনশন প্রকল্পে। কিন্তু কী এই জাতীয় পেনশন প্রকল্প? বিশদ রইল এই প্রতিবেদনে।
জাতীয় পেনশন প্রকল্প বা ন্যাশনাল পেনশন স্কিম(এনপিএস) কী?
জাতীয় পেনশন প্রকল্প হল ভারত সরকাররে অধীনস্থ পেনশন তহবিল নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি স্বেচ্ছায় অবদান প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় কোনও ব্যাক্তি চাকরি করার সময়ে অ্যাকাউন্ট খুলে অবসর সময়ের জন্য পেনশন মূলধন বা কর্পাস জমাতে পারেন। সরকারি, বেসরকারি কর্মী বা অন্য যে কোনও ব্যাক্তি চাইলেই এই প্রকল্পের আওতায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। তবে সরকারি কর্মচারীদের এই প্রকল্পের আওতায় অ্যাকাউন্ট খোলা বাধ্যতামূলক। এখানে নির্দিষ্ট সময় অন্তর আপনি টাকা রাখতে পারেন। যা পরে আপনি পেনশন হিসাবে পাবেন।
১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী যে কোনও ভারতীয় নাগরিক এই প্রকল্পের অধীনে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। আপনি যদি ভারতের বাইরে থাকেন, অথচ ভারতের নাগরিক হন, তা হলেও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস-সহ মোট ৫৮টি সংস্থাকে এই এনপিএস প্রকল্প খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আপনি আপনার সুবিধা মতো যে কোনও সংস্থার কাছে এই প্রকল্পের অধীনে কেবল একটিমাত্র অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। অর্থাৎ এক জন ব্যাক্তির জন্য একটি এনপিএস অ্যাকাউন্ট বরাদ্দ।
কী ভাবে বিনিয়োগ করবেন এনপিএস অ্যাকাউন্টে?
এনপিএস প্রকল্পের অধীনে আপনি মূলত দুই ভাবে বিনিয়োগ করতে পারেন।
প্রথম হল এনপিএস প্রথম স্তর। এটি হল অবসরের পরে তহবিল গঠনের লক্ষ্যে খোলা স্থায়ী অ্যাকাউন্ট। অবসরের আগে অর্থাৎ ৬০ বছরের আগে কয়েকটি জরুরি অবস্থা, যেমন গুরুতর শারীরিক অসুস্থতা বা সন্তানের বিয়ে ইত্যাদি ছাড়া কোনও ভাবেই এই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা যাবে না। এই অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ১০০০ টাকা জমা দেওয়া প্রয়োজন।
দ্বিতীয়টি হল এনপিএস দ্বিতীয় স্তর। এই অ্যাকাউন্টটি সেভিংস অ্যাকাউন্টের মতোই। যে কোনও আর্থিক সঙ্কটাবস্থায় লগ্নিকারীরা প্রয়োজন মতো টাকা তুলতে পারেন। ন্যূনতম ২৫০ টাকা জমা দিয়ে এই অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।
অন্যান্য সুযোগ সুবিধা
এনপিএস প্রকল্প ভারত সরকারের পেনশন তহবিল নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় এটি অন্যান্য বেসরকারি প্রকল্পের থেকে বেশি সুরক্ষিত। এনপিএস-এর বিনিয়োগকারীরা গড়ে ১০ শতাংশ সুদের হার আশা করতে পারেন। যা অনান্য সরকারি প্রকল্পের তুলনায় বেশি।
আয়কর আইন ১৯৬১-এর ধারা ৮০সিসিডি(১) অনুযায়ী এনপিএস-এ বিনিয়োগ করা টাকার উপরে কর ছাড়ের দাবি করা যায়। এবং ৮০সিসিই অনুযায়ী ছাড়ের সর্বোচ্চ সীমা দেড় লক্ষ টাকা।
ধারা ৮০সিসিডি(১বি) অনুযায়ী এনপিএস-এর প্রথম স্তরের অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করলে অতিরিক্ত ৫০,০০০ টাকা আয়কর ছাড় পাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।